মঙ্গলবার, ১১ মার্চ ২০২৫, ১০:৪৩ অপরাহ্ন
বড়লেখা প্রতিনিধি: পাশবিক নির্যাতনের শিকার মৌলভীবাজারের বড়লেখার সেই তিন বছরের শিশুটির পাশে দাঁড়িয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এম নাসের রহমান। তিনি ওই শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। পাশাপাশি মামলার ব্যয়ভার বহনের কথা জানিয়েছেন। সোমবার ফোনে ওই শিশুর মায়ের সাথে আলাপকালে তিনি একথা জানান।
নাসের রহমান সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র ও মৌলভীবাজার-৩ (সদর-রাজনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
সোমবার রাত সাড়ে দশটায় মৌলভীবাজার থেকে একটি প্রতিনিধি দল নির্যাতনের শিকার শিশুটির মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর শিশুর মায়ের সাথে ফোনে কথা বলেন নাসের রহমান। এসময় তার চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি সবধরনের সহায়তারও আশ্বাস দেন তিনি। এছাড়া তিনি ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে ভুক্তভোগী শিশুর মায়ের করা মামলা পরিচালনায় আইনজীবীর খরচ তার পক্ষ থেকে বহন করবেন বলেও জানান।
নাসের রহমানের ফোন পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শিশুটির মা। তখন তিনি নিজের জীবনের নিরাপত্তার কথা তুলে ধরে বলেন, “বাসার মালিক আমাকে থ্রেড দিচ্ছেন। শিশুটির নির্যাতনের রক্তমাখা পরনের প্যান্ট বাসার মালিক নিয়ে গেছেন, একথা পুলিশকে কেন বলেছি। ঘটনার দিন তারা মেয়েকে নিয়ে হসপিটালে পর্যন্ত যেতে দেয়নি। বাসার মালিক ওইদিন শিশুটির নির্যাতনের প্রমাণ আলামত কাপড় চোপড় নিয়ে যেতে চাচ্ছিলেন। আমাকে তারা সকলে ঘিরে রেখে মানসিক টর্চার করে। যাতে হসপিটালে যেতে না পারি। তখন আমি একপ্রকার সাহস নিয়ে সরকারি হসপিটালে যাই। সেই বেবি ডাইপার প্যান্ট ও পড়নের প্যান্ট এখন পুলিশের কাছে। ডিএনএ টেস্টও চলে এসেছে। এ কথা কেন পুলিশকে বলেছি সেজন্য। এখন আমার জীবনে কোনো নিরাপত্তা নেই।”
এসময় নাসের রহমান তাকে অভয় দেন এবং মামলায় যেন সঠিক চার্জশীট হয় এবং ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হয় সে বিষয়ে তিনি পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলবেন বলে জানান। প্রতিনিধি দলে ছিলেন-মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্ববায়ক জনি আহমেদ, ছাত্রদল নেতা আখলাকুর রহমান জাবের, জামিল আহমেদ তানভীর ও জুবেদ হোসেন।
ছাত্রদল নেতা জনি বলেন, আমরা নাসের রহমানের পক্ষে শিশুটির জন্য বিভিন্ন ফল ও চকলেট নিয়ে যাই। এসময় শিশুটির মায়ের হাতে নগদ ২০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছি। শিশুটির যাবতীয় চিকিৎসা ব্যয় ও আইনী সহায়তা নাসের রহমানের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
গত ৩ মার্চ সকালে বড়লেখা পৌরসভার গাজিটেকা আইলাপুরের খাদিজা ভেরাইটিজ স্টোরে চকলেট কিনতে গিয়ে ওই শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটি থ্যালেসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। এ ঘটনায় শিশুর মায়ের করা মামলায় পৌরসভার গাজিটেকা-আইলাপুর এলাকার খাদিজা ভেরাইটিজ স্টোরের মালিক নজরুল ইসলামের ছেলে রেদওয়ান ইসলাম আরিফকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে আহত অবস্থায় ওই শিশুটিকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে শিশুটি সিলেটের একটি হসপিটালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।