রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫৬ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট :: প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে জীবিকার তাগিদে রাজধানী ফিরছে নগরবাসী। তবে গেল কয়েক দিনের চেয়ে শনিবার সড়ক ও রেলপথে যাত্রীর চাপ ছিল অনেক বেশি।
আগামীকাল রবিবার অফিস খোলা থাকায়, বেশিরভাগ কর্মজীবীরা ফিরছেন এখন। দক্ষিণ-পশ্চিম রুটের ক্ষেত্রে সড়কে ভোগান্তি না থাকলেও ফেরির জন্য অপেক্ষা ও পারাপার মিলিয়ে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা লেগে যাচ্ছে। ফলে ঢাকায় প্রবেশে দেরি হচ্ছে। এ কারণে নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে উপস্থিত হতে পারেননি অনেকে। উত্তরবঙ্গ রুটে বঙ্গবন্ধু সেতুর আগে পরে কিছুটা বাড়তি ভাড়া নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। এদিকে রেলপথে রাজধানীতে আসা মানুষের উপচেপড়া ভিড় ছিলো। অতিরিক্ত যাত্রী থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের। ট্রেনের টিকিট কাটতেও বেশ সমস্যা পোহাতে হয়েছে ।
করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় নিশ্চিন্তে পরিবার নিয়ে গ্রামে ঈদ কাটিয়ে হাসিমুখে মানুষ কর্মস্থলে ফিরছেন। ফাঁকা ঢাকা ফের সরগরম হতে শুরু করেছে। ঢাকামুখী মানুষের ভিড়ে আস্তে আস্তে চিরচেনা রাজধানী তার পুরনো চেহারায় ফিরছে।
এদিকে ফের কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল। ভোর থেকে লঞ্চের হর্ন ও যাত্রীদের পদচারণে সদরঘাট আগের রুপে ফিরেছে। অনেকেই ঘাটে নেমে সরাসরি রওনা করেছেন কর্মস্থলে যোগ দিতে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ততাও বাড়তে থাকে আশপাশের এলাকার। সকাল ৮টা পর্যন্ত ৭৩টি লঞ্চে এক লাখেরও বেশি যাত্রী ঢাকায় প্রবেশ করেছে। ফলে লঞ্চ ও যাত্রীদের চাপে টার্মিনালে জনজট ও লঞ্চজট দেখা গেছে। কালবৈশাখী নিয়ে আতঙ্ক থাকলেও তেমন পরিবেশ সৃষ্টি না হওয়ায় নিরাপদে ফিরতে পেরে আনন্দিত যাত্রীরা।
আজ শনিবার (৭ মে) রাজধানীর সদর ঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, ঈদের টানা ছুটি শেষে রাজধানীমুখী যাত্রীদের পদচারনায় সদরঘাট যেন তার স্বরূপে ফিরে এসেছে। ভোর থেকেই হকারদের হাক ডাক, লঞ্চের হর্ন, রিকশা, সিএনজি চালকদের হাক ডাকে কর্মচঞ্চলতা ফিরে পেয়েছে। এদিন ভোর থেকেই বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, চরফ্যাশন, হুলারহাট, ভান্ডারিয়া, লালমোহনসহ দেশের বিভিন্ন রুটের যাত্রী বোঝাই লঞ্চ টার্মিনালে ভিড়তে থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টার্মিনালে লঞ্চ ও যাত্রী বাড়তে থাকে।
এ সময় টার্মিনালে লঞ্জজটের সৃষ্টির ফলে অনেক লঞ্চকে টার্মিনালে ভিড়তে ঘণ্টারও বেশি অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। কোন কোন লঞ্চ টার্মিনালে ভিড়তে না পড়ে অন্য লঞ্চের মাধ্যমে যাত্রীদের নামাতে দেখা গেছে। একই সময়ে অনেক লঞ্চ চলে আসায় টার্মিনালের অতিরিক্ত চাপ কমাতে বিআইডব্লিউটিএ এর কর্মকর্তাদের বার বার মাইকিং করে দ্রুত যাত্রী নামিয়ে টার্মিনাল ছাড়ার নির্দেশ দিতে শোনা গেছে। যাতে ঘাটে আসা অন্য লঞ্চগুলোও যাত্রীদের নিরাপদে নামাতে পারে।
এ বিষয়ে সদরঘাট নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মকর্তারা জানান, আজ বলা যায় ঈদের ফিরতি যাত্রা শুরু হয়েছে। শনিবার ভোর ৪টা থেকে সকাল ৮ টা পর্যন্ত টার্মিনালে ভিড়েছে ৭৩ টির মতো লঞ্চ। গতকাল যে লঞ্চগুলো ২০০ যাত্রী নিয়ে আসতে দেখা গেছে। আজ সেখানে এক থেকে দেড় হাজার যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরছে। এতে এক লাখের ওপরে নরগরবাসী পরিবারের সঙ্গে ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরেছে। আর যাত্রী নিয়ে ঘাট থেকে ছেড়ে যেতে দেখা গেছে ৩২ টি লঞ্চ। তবে ভোরে আসা বিভিন্ন রুটেরলঞ্চগুলো যাত্রী ছাড়াই চলে যেতে দেখা গেছে ঈদ ফেরত নগরবাসীদের আনতে। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় সব লঞ্চ সময় মতো ছেড়েছে।
তারা আরও জানান, এবারের ঈদের যাত্রা স্বস্তির হয়েছে। নৌপথে কোথাও কোন দুর্ঘটনা খবর পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের খবরও আমরা পাইনি। ভাড়ার ক্ষেত্রে যেটা হয়। লঞ্চ মালিকরা প্রতিযোগিতা করে যাত্রী টানতে বছরের অন্যান্য সময় সরকারের নির্ধারিত ভাড়া থেকে কম ভাড়া নিয়ে থাকে ঈদের সময় সরকারের নির্ধারিত ভাড়া রাখে। তখন যাত্রীরা বলে ভাড়া বেশি নিচ্ছে। এ ছাড়া অজ্ঞান পার্টি, ছিনতাইকারী, পকেটমারদের খপ্পরে পড়েছে এমন কোনো খবরই পাইনি।