1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৮ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

ভোজ্যতেলের বাজার : বোতল পুরোনো হলেও দাম নতুন

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৯ মে, ২০২২
  • ৫০৪ বার পঠিত

ডেস্ক রিপোর্ট : দেশে দাম বাড়ানোর পরও কাটেনি ভোজ্যতেলের সংকট। নতুন দাম লেখা দু-একটি কোম্পানির পাঁচ লিটারের বোতল বাজারে মিললেও এক বা দুই লিটার বোতলের দেখা নেই এখনও। এদিকে পুরোনো বোতলে লেখা দাম মুছে কেউ কেউ নতুন দরে তেল বিক্রি করছেন। কেউ কেউ পাঁচ লিটারের বোতল খুলে বেশি দামে খুচরা তেল বিক্রিতে মজেছেন। গতকাল রোববার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, নাখালপাড়া ও মগবাজার এলাকা ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।

মগবাজার থেকে কারওয়ান বাজারে সয়াবিন তেল কিনতে এসেছেন দিনমজুর শাহ আলম। তিনি বলেন, মগবাজার এলাকায় তিন থেকে চার দিন ধরে তেল পাচ্ছি না। এ কারণে কারওয়ান বাজারে তেল কিনতে এসেছি। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কারওয়ান বাজারে গরিবের এক ও দুই লিটারের তেলের বোতল নাই। আছে বড় লোকদের জন্য পাঁচ লিটারের বোতল। এক হাজার টাকায় পাঁচ লিটারের বোতল কেনার সামর্থ্য নাই আমার মতো গরিবের।

ইস্কাটন গার্ডেন এলাকা থেকে তেল কিনতে এসে রীতিমতো অস্থির হয়ে উঠেছেন গৃহিণী নুরুন্নাহার। তিনি বলেন, পুরো কারওয়ান বাজারে ঘুরে দুটি দোকানে পাম অয়েল পাওয়া গেছে। ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এক লিটারের বোতল মিলছে না। দোকানিরা আগের দাম মুছে বর্তমান দামে বোতলজাত তেল বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

ঈদের চার-পাঁচ দিন আগে থেকেই বাজার থেকে হাওয়া সয়াবিন ও পাম অয়েল। ঈদের পর দাম বাড়াবে এমন ধারণা থেকেই তেল মজুত করেন ব্যবসায়ীরা। ফলে বাজারে সৃষ্টি হয়ে কৃত্রিম সংকট, যা এখনও চলমান। তবে নতুন দামে দু-একটি কোম্পানির পাঁচ লিটারের বোতল বাজারে ঢুকতে শুরু করেছে। এদিকে ব্যবসায়ীদের অনেকেই ক্ষুব্ধ ডিলারদের ওপর। তারা বলছেন, কোম্পানিগুলো ডিলারদের তেল দিলেও তারা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছে না। নাখালপাড়ার মহসিন স্টোরের স্বত্বাধিকারী মহসিন বলেন, ডিলাররা তেল দিচ্ছে না। অগ্রিম টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না তেলের নাগাল।

বোতল খুলে কেজি দরে বিক্রি: ৭৬০ টাকা দরের পাঁচ লিটারের এক বোতলে হয় সাড়ে চার কেজি তেল। সেই হিসাবে এক কেজির দাম পড়ে ১৬৪ টাকার মতো। এই বোতল খুলে কেজি ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন ডিলার, পাইকার ও খুচরা বিক্রেতারা। সারাদেশে এ ধরনের বহু ঘটনা ঘটেছে। অনেক প্রমাণ হাতেনাতেও পেয়েছে ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। মালিবাগ বাজারের ব্যবসায়ী আরিফ বলেন, গায়ে লেখা থাকা দামের চেয়ে বেশি দরে ডিলারদের কাছ থেকে বোতল কিনতে হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে বোতল থেকে খুলে কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।

পুরোনো দর মুছে নতুন দামে বেচাকেনা: দাম বাড়ানোর আগে যেসব তেলের বোতল ছিল ব্যবসায়ীদের কাছে সেগুলোর গায়ে লেখা পুরোনো দাম ঘষে তুলে ফেলা হয়েছে। যেখানে লেখা ছিল ১৬০ টাকা। খুচরা দোকানে দাম বাড়ানোর আগের সেই বোতল এখন বিক্রি হচ্ছে ১৯৮ টাকা দরে। এ ব্যাপারে কারওয়ান বাজারের মুদি দোকানদার মো. রায়হান জানান, ডিলারদের কাছ থেকে এভাবে তেল কেনা হয়েছে। ডিলার কিংবা কোম্পানি কারা আগের দর মুছে ফেলেছে সেই বিষয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা জানেন না। বর্তমান দর অনুযায়ী এসব তেল ডিলার থেকে কেনা হয়েছে। তাই খুচরায় ১৯৮ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়।

