রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ১১:০২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার: বড়লেখা উপজেলার অজমীর গ্রামের দুবাই প্রবাসী বিশিষ্ট ব্যবসায়ি রহিম উদ্দিন ও তার ভাতিজা হাল্লা গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল উদ্দিন ঘটনাস্থলে না থাকা স্বত্তে¡ও হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী করায় এলাকায় তোলপাড় চলছে।
প্রত্যক্ষর্শীরা নিশ্চিত করেন মামলায় বাদির উল্লেখিত ঘটনার সময় প্রবাসী রহিম উদ্দিন ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদের পৌরশহরের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে এবং তার ভাতিজা জয়নাল উদ্দিন স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার শাহীন আহমদের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত অবস্থান করেন। সচেতন মহলের প্রশ্ন এই দুই ব্যক্তি কিভাবে প্রতিপক্ষের জামাল উদ্দিনকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালালেন। গ্রামের অধিকাংশ মানুষের দাবী পূর্ব-বিরোধের জেরে প্রবাসী রহিম উদ্দিন ও তার স্বজনদের হয়রানির উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে এই মামলাটি সাজানো হয়েছে।
উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের হাল্লা গ্রামের কামাল উদ্দিনের থানায় দায়েরকৃত মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ ফেব্রæয়ারি সোমবার রাত অনুমান সাড়ে ৭টার দিকে প্রবাসী রহিম উদ্দিনের নেতৃত্বে জয়নাল উদ্দিন, আতাউর রহমান, রহমান মিয়া, শাহীন আহমদ ও আব্দুন নুর হাল্লা গ্রামের জামাল উদ্দিনকে তার বাড়ির সামনের রাস্তায় হত্যার উদ্দেশ্যে দা, লোহার রড, ডেগার ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। এতে জামাল উদ্দিনের রক্তাক্ত জখম হয়। আহত জামাল উদ্দিনের ভাই কামাল উদ্দিন তাকে উদ্ধার করে বড়লেখা উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক জামালের মাথায় ১০ ঘাই সেলাই দিয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। এঘটনায় আহত জামাল উদ্দিনের ভাই কামাল উদ্দিন পরদিন সন্ধ্যায় দুবাই প্রবাসী ব্যবসায়ি রহিম উদ্দিনকে প্রধান আসামী করে ৬ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা চেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন।
সরেজমিনে গেলে এলাকার অনেকেই জানান, এত বড় ঘটনা ঘটলো, প্রতিবেশি হয়েও তারা তা জানলেন না। স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার শাহীন আহমদ জানান, খোটাউরা বাজারে তার ব্যক্তিগত অফিস রয়েছে। জামাল উদ্দিনের উপর হামলার ঘটনায় তার ভাই কামাল উদ্দিন মামলায় দুই নম্বর আসামী করেছেন জয়নাল উদ্দিনকে। মামলায় উল্লেখিত ঘটনার দেড়ঘন্টা আগ থেকে রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত জয়নাল উদ্দিন তার অফিসে অবস্থান করছিল। অনেকেই তাকে আমার অফিসে দেখেছেন। সে কিভাবে জামাল উদ্দিনের উপর হামলা চালালো তার বোধগম্য নয়। তিনি আরো বলেন, এলাকায় কানাঘুষা চলছে, কুবতর জবাই করে জামাল উদ্দিনের মাথায় ও গায়ে রক্ত মাখিয়ে মামলা গাঢ় করা হয়েছে। মামলায় উল্লেখিত পুরো ঘটনাটি রহস্যজনক বলে তিনি দাবী করেন।
দুবাই প্রবাসী ব্যবসায়ি রহিম উদ্দিনকে হত্যা চেষ্টা মামলার আসামী করায় মামলায় উল্লেখিত ঘটনাস্থল ও সময় (রাত সাড়ে ৭টা) দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ। তিনি বলেন ওই দিন সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টায় পর্যন্ত প্রবাসী রহিম উদ্দিন অন্য একটি কাজে তার (উপজেলা চেয়ারম্যান) পৌরশহরের ব্যক্তিগত কার্যালয়ে অবস্থান করেছিলেন। এই সময়ের মধ্যে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে আরেক ব্যক্তিকে তিনি কিভাবে হামলা করতে গেলেন তা মেলাতে পারছেন ন। তিনি এই মামলার সুষ্ঠু তদন্ত দাবী করেন।
ওই মামলার ৪ নং স্বাক্ষী সেলিম উদ্দিন বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, এধরনের কোন ঘটনা ঘটেছে বলে তার জানা নেই। তাকে কিভাবে স্বাক্ষী করা হলো বুঝতে পারছেন না।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জাহেদ আহমদ জানান, তিনি মামলাটি তদন্ত করছেন। তদন্ত কাজ অব্যাহত রয়েছে।