বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:৩১ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিনিধি: আগামী জুনের মধ্যেই মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন করতে হবে – এমন নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। এছাড়া মে মাসের মধ্যেই সকল উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির সম্মেলন শেষ করতে হবে বলেও জানান তিনি। গতকাল সোমবার মৌলভীবাজার সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে তিনি এ নির্দেশ দেন। আওয়ামীীলীগের প্রতিনিধি সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে মাহবুবউল আলম হানিফ আরও বলেন, আওয়ামী লীগকে আবারও নির্বাচিত করতে হবে। দেশের উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় নিয়ে আসতে হবে। ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় নির্বাচন, সে নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে জয়ী করতে হবে। সেজন্য তৃণমূলের নেতৃবৃন্দকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে।
এদিকে পরিবেশ, বন ও জলবায়ূ পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি বলেছেন, মৌলভীবাজারে শীঘ্রই মেডিকেল কলেজ ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে। বর্তমান সরকারের সময় মৌলভীবাজারে উন্নয়ন কার্যক্রম চলেই আসছে। এক হাজার কোটি টাকার মনু নদী খননের কাজ চলমান রয়েছে। এক সময়ের দুঃখ মনু নদী এক সময় আশীর্বাদে পরিণত হবে। সোমবার মৌলভীবাজার আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, এছাড়া মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে ক্যাবল কার নির্মাণ ও বড়লেখায় দেশের তিন নম্বর বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে। সরকার বয়ষ্ক ভাতাসহ সব ভাতা চালু করা হয়েছে বলে মন্ত্রী বলেন।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সিলেট-৬ আসনের সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সভাপতি ও মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদের সভাপতিত্বে এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘সরকার ‘‘আমার গ্রাম আমার শহর’’ প্রকল্প এবং পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রামে উন্নয়ন করে যাচ্ছে। তাই এগুলো বেশি করে প্রচার করতে হবে। মসজিদ, মাদ্রাসা ও মন্দিরে গিয়ে সরকারের উন্নয়নের প্রচারণা করতে হবে। সোমবার দুপুরে মৌলভীবাজার আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘বেদে সম্প্রদায়কে মূলস্রোত ধারায় নিয়ে আসতে পাঁচ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দেশের সব জনগোষ্ঠীকে মূলস্রোত ধারায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছেন। আপনারা সংগঠনের নেতাকর্মীরা সেগুলোকে প্রচার করতে হবে। তিনি বলেন, ‘চা শ্রমিকদের শিশু সন্তানদের দলে (আওয়ামী লীগে) সম্পৃক্ত করতে হবে। তাদের সংগঠিত করে দলে নিয়ে আসতে হবে। চা শ্রমিকরা আর অশিক্ষিত থাকবে না। চা বাগানে ৬০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, ‘ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে সংগঠন করতে হবে। এ সরকারের আমলেই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।’ এসব উন্নয়ন নিয়ে আগামী দিনে কাজ করতে উপস্থিত নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী ও মৌলভীবাজার-১ আসনে সংসদ সদস্য মো. শাহাব উদ্দিন, অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য সায়েম খান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য মুশফিকুর রহমান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য আজিজুস সামাদ আজাদ ডন, মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জ সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন, মৌলভীবাজার সদর আসনের সাবেক সাংসদ সৈয়দা সায়রা মহসীন,জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি মসুদ আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল হোসেন,জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র ফজলুর রহমান প্রমুখ।
তৃণমূলের পক্ষ থেকে বক্তব্য নেতারা বলেন- “আজকে বঙ্গবন্ধুর কর্মীরা হতাশায় জর্জরিত। কারণ দলে এখন নব্য আওয়ামী লীগাররা পদ নিয়ে বসে আছে। অনেকেই বলেন, হাইব্রিড ও বিএনপি থেকে দলে এসে পদ নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু সত্যি কথা হলো আওয়ামী লীগের ঘাড়ের উপর জামাত-শিবির বসে আছে। এরাই দলে পদ নিয়ে বসে আছে। প্রতিনিধি সভায় উপস্থিত তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যে এসব কথাগুলো উঠে এসেছে। সোমবার মৌলভীবাজার আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় তৃনমুল নেতৃবৃন্দ এ কথা বলেন। তৃণমূল নেতারা আরও বলেন, নির্বাচনে বিদ্রোহীরা কেন দলীয় মনোনয়ন পায়না সেটা মূল্যায়ন করতে হবে। তাঁরা বলেন, দলের বিপক্ষে নির্বাচনে দাঁড়ালে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। তারপর সে বিজয়ী হলে তাঁকে ফুলের মালা দিয়ে দলে ফিরিয়ে নেয়া হয়। মাত্র ৩ মাস আগে যাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। সে বিজয়ী হলে তাঁকে পুনরায় কেন ফিরিয়ে আনা হয়। এই ধারা পরিবর্তন করতে হবে। তৃণমূল নেতারা বলেন, যারা বিদ্রোহী হয় তাঁদের কোন দোষ নেই। তাঁরা মূল্যায়ন না পেয়ে বঞ্চিত হয়ে নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়। বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগকে কিছু বললে আমাদের বুকে লাগেনা। কিন্তু ছাত্রলীগকে কিছু বললে কলিজায় লাগে। ছাত্রলীগ না থাকলে ৭৫ পরবর্তী রাজপথে আওয়ামী লীগ মিছিল মিটিং করতে পারতো না। তাই ছাত্রলীগকে বুকে টেনে নিয়ে রাজপথে থাকতে হবে।