মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ১১:৪০ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : তেহরান কখনওই যুক্তরাষ্ট্রের চাপের কাছে নতি স্বীকার করে আলোচনায় বসবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার দাবি করেন, তিনি ইরানের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার জন্য। এরপর শনিবার খামেনি এ কথা বলেন।
ফক্স বিজনেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “ইরানকে সামাল দেওয়ার দুটি উপায় রয়েছে: সামরিক পদক্ষেপ অথবা একটি চুক্তি করা, যাতে তারা পরমাণু অস্ত্র অর্জন করতে না পারে।” এ প্রসঙ্গে ইরানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে খামেনি বলেন, ওয়াশিংটনের আলোচনার আহ্বানের মূল লক্ষ্য হলো নিজেদের শর্ত ইরানের ওপর চাপিয়ে দেওয়া।
খামেনি বলেন, “কিছু শক্তিধর দেশ আলোচনা নিয়ে যেভাবে জোর দিচ্ছে, তা আসলে কোনও সমস্যার সমাধান নয় … তাদের কাছে আলোচনা মানে নতুন নতুন দাবি তোলা। এটি শুধু ইরানের পরমাণু ইস্যু নিয়ে নয় … ইরান অবশ্যই তাদের শর্ত মেনে নেবে না।”
ট্রাম্প তার প্রথম দফা প্রেসিডেন্ট থাকার সময় ইরানের ওপর ‘সর্বোচ্চ চাপ’ প্রয়োগের নীতি গ্রহণ করেছিলেন, যা তেহরানকে বৈশ্বিক অর্থনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন করার পাশাপাশি দেশটির তেল রফতানি শূন্যে নামিয়ে আনতে চেয়েছিল।
২০১৭-২০২১ মেয়াদে ট্রাম্প ইরান ও বিশ্বশক্তিদের মধ্যে স্বাক্ষরিত ঐতিহাসিক চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নেন, যা তেহরানের পরমাণু কার্যক্রমের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল এবং এর বিনিময়ে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছিল। ২০১৮ সালে ট্রাম্প চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করলে, ইরান সেই শর্ত লঙ্ঘন করে তার পারমাণবিক কর্মসূচি আরও সম্প্রসারিত করে।
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ’র প্রধান রাফায়েল গ্রোসি সতর্ক করেছেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর নতুন বিধিনিষেধ আরোপের জন্য কূটনৈতিক সময় দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। কারণ, তেহরান তার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা অস্ত্র-উপযোগী পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। তবে ইরান বরাবরই দাবি করে আসছে, তার পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে। সর্বোচ্চ নেতা খামেনি বলেন, “বলপ্রয়োগ ও ধমক মোকাবিলার একমাত্র পথ হলো প্রতিরোধ করা।”
তিনি আরও বলেন, “তারা নতুন নতুন দাবি নিয়ে আসছে, যা ইরান কখনওই মেনে নেবে না, যেমন— আমাদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা, ক্ষেপণাস্ত্রের পরিসীমা ও আন্তর্জাতিক প্রভাব।” ইরান দাবি করে, তাদের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি সম্পূর্ণ আত্মরক্ষামূলক। তবে পশ্চিমা দেশগুলো এটিকে মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতার অন্যতম কারণ বলে মনে করে।