সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:০৯ পূর্বাহ্ন
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি :: সড়কের পাশের সবুজ চা–বাগানগুলো রয়েছে ফাঁকা। রঙিন পোশাক পরে মন খুলে সেখানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন না পর্যটকেরা। শুধু চা–বাগানই নয়, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের সব পর্যটন স্থানেই এক দৃশ্য।
সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার প্রভাবে প্রায় পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে শ্রীমঙ্গল। এখানকার হোটেল–রিসোর্টের বেশির ভাগই ফাঁকা পড়ে রয়েছে। বিশাল প্রস্তুতি নিয়ে রাখা পর্যটন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কাঙ্ক্ষিত পর্যটক না আসায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন পর্যটন স্থানে গিয়ে বেশি পর্যটকের দেখা মেলেনি। কয়েকজন পর্যটককে বিকেল চারটার পরে দেখা গেছে। চা–বাগান, বধ্যভূমি ৭১, চা কন্যা ভাস্কর্য, বিটিআরআই, সাত রঙের চায়ের দোকান, মনিপুরী পাড়াতে সাধারণ ছুটির দিনে যে মানুষ হয়, তার চেয়েও অনেক কম মানুষ দেখা গেছে।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা প্রকাশ পাল বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে ঘুরতে এসেছি শ্রীমঙ্গলে। চা–বাগানে ঘুরলাম, লাউয়াছড়ায় গেলাম। লোকজন কম, খুবই শান্তিতে ঘুরতে পেরেছি। পরিবার নিয়ে শ্রীমঙ্গল এসে ভালো লাগল। অনেকের মুখে বন্যার কথা শুনেছিলাম। এখানে বন্যা নেই।’
ঢাকা থেকে আসা ইয়াসমিন বেগম শনিবার রাতে একটি রিসোর্টে উঠেছেন। দিনে প্রচণ্ড গরম থাকায় ঈদের দিন সকালে বের হতে পারেননি। বিকেলে ঘুরতে বের হয়েছিলেন।
ইয়াসমিন বলছিলেন, ‘বেশ সুন্দর জায়গা এখানে। তা ছাড়া পর্যটক তেমন নেই। তাই ইচ্ছেমতো ঘুরতে পেরেছি।’
পর্যটক কম থাকায় এ ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অনেকেই সংকটে পড়েছেন। পর্যটকদের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যান গাইডরা। কিন্তু পর্যটক একেবারেই কম, তাই তাঁদের মন ভালো নেই।
ট্যুর গাইড শ্যামল দেববর্মা বলছিলেন, ‘এই সময়ে অনেক ট্যুর গাইডের প্রয়োজন পড়ে। আমরা পর্যটকদের নিয়ে ঘুরে বেড়াই। এবার পর্যটকেরা নেই, আমরা সারা দিনেও পর্যটক পাইনি। খুবই কঠিন পরিস্থিতি আমাদের জন্য।’
পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এবার পর্যটক যে এত কম হবে, তা তাঁরা ভাবেননি। তাই তাঁদের কিছু প্রস্তুতি থাকলেও তা বিফলে গেল।
পর্যটক সেবা সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক ও গ্রিনলিফ গেস্টহাউসের মালিক এস কে দাশ সুমন বলেন, ‘ঈদ কিংবা বড় কোনো ছুটিতে পর্যটন–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অনেক বিশাল প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। এ সময় দেশ–বিদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক আসবেন এবং এটিই হয়। প্রচুর পর্যটকের পদচারণে শ্রীমঙ্গল মুখর হয়ে ওঠে। তবে এ বছর চিত্রটা পুরোটাই ভিন্ন হয়ে উঠেছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার প্রভাবে এখানে পর্যটকের সংখ্যা নেই বললেই চলে।’