1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

দলে ভাঙনের পরও আন্দোলন চলবে : ইমরান খান

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৩০ মে, ২০২৩
  • ৭৬ বার পঠিত

 

ডেস্ক রিপোট:পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জোর দিয়ে বলছেন, তার নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের অনেক সিনিয়র নেতার পদত্যাগ সত্ত্বেও ক্ষমতায় ফেরার লক্ষ্যে তিনি আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

বিবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যারা দল ছেড়েছে তাদের জায়গায় তরুণ রাজনীতিবিদদের বসানো হবে।

প্রায় তিন সপ্তাহ আগে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যার জেরে শুরু হয়েছিল দেশব্যাপী এক বিক্ষোভ। কিন্তু ওই ঘটনার পর থেকে তার প্রতি জনসমর্থন কমে যাচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে তার পদত্যাগের জন্য ইমরান খান সেনাবাহিনীর চাপকে দায়ী করেছেন।

বিবিসির পাকিস্তান সংবাদদাতা ক্যারোলাইন ডেভিসকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, ৯ মের সহিংসতার পর থেকে তিনি এখন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় তার জন্য ‘ওয়েইট অ্যান্ড সি’ নীতি অনুসরণ করছেন।

সাক্ষাৎকারে ইমরান খানকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি কীভাবে দল চালাবেন? সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী জবাবে বলেন, ‘প্রথমেই দলের শূন্য পদে নিয়োগ দেব, এবং তরুণ নেতাদের সামনের কাতারে আনব। এদেরও (নতুন নেতাদের) আটক করা হবে বলে আমার আশঙ্কা। এটাও হতে পারে যে তারা আমাকেও জেলে পুরবে।’

‘ভোট-ব্যাংক হারালে অবস্থান দুর্বল হয়ে যাবে’
পিটিআই বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে ইমরান খান বলেন, ‘ভোট-ব্যাংক হারালে আমার অবস্থান দুর্বল হয়ে যাবে।’ যে কোনো রাজনৈতিক দল দুর্বল হয় যখন তার ভোট-ব্যাংক সংকুচিত হতে থাকে।

‘আপনি ভাবতে পারেন যে এটি (বর্তমান পরিস্থিতি) আমার জন্য একটি বড় সংকট, কিন্তু আমি তা মনে করি না। আসলে আমরা সামরিক আইনের সম্মুখীন হচ্ছি।

‘আমি ভাবছি তারা এসব থেকে কী পেতে চায়। অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানগুলো দেশের সবচেয়ে খারাপ [অর্থনৈতিক] অবস্থার দিকেই ইঙ্গিত করছে। আমি জানতে আগ্রহী, আমাদের বাতিল করে দেয়া হলে তাতে দেশের কী উপকার হবে।’

সংলাপ চায় পিটিআই
তিনি জানান, সরকার ও প্রশাসনের মনোভাব জানতে তিনি একটি সংলাপ করতে চান।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন যে তিনি অতীতে কখনো তার সমর্থকদের সঙ্গে এমন কোনো কথা বলেননি যার ফলে ৯ মের মতো ঘটনা ঘটতে পারত।

যখন তাকে প্রশ্ন করা হয়, তার সমর্থকরা ‘ইমরান খান আমাদের রেড লাইন’-এর মতো যেসব স্লোগান দিচ্ছেন তার অর্থ কী? জবাবে তিনি বলেন, ‘লাল লাইনের মতো শব্দের অর্থ হলো এমন একটি দেশ যেখানে কোন আইনের শাসন নেই। যেখানে যখন তখন মানুষকে আটক করা হয় এবং যদি এই পরিস্থিতিতে আমাকেও জেলে পুরে দেয়, তাহলে তার একটি প্রতিক্রিয়া হবে।

‘তারা যদি বলে যে ইমরান খান আমাদের লাল রেখা, আমি কি বলবো যে আমি লাল রেখা নই? … আমার কী বলা উচিত ছিল?’

