বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ০৫:২১ অপরাহ্ন
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি : বণ্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য দেশের অন্যতম রিজার্ভ ফরেস্টখ্যাত চিরহরিৎ বন লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান।
দেশের ৭টি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ও ১০টি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান অন্যতম। এটি মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনের জীববৈচিত্র্যে ভরপুর লাউয়াছড়া বনটিকে সরকার ১৯৯৬ সালে ‘জাতীয় উদ্যান’ ঘোষণা করে।
১ হাজার ২৫০ হেক্টর আয়তনের এই বনটি জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। বিশ্বে বিলুপ্তপ্রায় উল্লুকের জন্য এই বন বিখ্যাত। উল্লুক ছাড়াও এখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির জীবজন্তু, কীটপতঙ্গ এবং উদ্ভিদ।
নানা জাতের উদ্ভিদ আর জীববৈচিত্র্যের দিক থেকে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান বাংলাদেশের একটি অন্যতম সমৃদ্ধ বন। আয়তনে ছোট হলেও এ বন যেন দুর্লভ উদ্ভিদ এবং প্রাণীর এক জীবন্ত সংগ্রহশালা।
বনে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই নানা ধরনের বন্যপ্রাণী, পাখি এবং কীটপতঙ্গের শব্দ শোনা যায়। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ৪৬০ প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৪ প্রজাতির উভচর, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি এবং ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে।
উল্লুক ছাড়াও এখানে রয়েছে মুখপোড়া হনুমান, বানর, শিয়াল, মেছোবাঘ, বন্য কুকুর, ভালুক, মায়া হরিণসহ (বার্কিং ডিয়ার), নানা প্রজাতির জীবজন্তু। পাহাড়ি মৃত্তিকা গঠিত উঁচু-নিচু টিলাজুড়ে বিস্তৃত এ বনে সরীসৃপ আছে তার ভেতর অজগর হচ্ছে অনন্য। এখানে পাওয়া যায় হলুদ পাহাড়ি কচ্ছপ। লাউয়াছড়া বনেই রয়েছে বিপন্ন প্রজাতির উল্লুক।
১৯২৫ সালে বনায়ন করে সৃষ্ট বনরাজি এখন ঘন প্রাকৃতিক বনের আকার ধারণ করেছে। এর মোট আয়তন ১২৫০ হেক্টর। জীববৈচিত্র্যে ভরপুর লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দেখা মেলে নানা বিরল প্রজাতির পশু পাখি ও বিভিন্ন প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদের।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটক যেমন আসেন, তেমনি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বিদেশি পর্যটকও ঘুরতে আসেন এ উদ্যানে। এতে প্রচুর পরিমান সরকারি রাজস্ব আয় হয়।
এছাড়া লাউয়ছড়াকে জাতীয় উদ্যান ঘোষনার পর থেকে ট্যূর গাইডসহ রক্ষিত বন এলাকার সম্পদ সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য সহ-ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি প্রাণ-প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ব্যবস্থা, সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান থেকে বৃক্ষনিধন ও পাচার রোধে কাজ করে। এছাড়াও আহত বণ্যপ্রাণীর চিকিৎসায় একটি রেসকিউ সেন্টার রয়েছে।