শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫, ০৬:৪৪ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : ঢাকা: অসুস্থ হওয়ার পর স্বজনরা বারবার হাসপাতালে নিতে চেয়েছিলেন কবি হেলাল হাফিজকে। কিন্তু তিনি বলেছিলেন, আমার আর সময় নেই, আই কুয়াইট।
নিজের মৃত্যুকে এতটাই কাছ থেকে অনুভব করেছিলেন প্রেম ও দ্রোহের কবি হেলাল হাফিজ।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চের সামনে তার প্রথম জানাজা হয়।
এ সময় তার বড় ভাই দুলাল হাফিজ, ছোট ভাই নেহাল হাফিজসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, বাংলা একাডেমির পরিচালক অধ্যাপকসহ একাধিক সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জানাজায় অংশ নেন।
নেহাল হাফিজ বলেন, আমরা তো তাকে পরিবার থেকে হারিয়েছি। কিন্তু বাংলাদেশের সাহিত্যাঙ্গন একজন বড় ব্যাক্তিত্ব হারিয়েছে।
আবৃত্তি শিল্পী রাশিদ কামাল বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস যতদিন থাকবে, হেলাল হাফিজ ততদিন থাকবেন। এমনকি ২০২৪ সালের অভ্যুত্থানেও তিনি প্রাসঙ্গিক ছিলেন।
তিনি বলেন, হেলাল হাফিজ আমাকে বলতেন, কিছু লিখতে হলে অনেক পড়বি। তারপর লিখবি অনেক কম। প্রকাশ করবি আরও কম।
হেলাল হাফিজের পরিবারের সদস্যরা জানান, তীব্র অসুস্থ হওয়ার পর অনেকবার তাকে হাসপতালে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তিনি বলেছিলেন, ‘আমার আর সময় নেই, আই কুয়াইট’।
তারুণ্য ও যৌবনের গান বললেই হেলাল হাফিজের কথা মনে পড়ে বলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
তিনি বলেন, আমার জানা নেই, মাত্র একটি কবিতার বই লিখে একটি জাতির শিল্প-সংস্কৃতির ইতিহাসে এত প্রভাব আর কোনো কবি রাখতে পেরেছেন কী না। উনি খুব বেশি বই লিখেননি। কিন্তু আপনি দেখেন। তারুণ্য এবং যৌবনের গান বললেই হেলাল হাফিজের কথা মনে পড়ে। এটা ওনার অর্জন।
তিনি বলেন, একথা অস্বীকার করার উপায় নেই বাংলাদেশের সংস্কৃতি জগত ওনার শূন্যতা অনুভব করবে। ওনার অবস্থান এক বইতেই চিরস্থায়ী করে রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, হেলাল হাফিজ তার কবিতাতেই বেঁচে থাকবেন। উনি একাকী জীবন কাটিয়েছেন। এটা শিল্পীর বেছে নেওয়া একটি জীবন। আমর মনে হয় না ওনার জীবন নিয়ে আক্ষেপ বা অভিযোগ ছিল। আমি এ বিষয়ে জানি না।
মন্ত্রণালয় থেকে কবির স্মরণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিল্পী শক্তিশালী হলে তাকে বাঁচিয়ে রাখতে হয় না। ওনার কবিতাই ওনাকে বাঁচিয়ে রাখবে। তবে মন্ত্রণালয় আমাদের কী কী করা যায়, আমরা কাজ করব। আপনারা খুব দ্রুত শুনবেন।
তিনি বলেন, যদিও কবি কখনো পদক-পুরস্কারের জন্য লিখেন না। তবে দুর্ভাগ্য আমরা হেলাল হাফিজকে আমরা কোনো স্বাধীনতা পুরস্কার বা একুশে পদক দিতে পারিনি। উনি এটা পাওয়ার জন্য লিখেননি। কিন্তু জাতি হিসেবে আমাদের দায়িত্ব। । ফলে এ বিষয়ে কী করা যায়, আমরা দেখব।