পিটিআই প্রধান আরও বলেন, ‘বিরোধী দল করা, জনসভার আয়োজন করা, জনগণের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো এবং আসন্ন নির্বাচনের জন্য মানুষকে সংগঠিত করা- কীভাবে এসব গণতন্ত্রের পথে বাধা বলে বিবেচিত হয়? আসলে, বিরোধী দল না থাকলে দেশের গণতন্ত্রই শেষ হয়ে যায়।’

উত্তরাধিকার সূত্রে মামলা
‘আপনার শাসনামলেও কি কজন বিরোধী নেতা কারাগারে ছিলেন?’- এমন এক প্রশ্নের জবাবে ইমরান খান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে সেই পরিস্থিতির কোন তুলনা চলে না।

‘একদমই না। আমাদের আমলে বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ৯৫ শতাংশ মামলা হয়েছে ক্ষমতায় আসার আগে। সেই মামলাগুলো আমাদের সরকার উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে নতুন মামলা করিনি।

‘অন্যদিকে গত কয়েক মাসে আমার বিরুদ্ধে দেড় শতাধিক মামলা হয়েছে, যা দেশের ইতিহাসে কখনো ঘটেনি। আপনাকে সত্যটা জানতে হবে। আমাদের সরকার তাদের [বিরোধীদের] বিরুদ্ধে মামলাগুলো উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিল। এগুলো ছিল দুর্নীতির মামলা, যেগুলো তারা ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে দায়ের করা হয়েছিল।’

৯ মের ঘটনাবলি প্রসঙ্গে ইমরান খান বলেন, পুলিশ ও সেনা ভবনে হামলাকারী জনতা পিটিআইয়ের অংশ ছিল, এটা ঠিক নয়। এনিয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।

পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রসঙ্গে ইমরান খান ব্যাখ্যা করেন, গত ৭০ বছর ধরে সেনাবাহিনী পাকিস্তানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ক্ষমতা ভোগ করেছে। ‘এবং দেশ শাসনের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো সম্পর্ক নেই- এমনটি ভাবা মানে বোকার স্বর্গের বসবাস করা।’

পিটিআইয়ের ‘দুঃস্বপ্ন’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে বিবিসির উর্দু বিভাগের সংবাদদাতা আহমেদ এজাজ জানাচ্ছেন, ৯ মের ঘটনাগুলো স্পষ্টতই তেহরিক-ই-ইনসাফের জন্য একটি ‘দুঃস্বপ্ন’ হয়ে উঠছে এবং দলটি ভেঙে পড়ার অবস্থায় রয়েছে।

তাদের মতে, তেহরিক-ই-ইনসাফের জনপ্রিয়তার কারণে ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে দলে যোগদানকারী ‘ইলেক্টেবল’ [নির্বাচনে জিততে পারেন এমন] রাজনীতিবিদ -যেমন, আসাদ উমর, শিরিন মাজারি, আমির কায়ানি, ইমরান ইসমাইল, সাইফুল্লাহ নিয়াজি বা আলী জাইদির মতো নেতাদের দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা পিটিআইয়ের জন্য ‘অপূরণীয় ক্ষতি’ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

ফলে প্রশ্ন উঠছে, এমন কী ধরনের চাপ ছিল যার ফলে দীর্ঘদিনের নেতারা মনোবল হারাতে বাধ্য হয়েছেন? কেন ‘ইলেক্টেবল’ এবং ‘দলের মুখ’ হিসেবে পরিচিত অন্তত ৮৭ জন নেতা দ্রুত গতিতে দল থেকে নিজেদের সরিয়ে নিলেন?

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. সৈয়দ জাফর আহমদ এসব নেতার ওপর চাপ ও পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন ভিন্নভাবে।

তার মতে, যারা পিটিআইয়ের দীর্ঘদিনের কর্মী এবং যারা দল ছাড়ছেন তাদের দুই ভাগে ভাগ করা যায়।

একদল হল সেই সব লোক, যারা ইমরান খানের আচরণে ক্ষুব্ধ, বলছেন তিনি। ইমরান খান দলের সিনিয়র নেতাদের কথা না শুনেই যেসব নির্দেশ দিতেন, কিংবা দলের ভেতরে যা ঘটেছিল তা নিয়ে এসব নেতাদের আপত্তি ছিল।

দল ছাড়ার পর এসব নেতারা এখন যে বিবৃতি দিচ্ছেন তা থেকে বোঝা যায় যে তাদের দল ছাড়ার জন্য কোনো ধরনের চাপ তাদের ওপর ছিল না। স্পষ্টতই তারা ইমরান খানের আচরণে বিরক্ত ছিলেন। এবং প্রথম সুযোগেই দল ছেড়েছেন, বলছেন ড. আহমেদ।

‘অন্যরা যারা ৯ মের ঘটনায় দুঃখিত – যেমন, আবরার-উল-হক, এরা তরুণ প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করেন। ইমরান খান পাকিস্তানের তরুণ প্রজন্মকে যে স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, তারা সেই স্বপ্নকে অর্জন করতে চাইছিলেন। কিন্তু তারা জানতেন না যে সেই স্বপ্ন অর্জনের জন্য তাদের একটি তথাকথিত বিপ্লবের পথেও হাঁটতে হবে।’

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..