শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০২:৩১ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট :: দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট চলছে বলে একটি চিহ্নিত মহল উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচার করছে এবং বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ সোমবার (১ আগস্ট) সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে বৈশ্বিক করোনা মহামারি পরবর্তী বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পৃথিবীর জ্বালানি সাপ্লাই চেইন অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। এতে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি মূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি দেখা দিয়েছে।
পৃথিবীর প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি দেশ প্রাথমিক জ্বালানির জন্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমদানিকারক দেশ হিসেবে এ পরিস্থিতির নেতিবাচক প্রভাব বাংলাদেশেও পড়েছে। এই মুহূর্তে ইউরোপ-আমেরিকাসহ পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেই চলছে জ্বালানির সংকট। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য তারা ব্যাপকভাবে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহার কমিয়েছে।
এদিকে, বিশ্বব্যাপী জ্বালানি সংকটের প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অনেক উন্নত দেশেও বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। এর অনিবার্য প্রভাব পড়েছে দেশগুলোর অর্থনীতি ও উৎপাদন ব্যবস্থায়।
এ সময় ওবায়দুল কাদের সম্প্রতি যুক্তরাজ্যের ‘ইভিনিং স্ট্যান্ডার্ড’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের উল্লেখ করেন। ‘গত সপ্তাহে বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ায় লন্ডন কোনোক্রমে ব্ল্যাকআউট (বিদ্যুতের অনুপস্থিতিতে সৃষ্ট অন্ধকার) এড়িয়েছে’ শিরোনামের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দক্ষিণ-পূর্ব লন্ডনে বিদ্যুৎবিভ্রাট রোধ করতে যুক্তরাজ্যকে বিদ্যুতের সাধারণ মূল্যের চেয়ে ৫ হাজার শতাংশ বেশি দাম দিতে হয়েছে।’
এছাড়াও সেতুমন্ত্রী নিউইয়র্ক শহরের মেয়র এরিক এডামসের একটি বক্তব্য তুলে ধরেন। ওই বক্তব্যে মেয়র বলেন, ‘আমরা এমন এক আর্থিক সংকটে আছি, যেটা আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না…… ওয়াল স্ট্রিট ভেঙে পড়ছে, আমরা অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে আছি।’
তিনি আরও বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, অর্থনৈতিক অবরোধ, আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, গ্যাস ও সারের মূল্য বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার নানামুখী সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। বিশ্বের নানান দেশ অসহনীয় ও আকাশচুম্বী মূল্যস্ফীতি মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে।
‘উন্নত বিশ্বের মূল্যস্ফীতির হারের দিকে তাকালে বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের তীব্রতা টের পাওয়া যায়। যেখানে জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ৯ দশমিক ১ শতাংশ, যুক্তরাজ্যে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, জার্মানিতে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ, রাশিয়ায় ১৫ দশমিক ৯ শতাংশ, তুরস্কে ৭৮ দশমিক ৬ শতাংশ, নেদারল্যান্ডসে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৩৯ দশমিক ৯ শতাংশ ও পাকিস্তানে ২১ দশমিক ৩ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি ছিলো ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ।’
‘দেশের ভেতরে অনেকে শুধু মূল্যস্ফীতির কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের সতর্কতামূলক উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বাংলাদেশের অবস্থান তুলনামূলকভাবে সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।’
এ সময় যারা দেশকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে দেখতে চায়, উন্নয়নবিরোধী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রতিভূ, তাদের উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান মন্ত্রী কাদের।