1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪৭ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

সিলেটজুড়ে ট্রাভেলসের আড়ালে সক্রিয় মানবপাচার সিন্ডিকেট

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৫ মার্চ, ২০২২
  • ৩২৩ বার পঠিত

সিলেট প্রতিনিধি : ইউরোপ ও আমেরিকায় পাঠানোর নামে সিলেটে একের পর এক ঘটছে প্রতারণার ঘটনা। বৈধ ও অবৈধপন্থায় ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার জন্য তারা কতিপয় ট্রাভেলস মালিক ও দালালদের হাতে তুলে দিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। বিদেশগমনেচ্ছু শত শত যুবকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে কোনো কোনো ট্রাভেলস মালিক দিচ্ছেন গা ঢাকা। আবার অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে বিদেশের মাটিকে কেউ জিম্মি হচ্ছেন দালালদের হাতে, কেউ ধরা পড়ে কাটছেন জেল, আবার কারও মৃত্যু হচ্ছে যাত্রাপথে অতিরিক্ত ঠান্ডায় বা সাগরে ডুবে। মানব পাচারের এ সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত রয়েছে সিলেটের শতাধিক ট্রাভেলস। এদের বেশির ভাগেরই না আছে সিভিল এভিয়েশনের সার্টিফিকেট, না আছে রিক্রুটিং লাইসেন্স। নামের সঙ্গে ট্রাভেলস শব্দ যুক্ত করেই এরা ধোঁকা দিয়ে মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিভিল এভিয়েশন, আইএটিএ ও রিক্রুটিংসহ কোনো ধরনের লাইসেন্স ছাড়াই সিলেট জেলায় অবৈধভাবে শতাধিক ট্রাভেলস এজেন্সি টিকিটিং ও বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। ট্রাভেলস নাম দিয়ে সাইন বোর্ড টানিয়ে তারা এ কার্যক্রম চালাচ্ছে। বিদেশে লোক পাঠানোর জন্য রিক্রুটিং লাইসেন্সের প্রয়োজন হলেও সিলেটে হাতেগোনা কয়েকটি ট্রাভেলসের রয়েছে এ লাইসেন্স। কিন্তু মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শতাধিক ট্রাভেলস বিদেশে লোক পাঠানোর কাজে জড়িত। মূলত মানব পাচারকারী চক্রের এজেন্ট হিসেবেই কাজ করে থাকে এসব ট্রাভেলস মালিক। তাদের আবার রয়েছে নিজস্ব দালাল চক্র। শহরে ও গ্রামে অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের তরুণদের ইউরোপ-আমেরিকার নানা প্রলোভন দেখিয়ে এ চক্র নিয়ে আসে কথিত ট্রাভেলসে।

এরপর ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর নামে ১০-১৫ লাখ টাকার চুক্তি হয়। বিশ্বাসযোগ্যতার জন্য এ চুক্তি সম্পাদন করা হয় ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে।
সূত্র জানায়, বৈধ পথে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাঠানোর জন্য যেসব ট্রাভেলস চুক্তি করে তারা প্রথমে দু-একজনকে ঠিকই পাঠিয়ে থাকে। এরপর তাদের পুঁজি করে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালায়। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লোক পাঠানোর বিজ্ঞাপন দেয় পত্রিকায়। বিজ্ঞাপন দেখে বিদেশগমনেচ্ছু যুবকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েন ট্রাভেলসে। প্রথমে বুকিং মানি ৫০ হাজার টাকা ও ভিসার পর বাকি টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। এতে যুবকদের বিশ্বাস আরও গাঢ় হয়। একপর্যায়ে নানা অজুহাত ও প্রলোভন দেখিয়ে চুক্তির সম্পূর্ণ টাকাই হাতিয়ে নেয় তারা। এভাবে যখন হাতিয়ে নেওয়া টাকার পরিমাণ কয়েক কোটি দাঁড়ায় তখন ট্রাভেলস মালিক পালিয়ে যান।

সর্বশেষ এরকম ঘটনা ঘটেছে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি। সিলেট নগরীর হক সুপার মার্কেটের ‘আমিন রহমান ট্রাভেলস’-এর স্বত্বাধিকারী আমিন রহমান রোমানিয়ায় পাঠানোর কথা বলে প্রায় ৩০০ যুবকের কাছ থেকে অন্তত ২০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ১৮ জন যুবক মিলে থানায় মামলা দায়ের করেন। টাকা আত্মসাতের পর আমিন দেশের বাইরে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু যেতে পারেননি। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ দেখতে পায় দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে এলেও ‘আমিন রহমান ট্রাভেলস’র কোনো লাইসেন্সই নেই।

ট্রাভেলস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, আমিন রহমান ট্রাভেলসের মতো সিলেটে শতাধিক অবৈধ ট্রাভেলস রয়েছে। যারা কোনো ধরনের লাইসেন্স ছাড়াই বিমানের টিকিটিং, হজ-ওমরাহ প্যাকেজ ও জনশক্তি রপ্তানির কাজ করছে। ট্রাভেলস ব্যবসায়ীদের কোনো সংগঠনের সদস্য না হওয়ায় এদের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থাও নিতে পারে না কেউ। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন প্রকৃত ট্রাভেলস ব্যবসায়ীরা।

অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্ট অব বাংলাদেশ-আটাবের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সহসভাপতি আজহারুল কবীর চৌধুরী সাজু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘অবৈধ ব্যবসায়ীরা আটাবের সদস্য না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। অথচ এদের অপকর্মের কারণে প্রকৃত ট্রাভেলস ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এরা গোপনে নয়, প্রকাশ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিদেশে লোক পাঠানোর নামে প্রতারণা করছে। অথচ প্রশাসন এক্ষেত্রে নীরব। প্রশাসনের নিয়মিত নজরদারি ও অভিযান থাকলে এরা প্রতারণার সুযোগ কম পেত।

আটাব সিলেটের সাবেক সভাপতি আবদুল জব্বার জলিল জানান, ‘মানব পাচারে অবৈধ ট্রাভেলস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কিছু বৈধ ট্রাভেলস মালিকও জাড়িত। রিক্রুটিং লাইসেন্স ছাড়াই এরা বিদেশে মানুষ পাঠানোর কাজ করছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এরা মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। সিলেটে এরকম শতাধিক ট্রাভেলস রয়েছে।’

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..