1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

হক্কলর ঈদের আনন্দ কাড়িয়া নিছেগি বন্যায়

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১১ জুলাই, ২০২২
  • ১৬৪ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্টার :: হাকালুকি হাওর পাড়ের মুর্শিবাদকুরা গ্রামের বাসিন্দা নেহারুন বেগম। বন্যায় তার ঘর-দুয়ার সব ভেঙে গেছে। এই অবস্থায় পরিবার নিয়ে হাকালুকি উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছেন। প্রায় এক মাস হতে চলেছে। বন্যার পানি না নামায় তার আর বাড়ি ফেরা হয়নি। তাই তাকে এবার আশ্রয় কেন্দ্রে ঈদ করতে হচ্ছে।
৯ জুলাই শনিবার বিকেলে হাকালুকি উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে কথা হয় নেহারুন বেগমের সঙ্গে। ঈদে কিছু কিনেছেন কি-না জানতে চাইলে নেহারুন বেগম বলেন,‘আমরা হক্কলর ঈদের আনন্দ বন্যায় কাড়িয়া নিছেগি। বন্যায় আমরারে একেবারে শেষ করি দিছে। ঘর-দুয়ার সবতা ভাঙি গেছে। পরিবার নিয়া আশ্রয় কেন্দ্রে আইজ প্রায় ১ মাস ধরি আছি। খুব কষ্টে দিন যার। আশ্রয় কেন্দ্রে আইছলাম শান্তির লাগি। ইকানো আইয়া মনে অর আমরা অপরাধ করছি। একদিন ইউএনও সাহেব হুখনা (শুকনো) খাবার ও একদিন মন্ত্রী চাউল-ডাইল অতা তোড়া দিছইন। আর দুই তিন-দিন খিচুড়ি আর পোলাও পাইছি। ইতায় তো পেট ভরে না। ছেলের রুজি নাই। মানইষের কাছে হাত পাতিয়ার। বাইরা থাকি কেউ ত্রাণ লইয়া আইলে মেম্বার-চেয়ারম্যানে আশ্রয় কেন্দ্রে দিতে দেই না। আমরা কি কষ্টে আছি এটা আল্লাহ দেখরা। একবার খাইতে পারলে আরেকবার খাইতে পারিয়ার না। এই কষ্টটা কইয়া বুঝানি যাইতো নায়। ঈদের একটা সময় কেউ আমরার খোঁজ নিছে না। নাতি-নাতিন লইয়া কষ্ট করি চলা লাগব। কষ্টের মাঝে বাড়ির বাইরা কিওর (কিসের) ঈদ। ঘরে ঠিকমতো চাউল-খরচপাতিউ কিছুই নাই।’
নেহারুন বেগমের মতো বড়লেখা উপজেলার বন্যা কবলিত অধিকাংশ এলাকার মানুষদের যেন ঈদের আনন্দ স্পর্শ করতে পারেনি। বিশেষ করে বড়লেখা উপজেলার ৪১টি আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষের মনে ঈদ উৎসবের কোনো আমেজ নেই। কারণ তাদের সব আনন্দ ভেসে গেছে বানের জলে।
একই আশ্রয় কেন্দ্রে পরিবার নিয়ে উঠেছেন তাজুল ইসলাম। তিনি হাঁস-মুরগি বিক্রি করে সংসার চালাতেন। বন্যায় হাট-বাজার তলিয়ে যাওয়ায় তিনি এখন বেকার। ঈদের দিন কীভাবে কাটাবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘২৪ দিন ধরে আছি আশ্রয় কেন্দ্রে। কাম-কাজ নাই। আশ্রয় কেন্দ্রে আইয়া সরকারি হুখনা (শুকনো) খাবার ও একদিন মন্ত্রী চাউল-ডাউল অতা দুইদিন পাইছি। আর কেউ আমরার খোঁজ নেয়নি। যদি সরকারিভাবে আমরার কেউও খোঁজ নিছে না। প্রমাণ দিতে পারলে আমরারে যে শাস্তি দিবা আমরা মানিয়া নিমু। আমরা অসহায় হওয়ায়ই আশ্রয়কেন্দ্রে আইছি। কোনো খরচ নাই ঘরে। হাতে টাকাও নাই। পুরান কাপড়, নিজের ঘর ছাড়া স্কুলে আছি। ঈদ কিলা কাটব ইতা আপনারাই বুঝইন।’
কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র ঘুরে কথা হয় আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা মানুষদের সঙ্গে। তারা জানিয়েছেন, এবারের ঈদুল আযহায় তাদের কোনো আয়োজন নেই। অন্য বছরগুলোতে সাধ্যমতো তারা কেনাকাটা করেন। ঈদে সবাই মিলে আনন্দ করতেন। কিন্তু এবার তাদের মনে কোনো আনন্দ নেই।
বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী বলেন, ‘৫০টি আশ্রয়কেন্দ্রের মধ্যে ৪০টির মতো আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ আছেন। অন্যগুলোয় যারা ছিলেন, তাদের অনেকের বাড়ি থেকে পানি নেমে গেছে। তাই তারা বাড়িতে চলে গেছেন। জেলা প্রশাসন থেকে একটা গরু দেওয়া হয়েছে।

ঈদের দিন রান্না করে আশ্রয়কেন্দ্রের বন্যার্ত মানুষকে খাওয়ানো হবে। বন্যার পানিতে যারা আটকে থেকে কোরবানি করতে পারতেছে না; যতটুকু পারা যায় তাদেরও দেওয়া হবে। তাছাড়া ৪০০ প্যাকেট খাদ্যদ্রব্য ঈদ উপহার হিসেবে আশ্রয়কেন্দ্রে বিতরণ করা হচ্ছে। শনিবার কিছু বিতরণ করা হয়েছে। ঈদেরদিন বাকিগুলো বিতরণ করা হয়।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..