রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ১০:৫২ পূর্বাহ্ন
ফিচার ডেস্ক: আকর্ষণীয় মেদহীন পেট চান সবাই। পেটের চর্বি এবং কোমরের চারপাশের চর্বি দেখতে যেমন খারাপ, তেমনি স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। জাঙ্ক ফুড বা ভাজা খাবার এবং ব্যায়ামের অভাবে পেটের ফ্যাট দ্রুত বাড়ে। সাধারণত মদ্যপান, মিষ্টিজাতীয় খাবার অতিরিক্ত গ্রহণ, ডুবো তেলে ভাজা খাবার, কোমল পানীয়, অস্বাস্থ্যকর বাইরের খাবার, নিয়মিত লাল মাংস (রেড মিট) খাওয়া, স্যাচুরেটেড চর্বি গ্রহণ ইত্যাদি পেটের মেদ বাড়িয়ে তোলার পেছনে ভূমিকা রাখে। এমন পরিস্থিতিতে আপনি যদি পেঁপের বীজ খান, তাহলে তা পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করবে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি রোগ নিরাময়ের আশ্চর্য গুণ রয়েছে পেঁপের বীজে। শত বছর ধরে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে পেঁপের বীজ। পেঁপের বীজ শুধু স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী নয়, নিয়মিত পেঁপের বীজ খেলে ভুঁড়ি কমে। চলুন জেনে নেওয়া যাক পেটের ভুঁড়ি কমানোর জন্য ডায়েটে পেঁপের বীজ কতোটা উপকারী।
ভিটামিন সি আর ভিটামিন ই সমৃদ্ধ পেঁপে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে খুবই কার্যকরী। শুধু পেঁপেই নয়, পেঁপের বীজও খুবই উপকারী আর পুষ্টিগুণে ভরপুর! তাই পেঁপের বীজ ফেলে দেওয়ার আগে একবার দেখে নিন তার অজানা আশ্চর্য সব গুণ।সুস্বাদু ফল পেঁপের উপকারিতা কমবেশি সবারই জানা। কিন্তু পেঁপের বীজের উপকারিতা সম্পর্কে হয়তো অনেকেই জানেন না। পেঁপের বীজে এমন কিছু উপকারী উপাদান রয়েছে, যা স্বাস্থ্যের উন্নতির পাশাপাশি বিভিন্ন রোগও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। পেঁপের মধ্যে থাকা কালো বীজ শুকিয়ে তারপর গুঁড়া করে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। যারা দ্রুত ওজন কমাতে চান তারা খেতে পারেন পেঁপের বীজ।
হেলথলাইনে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী পেঁপের বীজে উপস্থিত ফাইবার পরিপাকতন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী। পেঁপের বীজ মেটাবলিজম বাড়ার পাশাপাশি শরীর থেকে টক্সিন দূর করে। এই বীজ নিয়মিত সেবনে ঝটপট ওজনও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। পেঁপের বীজে রয়েছে পলিফেনলের মতো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এতে পাওয়া আইসোথিওসায়ানেট শরীরে ক্যানসার কোষের গঠন ও বৃদ্ধি উভয়ই প্রতিরোধ করে।
পেঁপেতে থাকা ক্যারোটিন নামক একটি যৌগ শরীরে ইস্ট্রোজেন উৎপাদন নিয়ন্ত্রণে কার্যকর। অন্যদিকে পেঁপের বীজ মাসিকের সমস্যায় অত্যন্ত উপকারী।
পেঁপের বীজে ভিটামিন সি, ফ্ল্যাভোনয়েড, অ্যালকালয়েড এবং পলিফেনলের মতো যৌগগুলি রয়েছে। এত শক্তিশালী যৌগ হওয়ায় এগুলো শরীরের প্রদাহ কমাতে অত্যন্ত উপকারী।পেঁপের বীজে থাকা মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড শুধুমাত্র শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় না, খারাপ কোলেস্টেরলও কমায়। পেঁপের বীজে উপস্থিত ফাইবার শরীরে থাকা খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমাতে পারে।ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা প্রতিরোধ করতে পেঁপের বীজের জুড়ি মেলা ভার। ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না। এছাড়াও ত্বককে উজ্জ্বল এবং মোলায়েম রাখতেও সাহায্য করে পেঁপের বীজ।
প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে পেঁপের বীজ। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এতে থাকা ভিটামিন সি, অলকালয়েডস এনং ফ্ল্যাভোনয়েডস আর্থারাইটিসের সমস্যা কম করতে সাহায্য করে।হৃদপিন্ডের জন্যও দারুণ উপকারী পেঁপের বীজ। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস। যা বিভিন্ন হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। নিয়মিত পেঁপের বীজ খেলে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে থাকে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।ডেঙ্গু প্রতিরোধে পেঁপের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য! ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলেই শরীরে প্লাটিলেটের সংখ্যা কমতে শুরু করে। এই সময় নিয়মিত পেঁপে বীজ এবং পেঁপে পাতা খেতে পারলে প্লাটিলেট কাউন্ট ফের স্বাভাবিক মাত্রায় ফিরে আসে।
যকৃত বা লিভারের সমস্যায় পেঁপের বীজ খেতে পারলে দ্রুত উপকার পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সামান্য পানি আর দইয়ের সঙ্গে পেঁপে বীজ মিশিয়ে নিয়মিত খেতে পারলে যকৃতের স্বাস্থ্য ভাল থাকে।
ঋতুস্রাবের সময় অসহ্য যন্ত্রণার সম্পূর্ণ উপশমের জন্য পেঁপের বীজ অত্যন্ত কার্যকরী! পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব চলাকালীন পেঁপে বীজের সঙ্গে মধু মিশিয়ে খান ১ চামচ করে খেতে পারলে ব্যথা অনেক কম বোধ হবে। পেঁপের বীজে রয়েছে প্রোটিওলাইটিক নামের উৎসেচক যা আমাদের শরীরে বাসা বাধা নানা ক্ষতিকর জীবাণুকে মেরে ফেলে। এছাড়া শরীরে প্রোটিনের বিপাকে সাহায্য করে। পাকা পেঁপে খাওয়ার পর কালো রঙের যে বীজগুলো পাবেন সেগুলো চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে পারেন। কিংবা বীজগুলো গুঁড়া করে পানির সঙ্গে গুলেও খেতে পারেন।