রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ১১:৪২ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: সম্প্রতি ভয়াবহ কার ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দুকধারীদের হামলা। গত ২৪ মে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের রব এলিমেন্টারি স্কুলে স্মরণকালের সবচেয়ে হৃদয় বিদারক বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে দেশটিতে। ঘটনায় ১৯ শিশু ও দুই শিক্ষকসহ ২১ জন নিহত হয়। ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই গত ১ জুন লুইসিয়ানা কনভোকেশন সেন্টারের জেভিয়ার ইউনিভার্সিটির কাছে মরিস জেফ কমিউনিটি স্কুলের স্নাতক অনুষ্ঠানে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। এখানে এক নারী নিহত হয়। ঘটনার সূত্রপাত ঘটে দুই নারীর মধ্যকার বাগবিতণ্ডা থেকে। সামান্য কথা কাটাকাটি নিয়ে বন্দুকের ব্যবহার। ঘটনাস্থলে আরো দুইজন আহত হয়েছিল বলেও পুলিশ জানিয়েছিল।
তারপরের ঘটনা ঘটে ৩ জুন। যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া রাজ্যে একটি গির্জার বাইরে গুলি চালিয়ে দুই নারীকে হত্যা করা হয়। তাদের হত্যার পর বন্দুকধারী নিজেও আত্মহত্যা করে। সম্প্রতি সর্বশেষ অল্প সময়ের ব্যবধানে তিনটি বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে। ৪ জুন শনিবার মধ্যরাতে এবং ৫ জুন রবিবার ভোরে পৃথক তিনটি ঘটনা ঘটে। তিনটি হামলায় নিহত হয় নয়জন এবং আহত হয় দুই ডজন।
প্রথম ঘটনা ঘটে যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার বার এবং রেস্তোরার সামনের একটি ব্যস্ত রাস্তায়। দুজন ব্যক্তির ঝগড়া থেকে বন্দুক যুদ্ধের সূত্রপাত। শেষ পর্যন্ত ভীড়ের মধ্যে এলাপাথারি গুলি চালিয়ে তিনজনকে হত্যা এবং ১২ জনকে আহত করে পালিয়ে যায় অস্ত্রধারী। যদিও পুলিশের দাবি ছিল তারা বন্দুকধারীর গায়ে গুলি লাগাতে পেরেছিল। সেদিন মধ্যরাতে টেনেসির চ্যাটানুগার এক বারের কাছে দ্বিতীয় ঘটনা ঘটে। সেখানেও গুলিতে নিহত হয় হয় তিনজন এবং আহত হয় ১৪ জন।
তৃতীয় ঘটনাটি ঘটে রবিবার ভোরে মিশিগানের সাগিনাওয়ে। সেখানে নিহত হয় তিনজন এবং আহত হয় আরো দুইজন। তবে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গুলিবর্ষণের ঘটনাগুলির জন্য কোনো সন্দেহভাজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়নি। এর আগে নিউইয়র্কের বাফেলোতে একটি মুদি দোকানে বন্দুক হামলায় ১০ জন, টেক্সাসের উভালদে শহরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ২১ জন এবং তুলসা, ওকলাহোমার একটি মেডিকেল ভবনে চার জন নিহত হয়। শহরগুলোর বাসিন্দারা এসব হত্যাকাণ্ডের শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এরই মধ্যে আবারো কয়েকটি বিচ্ছিন্ন বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটে গেছে দেশটিতে। অলাভজনক গবেষণা গোষ্ঠী গান ভায়োলেন্স আর্কাইভের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ২৪০টি নির্বিচার গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সহিংসতার যেসব ঘটনায় গুলিবর্ষণকারী বাদে অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছে সেগুলোকেই ‘নির্বিচার গুলিবর্ষণ’ বলে চিহ্নিত করেছে তারা।
নির্বিচার গুলিবর্ষণের এ ধারা থামাতে অ্যাসাল্ট রাইফেল নিষিদ্ধ করা, ব্যাকগ্রাউন্ড চেক বিস্তৃত করা ও বন্দুক নিয়ন্ত্রণের অন্যান্য পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার মার্কিন কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
তিনি টুইটে বলেন, হামলা ঠেকাতে আমাদের উচিত অস্ত্র নিষিদ্ধ ঘোষণা করা। যদি আমরা তা না পারি তাহলে অস্ত্র কেনার বয়সসীমা বাড়িয়ে ২১ বছর করতে হবে।