রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৯:৪১ পূর্বাহ্ন
বিশ্বজিৎ কর : দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় রেল লাইন অবরোধ করেছে চা শ্রমিকরা। এতে বন্ধ হয়ে পরেছে সিলেটের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় কুলাউড়ার স্কুল চৌমহনী রেলর লাইন অবরোধ করেন চা শ্রমিকরা। সে সময় পাহাড়িটা ট্রেন সিলেট দিকে আসছিলো। অবরোধের কারণে আটকা পরে পাহাড়িকা। এ রিপোর্ট লেকা পর্যন্ত রেললাইন অবরোধ করে দাবির পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিলেন শ্রমিকরা।
অবরোধে অংশ নেওয়া চা শ্রমিক স্বপন নাইডু বলেন, এতোদিন ধরে আমরা ধর্মঘট করছি কিন্তু আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হচ্ছে না। তাই আজ আমরা রেলপথ অবরোধ করেছি।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুছ ছালেহ বলেন, যেকোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
রেলপথ অবরোধের কারণে ট্রেন কুলাউড়ায় আটকা পরেছে বলে জানান সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক নুরুল ইসলাম।
আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আজ মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) সকাল থেকে বিভাগের সিলেট ও হবিগঞ্জে চা বাগানের সকল শ্রমিক কর্মবিরতি পালন করেন। তবে মৌলভীবাজারে প্রশাসনের অনুরোধে শ্রমিকদের একটি অংশ কাজে যোগদান করলে ও বাকি অর্ধেক শ্রমিক এখন ও আন্দোলন করে যাচ্ছেন।
জানা যায়, মঙ্গলবার সিলেটের কোনো চা বাগানে কাজে যোগ দেননি শ্রমিকরা। সোমবার যেসব বাগানের শ্রমিকদের একাংশ কাজ শুরু করেছিলেন, মঙ্গলবার তারাও ফের কর্মবিরতি শুরু করেন।
এদিকে, বাংলাদেশ চা–-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অমান্য করে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে মঙ্গলবার সকাল থেকে ধর্মঘট পালন করেন শ্রমিকেরা। দুপুর ১২টা পর্যন্ত শ্রীমঙ্গলের সব কটি চা-বাগানে শ্রমিকেরা বাগানে কাজ করা থেকে বিরত ছিলেন। তবে দুপুরে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপপরিচালক নাহিদ আহসান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আলী রাজীব মাহমুদ কয়েকটি বাগানে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা চা-শ্রমিকদের কাছে পৌঁছে দেন এবং কাজে ফেরার অনুরোধ জানান। তাদের অনুরোধ ও আশ্বাসে ১২টি বাগানের সব শ্রমিক কাজে যোগ দেন। তবে ৫০টিরও বেশি বাগানে অর্ধেক চা শ্রমিক কাজে যোগ দেন, আর বাকিরা কর্মবিরতি পালন অব্যাহত রাখেন।
কাজে যোগ না দেওয়া শ্রমিকদের মধ্যে কয়েকজন বলেন, ‘আমরা এত দিন ধরে আন্দোলন করছি। হঠাৎ কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়া আমরা কাজে যোগ দেব না। এখন যদি ৩০০ টাকা ঘোষণা দেওয়া হয়, আমরা এখন কাজে যাব। আমাদের শ্রমিকেরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।’
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, ‘আমরা রোববার রাতে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলে একটা সুন্দর সমাধান করেছিলাম। শ্রমিকেরা প্রধানমন্ত্রীর কথা শুনতে চাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী কয়েক দিনের ভেতরে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে ন্যায্য মজুরি নির্ধারণ করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শ্রমিকেরা চা-বাগানকে ভালোবেসে কাজে ফিরুক। তাঁদের সব দাবি বিবেচনা করে মানা হবে। মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলার অনেক চা-বাগানে কাজ শুরু হয়েছে। শ্রীমঙ্গলেও চা-শ্রমিকেরা কাজ করতে চাচ্ছেন, কিন্তু কিছু দুষ্কৃতকারী তাঁদের যেতে বাধা দিচ্ছে। শ্রমিকদের উসকাচ্ছে। আমরা সাধারণ শ্রমিকদের কাজে যেতে অনুরোধ করছি, তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের।’