1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

ডিসকাউন্টের ফাঁদে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে আকাশনীল

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২১ মার্চ, ২০২২
  • ৬১৯ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট : ‘আকাশনীল’ নামে ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠান খুলে লোভনীয় অফার ও ডিসকাউন্টের ফাঁদে ফেলে গ্রাহকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক মশিউর রহমান ও তার বন্ধু ইফতেখারুজ্জামান রনি। যদিও প্রতারণার কারসাজি করতে কোম্পানিটি পরিবার কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলেন প্রতারক মশিউর রহমান।

আকাশনীল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন মশিউর রহমান এবং পরিচালক ছিলেন ইফতেখারুজ্জামান রনি। এছাড়াও কোম্পানিতে মশিউরের মা ছিলেন চেয়ারম্যান। কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে ৭৭ শতাংশ ছিল নিজের নামে, ১০ শতাংশ বোনের নামে, ৮ শতাংশ মশিউরের মায়ের নামে, এবং ৫ শতাংশ ছিল তার স্ত্রীর নামে।

ইভ্যালিসহ অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন অফার দিয়ে মোটরসাইকেলের বিক্রির রমরমা ব্যবসা যখন শুরু করেছিল, ঠিক তখন সে একই কাজে অনুপ্রাণিত হয়। ২০২১ সালের জুনে মোটরসাইকেলভিত্তিক বিভিন্ন অফার দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা চালায়। স্বল্প মূল্যে বা ৩০ শতাংশ ডিসকাউন্টের লোক দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে শুরু করেন ওই প্রতারক।

সোমবার (২১ মার্চ) দুপুর দেড়টায় রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

এর আগে, ১৮ মার্চ এক ভুক্তভোগীর অর্থ-আত্মসাতের অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘আকাশনীল’র এমডি এবং ডিরেক্টরসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা (নং ৩২/১৮০) দায়ের করেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২০ মার্চ) রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব-২ এবং র‌্যাব-৮ এর যৌথ অভিযানে ফরিদপুর থেকে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আকাশনীল’র এমডি মশিউর রহমান ওরফে সাদ্দাম (২৮) ও পরিচালক ইফতেখাইরুজ্জামান রনিকে (৩২) গ্রেফতার করে র‌্যাব। অভিযানে দুটি মোবাইলফোন, ২টি ল্যাপটপ এবং ১টি প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামি মশিউর জানায়, গ্রেফতার মো. মশিউর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ পড়াকালীন তিনি একটি ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেন। ব্যবসা হিসেবে তিনি প্রথমে গার্মেন্টস থেকে রিজেক্টেড টি-শার্ট/গার্মেন্টস পণ্য এনে নিউমার্কেট এলাকায় বিক্রি করতেন। পরে অ্যামাজন, আলীবাবার মত অনলাইনে ই-কমার্স ব্যবসা দেখে তার মাথায় আকাশনীল প্রতিষ্ঠার আইডিয়া আসে। এরপর ২০১৯ সালে আকাশনীল কোম্পানি নামে ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজ তৈরি করে। ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করে। প্রথমে তারা রাজধানীর কাঁঠালবাগান এলাকায় একটি অফিস চালু করেছিল। সেখানে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং কৃষকদের কাছ থেকে শাকসবজি কিনে অনলাইনে হোম ডেলিভারি দেওয়ার ব্যবসা শুরু করে। তবে, করোনা মহামারির কারণে তার ব্যবসা সচল রাখতে পারেনি। সে ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ এর মে মাস পর্যন্ত ব্যবসা না করার কারণে তার পুঁজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর মানুষের কাছ থেকে বিভিন্নভাবে বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে অর্থ নিয়ে তার কোম্পানীকে লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত করে কাঁঠাল বাগান থেকে পান্থপথে অফিস স্থানান্তরিত করে।

তিনি বলেন, ২০২১ সালের জুনে মোটরসাইকেলভিত্তিক বিভিন্ন অফার ও ডিসকাউন্ট দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে শুরু করে। এই ডিসকাউন্টের জন্যই সাধারণত গ্রাহকরা আকৃষ্ট হতো এবং গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ মেইনটেন করত। গ্রুপে তিনি গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সময়ে আশার বাণী, লোভনীয় অফার এবং মোটিভেশনাল বক্তব্য দিতো।

তিনি বলেন, আকাশনীল ১ম ক্যাম্পেইন করেছিল গত মে মাসে। ওই ক্যাএম্পইনে ৩০ শতাংশ ছাড়ে ২ মাসের মধ্যে ডেলিভারির আশ্বাসে ২ শতাধিক মোটর সাইকেলের অর্ডার পায়। এরপর গত জুলাই মাসে ২৫ শতাংশ ডিসকাইন্টে ৪৫ দিনের মধ্যে ডেলিভারির নিশ্চয়তায় ১ হাজারের বেশি মোটরসাইকেলের অর্ডার পায়। এরপর গত আগস্ট মাসে সে মোটরসাইকেলের ৩য় ক্যাম্পেইনে ২৩ শতাংশ ছাড়ে ২৫ দিনের মধ্যে সরবরাহের আশ্বাসে ৯ হাজারের বেশি মোটরসাইকেলের অর্ডার পায়। মোটরসাইকেলের পাশাপাশি সে লোভনীয় ছাড়ে মোবাইল, ইলেকট্রনিক্স পণ্য, গৃহস্থালির অন্যান্য পণ্য বিক্রি নিয়েও অফার দিতেন। পণ্য দিতে না পারায় গ্রাহকদের চাপে পরে গত নভেম্বরে মশিউর অফিস বন্ধ করে দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়।

তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৪০ জন অস্থায়ী কর্মচারী নিয়োগ ছিল। যাদের মাসিক ৪-৫ লাখ টাকা বেতন দেওয়া হতো। তারা কোম্পানির অর্থে ধানমন্ডিতে একটি ফ্ল্যাট আছে যার বর্তমান মূল্য ৩ কোটি টাকা, ২টি দামী গাড়ি একটি প্রিয়াশ ও একটি সিএইচআর ব্যবহার করেন। এছাড়া কোম্পানির প্রায় ৪টি টাটা পিকআপ রয়েছে। বর্তমানে গ্রাহকদের কাছে দেনা প্রায় ৩০ কোটি টাকা। বিভিন্ন ব্যাংকে তার ৪টি অ্যাকাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে। বিভিন্ন সংস্থার সূত্রে প্রকাশিত বিপুল পরিমাণ দায়ের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতার মশিউর কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।

কোম্পানিটি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে লোকসানী কোম্পানি; কোন ব্যবসায়িক লাভ করতে পারেনি। গ্রাহকের অর্থ দিয়েই সব ধরনের ব্যয় ও খরচ নির্বাহ করা হতো। ফলে দেনা ক্রমান্বয়ে বেড়েছে বলেও জানান র‌্যাবের ওই কর্মকর্তা।

গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..