বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ ২০২৫, ০৫:৪৯ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: বিশ্বের সর্বনিম্ন জন্মহারসহ দক্ষিণ কোরিয়া জনসংখ্যাগত এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। ২০২২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সন্তান জন্ম দেওয়ার গড় সংখ্যা ০.৭৮ শতাংশে নেমে এসেছে। আগের বছর রেকর্ড ছিল ০.৮১ শতাংশ। উন্নত দেশগুলোয় জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখার জন্য প্রয়োজনীয় জন্মহার সাধারণত ২.১ শতাংশ। জন্মহার বাড়াতে দক্ষিণ কোরিয়া সরকার ও স্থানীয় সরকার সন্তান জন্ম দেওয়ার জন্য টাকাসহ অন্যান্য উৎসাহ ভাতা দিচ্ছে।
গত এক দশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নত দেশের তালিকায় নাম লেখানো দক্ষিণ কোরিয়ার ওইসিডি তালিকায় সামাজিক নিরাপত্তা এবং নিরাপত্তার ব্যয়ের জন্য সর্বনিম্ন। ২০২২ সাল থেকে দক্ষিণ কোরিয়া প্রসূতি মাদের সন্তান জন্মের পর ১ হাজার ৫১০ ডলার পর্যন্ত টাকা দিচ্ছে। যা বিখ্যাত দেশ ফ্রান্সের চেয়েও বেশি।
দক্ষিণ কোরিয়ায় পরিবারগুলো এক বছর বয়সী শিশুদের জন্য প্রতি মাসে নগদ ৫২৮ ডলার এবং দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য প্রতি মাসে ২৬৪ ডলার করে টাকা পায়। ২০২৪ সালে এই টাকার পরিমাণ বেড়ে যথাক্রমে ৭৫৫ ডলার এবং ৩৭৭ ডলার দেওয়া হবে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার বয়স পর্যন্ত শিশুদের জন্য প্রতি মাসে আরও ১৫১ ডলার দেওয়া হবে, নিম্ন আয়ের পরিবার এবং একক অভিভাবকদের জন্য অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করা হবে। এর পাশাপাশি অন্যান্য সুবিধার মধ্যে রয়েছে গর্ভবতী নারীদের জন্য চিকিৎসা খরচ, বন্ধ্যত্বের চিকিৎসা, শিশুর সেবা এমনকি ডেটিং খরচও।
অফিস ফর গভর্নমেন্ট পলিসি কো-অর্ডিনেশনের দ্বারা গত বছর পরিচালিত একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ১৯ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ মহিলারা সন্তান নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেনি। সিউল ফাউন্ডেশন অব উইমেন অ্যান্ড ফ্যামিলির একটি সমীক্ষায় প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৬ জন যুবক একইভাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
কোরিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার স্টাডিজের এক সমীক্ষার তথ্য অনুসারে, দক্ষিণ কোরিয়ার তরুণ নারীদের মধ্যে মাত্র ৪ শতাংশ বিবাহ এবং মা-বাবাকে অপরিহার্য হিসেবে দেখেন। বাকি মহিলাদের জীবনে এই বিষয়গুলো তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। ২০২২ সালে দক্ষিণ কোরিয়ায় মাত্র ১ লাখ ৯২ হাজার বিয়ে হয়েছে।
পরিবারগুলো সন্তান ধারণ থেকে বিরত থাকার এই সমস্যাগুলো এখন জটিল আকার ধারণ করেছে। এই সমস্যাগুলো সৃষ্টির আরও দিক হলো-কঠিন কর্মসংস্কৃতি, আকাশছোঁয়া আবাসন খরচ, শিক্ষার ব্যয় ও লিঙ্গ বৈষম্য ।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল সম্প্রতি ঘোষণা করেছেন, গত ১৬ বছরে সমস্যাটির জন্য ২১১ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করা একটি ব্যর্থতা ছিল। তিনি সংকট মোকাবেলায় সাহসী এবং নিশ্চিত ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।