দাম বেড়েছে সরিষার তেলের: সয়াবিন তেলের কিছুটা প্রভাব পড়েছে সরিষার তেলের ওপর। সয়াবিন না পেয়ে অনেকেই সরিষার তেলের প্রতি ঝুঁকছেন। এ কারণে সরিষার তেলের দামও বেড়েছে। কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী হাবিব বলেন, ১৫ থেকে ২০ দিন আগে সরিষার তেলের লিটার ছিল ২৪০ টাকা, তা বেড়ে এখন হয়েছে ৩৬০ টাকা। তবে সরিষা তেলের পাঁচ লিটারের বোতলের দাম এখনও বাড়েনি। পাঁচ লিটার পাওয়া যাচ্ছে ১১৫০ টাকায়। এ ছাড়া খোলা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায়।

অন্য ভোজ্যতেলে ঝুঁকছেন ভোক্তারা: সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে এখন তা রাইস ব্র্যান তেলের দরের কাছাকাছি। এ কারণে ক্রেতাদের অনেকেই এই তেল কিনছেন। পাঁচ লিটারে রাইস ব্র্যান তেলের বোতল পাওয়া যাচ্ছে ৯০০ থেকে ৯৬০ টাকায়। বেড়েছে সূর্যমুখী তেলের চাহিদাও। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের সূর্যমুখী তেলের পাঁচ লিটারের বোতল এক হাজার ৮৭৫ টাকা থেকে এক হাজার ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার উচ্চবিত্তরা অলিভ অয়েলে মনোযোগ বাড়াচ্ছেন। পাঁচ লিটারের অলিভ অয়েল কেনা যাচ্ছে তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে।

বেশি দাম নেওয়ায় জরিমানা: আগের কেনা তেলের বোতলের গায়ে লেখা থাকা দামের চেয়েও বেশি দরে বিক্রি করছেন দোকানিরা। এই অভিযোগে গতকাল কারওয়ান বাজারের শাহ মিরন জেনারেল স্টোরকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর ও মিরপুর এলাকায়ও অভিযান চালানো হয়।

ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মণ্ডল বলেন, ভোক্তার অধিকার রক্ষায় অভিযান অব্যাহত থাকবে। ভোজ্যতেল নিয়ে কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে জরিমানা করা হবে। দাম ও মজুতের বিষয়ে খুচরা, পাইকারি ও মিল পর্যায়ে তদারকি করা হচ্ছে। এদিকে ভোজ্যতেলের বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে আজ সকাল ১১টায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে।

টি কে গ্রুপের পরিচালক সফিউল আথহার তাছলিম বলেন, বড় ব্র্যান্ডগুলোর তেল ছাড়াও নানা ধরনের ব্যবসা রয়েছে, তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। বোতলের পুরোনো দর মুছে দেওয়ার মতো ঘৃণ্য কাজ কোনো কোম্পানি করবে না। এই ধরনের ঘটনা ডিলার ও পাইকারি পর্যায়ে হতে পারে। বাজারে বোতলের সংকটের বিষয়ে তিনি বলেন, তথ্য রয়েছে, ৭৬০ টাকা দরের পাঁচ লিটারের বোতল খুলে বিক্রি করছেন অনেকেই। তবে এখন দাম বাড়ার কারণে সেই সুযোগ পাবে না তারা। টি কে গ্রুপের পুষ্টি তেল বাজারে প্রচুর সরবরাহ করা হচ্ছে। দু-একদিনের মধ্যে বাজারে সব কোম্পানির বোতলে সয়লাব হয়ে যাবে। কোনো সংকট থাকবে না।

বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে নতুন করে সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম নির্ধারণ করে বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ৪৪ টাকা, বোতলজাত সয়াবিনে ৩৮ এবং পাম অয়েলের লিটারে ৪২ টাকা বাড়ানো হয়। ফলে এখন প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে ১৮০ টাকায়। আর সয়াবিন তেলের এক লিটারের বোতল ১৯৮ এবং পাঁচ লিটারের বোতলের দাম পড়ছে ৯৮৫ টাকা। এ ছাড়া প্রতি লিটার পাম অয়েলের নতুন দাম ১৭২ টাকা। গত শনিবার থেকে নতুন দর কার্যকর হয়েছে।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..