শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ১০:০৮ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ম্প্রতি এক টেলিভিশনে লাইভ প্রচারিত একটি সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ধর্ষণের জন্য নারীর পোশাককে দায়ী করেছেন। তার এই মন্তব্যের পর পাকিস্তানে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এখবর জানিয়েছে।
সাক্ষাৎকারে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা ইমরান খান বলেন, ‘‘কোনো সমাজে অশ্লীলতা বাড়তে থাকলে পরিণামে” ধর্ষণও বাড়ে৷ এক সময় ব্রিটেনে ‘প্লেবয়’-এর জীবন কাটানো সাবেক ক্রিকেটার মনে করেন, ‘‘(পাকিস্তানের) সমাজে ধর্ষণের ঘটনা খুব তাড়াতাড়িই বেড়েছে৷” নিজের দেশকে ওয়ানডে বিশ্বকাপ জেতানোর পর ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে রাজনীতির অঙ্গনে আসা ইমরানের মতে, পুরুষদের সংযত রাখতে নারীদের উচিত খোলামেলা পোশাক না পরা৷ নারীদের শরীর ঢেকে চলার উপদেশ দিয়ে তিনি এ কথাও মনে করিয়ে দেন যে, ‘‘পর্দা ব্যাপারটির মূল কথাই হলো প্রলোভন এড়ানো আর তা এড়ানোর মতো ইচ্ছাশক্তি সবার থাকে না৷”
ইমরান খানের এই মন্তব্যকে ‘তথ্যগতভাবে ভুল, অসংবেদনশীল ও বিপজ্জনক’ আখ্যায়িত করে এখন পাকিস্তানে চলছে অনলাইনে স্বাক্ষর সংগ্রহের অভিযান। স্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযানের আয়োজকেরা মনে করেন, একজন প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্য ধর্ষক এবং ধর্ষকবান্ধব ব্যবস্থাকে শক্তি জোগাবে।
পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশনও প্রধানমন্ত্রীর এমন মন্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে দেওয়া বিবৃতিতে বলেছে, এর ফলে ধর্ষক, নিপীড়কদের রেহাই দিয়ে শিশু থেকে বৃদ্ধা পর্যন্ত ধর্ষণ, নিপীড়নের শিকার সব নারীর ঘাড়ে দোষ চাপানো হলো।
পাকিস্তানে ধর্ষণ ও নিপীড়ন প্রায় নিয়মিত ঘটনা। গত বছর এক নারী রাতে এক পেট্রোল পাম্পে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। নিজের সন্তানদের সামনে ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই নারীকে এক পুলিশ কর্মকর্তা রাতে কোনো পুরুষ সঙ্গী ছাড়া বাইরে বের হওয়ার কারণে ভর্ৎসনা করলে দেশজুড়ে শুরু হয় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ।
নারী অধিকার প্রশ্নে ইমরান খানের অবস্থান আগেও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। গতবছর এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তাঁর উপস্থিতিতেই করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার জন্য নারীদের ‘অপকর্ম’কে দুষেন এক ধর্মীয় নেতা। এমন অবৈজ্ঞানিক মন্তব্যের প্রতিবাদ না করায় তখনও ইমরানের তুমুল সমালোচনা হয়েছিল।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক নারী দিবসে র্যালি বের করে কট্টরপন্থিদের রোষানলে পড়েন পাকিস্তানের নারীরা। অনলাইনে ভুয়া, বিকৃত ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে শুরু করা হয় অপপ্রচার। র্যালির আয়োজকেরা তখন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের হস্তক্ষেপ কামনা করেও কোনো সাড়া পাননি।