1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে শিল্পীদের প্রতিবাদের ভাষা শিল্পকর্ম: প্রধানমন্ত্রী

  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ১৩০ বার পঠিত

 

অনলাইন ডেস্ক:: তুলির আঁচড়ে যুদ্ধের ভয়াবহতা তুলে ধরতে শিল্পীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে শিল্পীদের প্রতিবাদের ভাষা শিল্পকর্ম। সৃজনশীলতার বার্তা যুদ্ধের বিপক্ষে শান্তির পক্ষে।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) ১৯তম এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। প্রদর্শনীতে ১১৪টি দেশের ৪৯৩ জন শিল্পী অংশ নিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, শিল্প-সংস্কৃতি যেকোনো দেশের আত্মপরিচয় বহন করে। শিল্পীর তুলির আঁচড়ে একটি দেশের ইতিহাস-ঐহিত্য ফুটে ওঠে।

যুদ্ধ বন্ধে শিল্পীদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘আমরা সব সময় শান্তির পক্ষে। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, একদিকে করোনা মহামারি এবং আরেক দিকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ; যেটা আসলে মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে। এ জাতীয় যুদ্ধ যেনে না হয় সেজন্য শিল্পীদের ভূমিকা রাখতে হবে।’

প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে শিল্পীরা ভূমিকার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিল্পীর তুলির আঁচড়ে একটি দেশ ও জাতির রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক পরিবেশ উঠে আসে। মানুষের চেতনাকে ঋদ্ধ করে। আমাদের মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের সংগ্রামও প্রাণ পেয়েছিল শিল্পীর আঁচড়ে। বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের শিল্পীরা বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন।

১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে ১১৪টি দেশের ৪৯৩ শিল্পী অংশ নিচ্ছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার খুব দুঃখ হচ্ছে, আমি নিজে এখানে উপস্থিত থাকতে পারলাম না। এতজন শিল্পীকে একসঙ্গে দেখব, যদিও এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে দেখছি। কিন্তু এটাতে তো মন ভরে না। যাই হোক, কাজের চাপে সম্ভব হয়নি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে যারা এসেছেন তাদের, বিশেষ করে শিল্পীদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।’

পারস্পরিক বিনিময়ের মধ্য দিয়ে সংস্কৃতি চর্চা আরও বিকশিত হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে আপনারা এখানে আসার ফলে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ধরনের যে সংস্কৃতি বা চিত্রকর্ম অথবা মানবিক বিকাশের যে সুযোগ, আমাদের দেশের মানুষও এখান থেকে অনেক জ্ঞান জানতে পারবে।

‘একে অপরকে জানতে পারবে। একে অপরের শিল্পী মনকে জানতে পারবে। তুলির আঁচড়ে তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি বিকশিত হয় সেটা সম্পর্কে জানতে পারবেন। যেটা আমি মনে করি আমাদের শিল্পীদের জ্ঞানকে আরও সমৃদ্ধ করবে। নতুন নতুন চিন্তা চেতনার ধারা নিয়ে আসবে।’

শিল্প-সংস্কৃতি একটি জাতির আত্মপরিচয় বহন করে বলে মনে করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। তিনি বলেন, ‘শিল্পীর তুলির আঁচড়ে ওঠে আসে একটি দেশ ও জাতির রাজনৈতিক অবস্থান, তাদের সাংস্কৃতিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক পরিবেশ। মানুষের চেতনাকে ঋদ্ধ করে।’

মায়ের ভাষা বাংলা রক্ষার রক্তক্ষয়ী সংগ্রামও শিল্পীর তুলি আঁচড়ে প্রাণ পেয়েছিল বলে জানান সরকারপ্রধান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিল্পীরা বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন বাংলাদেশের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে আমাদের স্বাধীকার আন্দোলন, সে আন্দোলনে আমাদের শিল্পীরা সব সময় বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। শিল্পীদের তুলির আঁচড়ে ওঠে এসেছে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, জীবনযাত্রা, প্রাকৃতিক পরিবেশ, ঋতু বৈচিত্র্য-সবই ফুটেছে আমাদের শিল্পীদের তুলির আঁচড়ে অথবা ভাস্কর্যের মধ্য দিয়ে।

‘যে কোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে যখন আমাদের দেশের মানুষ সংগ্রাম করেছে, সেই প্রতিবাদের ভাষা আরও সমৃদ্ধি লাভ করেছে এবং মানুষের প্রতিবাদের ভাষা শাণিত হয়েছে শিল্পীর তুলির আঁচড়ে।’

বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে আমাদের বাঁচতে হয়। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় এ দেশের মানুষ। ৭০-এ প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় হয়, যে ঘূর্ণিঝড়ে কেন্দ্রীয় সরকার কোনো সহযোগিতা করেনি, সেই সময় মনপুরা-৩০ ফুট পেইন্টিংটি ১৯৭০ সালের প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ের লাখো মানুষের মৃত্যুকে স্মরণ করিয়ে দেয় প্রকৃতি কিভাবে আমাদের জীবন কেড়ে নিয়েছিল।’

স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ১৯৭৫ সালের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা, হত্যা পরবর্তী সময়ে সামরিক শাসকদের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার আন্দোলনের সময় শিল্পীদের অবদানের কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের শিল্প সংস্কৃতির বিকাশে শিল্পকলা একাডেমির মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করা হয় বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘সেখানে জাতীয় নাট্যশালা, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার, স্টুডিও থিয়েটার, সংগীত, নাট্যকলা মিলনায়তন, চারুকলা মিলনায়তন, নন্দন ও উন্মুক্ত মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। আরও তিনটি মিলনায়তন নির্মাণের কাজও চলছে।’

৬৪ জেলায় শিল্পকলা একাডেমির নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে জানিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘৪৯৩টি উপজেলায় শিল্পকলা একাডেমি স্থাপন করা হয়েছে। অর্থাৎ আমাদের এই সংস্কৃতি সেবাটা তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের কাছে নিয়ে যেতে চাই। একদিকে যেমন তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য আমরা কাজ করছি, পাশাপাশি তাদের শিল্পমনের বিকাশও যাতে হয় সেই পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি। এসব জায়গায় দেশি-বিদেশি চিত্রকর্ম সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’

চারুকলা, চলচ্চিত্র, গান, ঐতিহ্যবাহী লোকসংগীত ও লোকসংস্কৃতি উৎসব আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব কিছু সংস্কৃতি আছে, সেটাও যাতে বিকশিত হয় সেই প্রচেষ্টা আমরা চালাচ্ছি। আমরা প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করছি।’

অনুষ্ঠানে গ্র্যান্ড পুরস্কার দেয়া হয় তিন শিল্পীকে। তারা হলেন সুশান্ত কুমার অধিকারী, ইয়াসমিন জাহান নূপুর ও নেদারল্যান্ডসের হ্যারল্ড স্কলে। এ ছাড়াও সম্মানসূচক পুরস্কার দেয়া হয় আরও ছয় শিল্পীকে।

গ্র্যান্ড পুরস্কার প্রাপ্ত তিন শিল্পীর প্রত্যেককে পাঁচ লাখ করে টাকা, সম্মানসূচক পুরস্কারপ্রাপ্ত ছয় জনের প্রত্যেককে তিন লাখ করে অর্থমূল্য, ক্রেস্ট, স্বর্ণপদক এবং সনদপত্র দেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সবার হাতে পুরস্কার তুলে দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..