শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৪:৫৬ অপরাহ্ন
মশাহিদ আহমদ :: জয়নাল মিয়া ওরফে কন্নাল মিয়া (৩৮), পিতা লেদু মিয়া ওরফে ইন্তাজ আলী। বর্তমানে মৌলভীবাজার শহরের কাজিরগাঁও এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। তার গ্রামের বাড়ী রাজনগর উপজেলার পাটানটুলা গ্রামে। দেখতে পুরোদস্তর একজন ভদ্রলোক। চলাফেরা করেন ভিন্ন ষ্টাইলে। প্রথম দেখায় তার সাথে কথা বললে বুঝার কোন উপায় নেই যে, প্রতারণাই একমাত্র পেশা। প্রতারণা করেই বিভিন্ন জনের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। অভিযোগ উঠেছে- আলী হোসেন নামীয় এক শুটকি ব্যবসায়ী ও তার স্ত্রীর কাছ থেকে সরকারী ঘর বরাদ্ধ পাইয়ে দেওয়ার নামে হাতিয়ে নিয়েছেন ৮৩০০ টাকা। জেলার একজন সম্মানি ব্যক্তির জন্য অতিরিক্ত ঘুষ হিসাবে ৩ কেজি শুটকিও নিয়েছেন। পরবর্তীতে সরকারি ঘর না পাওয়ায় ঐ টাকা ফেরৎ চাইলে তাকে হত্যার হুমকিও দিয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আলী হোসেন মৌলভীবাজার মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কাজিরগাঁও এলাকার ভুক্তভোগী সাদিয়া আক্তার জানান- আমার জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করে দিবে বলে নগদ ২ হাজার টাকা নিয়েছেন। কিন্তু, সংশোধন না করে জালিয়াতির মাধ্যমে আমার নাম পরিবর্তন করেছে। স্কুলে গিয়ে শিশু ভর্তি ও মোবাইল সিম কিনতে গিয়ে সে জালিয়াতির বিষয়টি অবগত হয়েছি। দরগা মহল্লা এলাকার সালেহা বেগম জানান- বয়স্ক ভাতার কার্ড দেওয়ার নামে ৮শত টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। একই ভাবে তার মেয়ে আনু বেগমকে কার্ড পাইয়ে দেওয়ার নামে ৩ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। রুনা বেগম নামীয় একজন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে ১৫শত টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। রুমি আক্তার জানান- ভাতার কার্ড পাইয়ে দেওয়ার নামে নগদ ১২শত টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। একইভাবে আছমা বেগমসহ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। সম্প্রতি- বিগত ১৬/০৭/২০২১ইং করোনা মহামারীতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হইতে প্রাপ্ত বরাদ্দ হিসেবে মৌলভীবাজার পৌরসভায় নিম্ন আয়ের মানুষের মাঝে চাল বিতরণ কার্ডে অভিনব জালিয়াতির মাধ্যমে ২৪৯৪ সিরিয়ালের একটি চাউলের কার্ড নিয়ে একই সিরিয়ালের লাল অফ রংয়ের ২৪টি কার্ড ও টিয়া কালারের ৬টি কার্ড কালার ফটো মেশিনের সাহায্যে ফটোকপি করে চাল নিতে আসে। এ সময় চাল বিতরনের দায়িত্বে থাকা পৌরসভার স্টাফদের সন্দেহ হয়। পরবর্তীতে ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ আসাদ হোসেন মককু ও কাউন্সিলর সালেহ আহমদ পাপ্পুর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে জয়নাল ও তার ভাই রুজেল জালিয়াতির বিষয়টি স্বীকার করে। পরবর্তীতে ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বায়েস আহমেদ ঐ জয়নাল ওরফে কন্নাল মিয়া এর বাসা তল্লাসী করলে বিপুল পরিমান কার্ড ও ড্রাম ভর্তি ভিজিএফের চাল পাওয়া যায়। এ ব্যপারে জানতে চাইলে ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বায়েস আহমেদ সত্যতা স্বীকার করে বলেন- জয়নাল ওরফে কন্নাল মিয়া বিভিন্ন সময় প্রতারনা করে আসছে। একাধিক প্রতারনার অনেক প্রমান রয়েছে।