শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব থেকে এত দিন বেশি রেমিট্যান্স আসত। তবে এবার যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। চলতি বছরের জুলাই-এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৩.০৫ বিলিয়ন ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ২.৮৭ বিলিয়ন ডলার।
অন্যদিকে গত অর্থবছরের ১০ মাসে (জুলাই- এপ্রিল) সৌদি আরব থেকে ৩.৮৬ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসলেও চলতি অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স কমে আসে ৩.০৪ বিলিয়ন ডলার। হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স বেড়ে যাওয়াকে সন্দেহের চোখে দেখছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
আজ শনিবার (২৭ মে) ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২২-২৩ : তৃতীয় অন্তর্র্বতীকালীন পর্যালোচনা’ শীর্ষক সভায় রেমিট্যান্সের এ চিত্র তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে পাচার হওয়া অর্থ রেমিট্যান্স আকারে আসছে। তারা রেমিট্যান্সে দেওয়া আড়াই শতাংশ প্রণোদনাও নিচ্ছে। এই প্রণোদনা নিতে তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স আনছে।
তিনি বলেন, ‘এটা একেবারেই আনইউজাল, কখনোই হয় না। কারণ, আমরা জানি আমাদের বেশিরভাগ রেমিট্যান্স কোথা থেকে আসে। গত ১০ মাসে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ৯ দশমিক ২২ লাখ মানুষ গেছে। সেখান থেকে প্রত্যাশা মতো রেমিট্যান্স আসছে না। লোক যাওয়া ও রেমিট্যান্সের মধ্যে মিসম্যাচ হচ্ছে। এতদিন সৌদি আরব থেকে বেশি রেমিট্যান্স এলেও যুক্তরাষ্ট্র এখন সে জায়গা দখল করেছে।’
ফাহমিদা খাতুন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে যারা যায় তাদের বেশিভাগই হোয়াইট কালার জব করে। অনেকেই ঘরবাড়ি ও জমিজমা বিক্রি করে দেশ থেকে টাকা নিয়ে চলে যায়। অনেক শিক্ষার্থীও সেদেশে আছে। তারা তো আর টাকা পাঠাতে পারে না। তাহলে বিপুল এ রেমিট্যান্স আসছে কোথা থেকে!
তিনি বলেন, এর একটা সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হতে পারে এমন- যেখান থেকে টাকাটা পাচার হয়েছে সেটা আবার রেমিট্যান্স হয়ে দেশে ফেরত আসছে। রেমিট্যান্সের ওপর যে আড়াই শতাংশ ইনসেন্টিভ বা সাবসিডি দেওয়া হচ্ছে সেটার সুযোগ নেওয়া হচ্ছে। কর্তৃপক্ষকে আরও গভীরে গিয়ে বিষয়টির অনুসন্ধান করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, সাধারণ মানুষ ব্যবহার করে এমন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক সাময়িকভাবে কমানো হলে তারা স্বস্তি পাবে। সেক্ষেত্রে বাজার মনিটরিং প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম নিম্নমুখী হলেও দেশের বাজারে এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, দরিদ্রদের প্রত্যক্ষ সহায়তার আওতা বাড়ানো দরকার। সঠিক ব্যক্তিরা সহায়তা পাচ্ছে কি না, সেটাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। রপ্তানি বৃদ্ধির হার ইতিবাচক নয়। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হচ্ছে। মে ও জুন মাসে তা ৪১ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে হবে। যেটা খুবই কষ্ট সাধ্য।