মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ১১:৫১ অপরাহ্ন
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :আর মাত্র কয়েক দিন বাকি ঈদের। এরই মধ্যে চলছে ঈদের কেনাকাটা। ঈদের কেনাকাটায় ছোট-বড়, ধনী-গরিব কেউ পিছিনে নেই। নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ক্রেতারা ছুটছেন ফুটপাত থেকে শুরু করে ছোট-বড় মার্কেট ও বিপণি-বিতানগুলোতে। এতে করে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ে জমে উঠেছে রাজধানীসহ সারা দেশের ঈদ বাজার। তাই ঈদকে সামনে রেখে দেশি-বিদেশি জামা-কাপড়, জুতা-স্যান্ডেল ও প্রসাধনীর পসরা সাজিয়ে বসেছে বগুড়ার ব্যবসায়ীরা। রমজানের শেষ সময়ে মৌলভীবোজারের শহরের বিভিন্ন বিপণিবিতানে জমে উঠেছে ঈদ বাজার।
শনিবার ( ২২ মার্চ) সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন মার্কেটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নগরীর ফুটপাত থেকে অভিজাত শপিংমল পর্যন্ত সবখানে চলছে কেনাকাটা। প্রতিটি মার্কেটে ক্রেতাদের ভিড়ে হিমশিম খাচ্ছে বিক্রেতারা। যেন নিশ্বাস ফেলার সময় পাচ্ছে না তারা। পাশাপাশি ফুটপাতের মৌসুমি ও ভ্রাম্যমাণ দোকানে নিম্নবিত্ত মানুষের আনাগোনা বেড়েছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়কের ফুটপাতে ও ভ্যানে করেও চলছে বিকিকিনি।
সাজানো-গোছানো এই শহরে সর্বস্তরের মানুষের জন্য ভিন্ন ভিন্ন দাম ও মানের পোশাক পাওয়ায় ক্রেতারা ভিড় করছেন চায়ের রাজধানীখ্যাত মৌলভীবাজার। এখানে রয়েছে দেশের নামিদামি সব ব্রান্ডের দোকান। উচ্চবিত্তদের পছন্দের তালিকায় থাকা ব্রান্ডগুলো হলো, ঈশিকা মার্কেট, জুলিয়া শপিং সিটি, লোকনাথ বস্রালয়, শ্রীমঙ্গলের শাপলা সুপার মার্কেট,গন্ধেশ্বরী ভান্ডার, ইজি ফ্যাশন, প্লাস পয়েন্ট, এমবি, বিলাস, দর্জিবাড়িসহ আরও অনেক স্বনামধন্য বিপণিবিতান রয়েছে এই এলাকায়।
কমলগঞ্জ থেকে শ্রীমঙ্গলে ঈদ মার্কেট করতে এসেছেন মুমিনুল ইসলাম ও তার বোন রেহেনা বেগম। এ সময় তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর আমাদের ঈদ মার্কেট শ্রীমঙ্গল থেকে করি, তাই এবারো বোনকে সঙ্গে নিয়ে এসেছি। বাচ্চার জন্য জামা ও আমার একটি প্যান্ট কিনেছি। এখন বউয়ের জন্য কসমেটিকস কিনবো। কমলগঞ্জের তুলনায় এখানে অনেক বেশি ব্রান্ডের দোকান রয়েছে। তাই ঈদকে সামনে রেখে একবার হলেও শ্রীমঙ্গলে আসা হয় আমার।’
পরিবার নিয়ে জেলা শহরের ঈশিকা মার্কেট করতে আসা সাংবাদিক পারভেজ আহমেদ ও জাহেদ আহমেদ বলেন, ‘ঈদের কয়েকদিন আগে মার্কেটে প্রচুর ভিড় থাকে। তখন পরিবার নিয়ে মার্কেটে আসা খুব কষ্টকর। তাই ঈদ মার্কেট একটু আগেই সেরে নিচ্ছি। আমরা শহরের অন্যান্য মার্কেটে ঘুরেছি কিন্তু বাজেট অনুযায়ী কাপড় পেলাম এই মার্কেটে। অন্যান্য মার্কেটের তুলনায় এই মার্কেটে কাপড়ের দাম কিছুটা কম। আর এখানে ছেলে, মেয়ে ও বাচ্চা সবার কাপড় রয়েছে। এ বছর জামা কাপড়ের দাম তুলনামূলক একটু বেশি। তাই চারজনের ঈদ মার্কেট করতে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকার বেশি খরচ হবে।’
জেলা ও উপজেলার বেশ কয়েকজন পোশাক বিক্রেতারা জানান, ‘সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রচুর লোকের সমাগম হচ্ছে মার্কেটগুলোতে। ক্রেতারা নিজের পছন্দ অনুযায়ী শাড়ি, থ্রি-পিস, শার্ট ও প্যান্ট, জুতা, স্যান্ডেল, পাঞ্জাবিসহ অন্যান্য জিনিস কিনছেন।’
কমলগঞ্জে উপজেলার নামিদামি সব ব্রান্ডের দোকান আরাকা ক্লোথিং ষ্টোর এর প্রতিষ্টাতা জাহেদ ও ফাহিম আহমেদ বলেন বলছেন, ‘সাধারণ মানুষের সাধ্যের ভেতরে দোকানে পণ্যসামগ্রী তোলা হয়েছে। কোনো ধরনের পণ্যতে অতিরিক্ত দাম রাখা হচ্ছে না, তবে উন্নত মানের পণ্যের দাম একটু বেশি। আগে ক্রেতাদের ভালো মানের কাপড় ও পণ্যসামগ্রী কিনতে জেলা শহর ও বিভাগীয় শহরে যেতে হতো; এখন সেই মানের কাপড় ও পণ্যসামগ্রী আমাদের এখানে পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিগত বছরের তুলনায় এ বছর বেচাকেনা একটু বেশি। নারী ক্রেতারা এখন ফ্যাশন সচেতন। সে কারণে স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোর বিভিন্ন অনলাইন টিভি ও সিরিয়ালের নায়িকাদের অনুরূপ কাপড় খোঁজ করছে। এর মধ্যে কাভি কাভি, সানিলিওনি, অমৃতা, কুমুদ, জিবিকা, ঝিলিক, পাংকুরি, গোপি, অপ্সরা, বাহা, মধুবালা অন্যতম।’
ব্যবসায়ী সোলাইমান উদ্দিন, তিনি মা মনি বস্রালয়ের স্বত্ত্বাধিকারী। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘এবার ঈদে ক্রেতা সাধারণকে আকৃষ্ট করার জন্য বিদেশি বিভিন্ন কোম্পানির উন্নতমানের শাহী পাঞ্জামী, শার্ট, জিন্স প্যান্ট, চায়না প্যান্ট, সেন্ডেল, সু ও বেল রাখা হয়েছে।’
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, ‘পর্যটন নগরী ও চায়ের রাজধানীক্ষেত এলাকা হচ্ছে কমলগঞ্জ উপজেলা। এখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার মানুষ আসে। পর্যটক ও সাধারণ মানুষের জন্য পুলিশ কাজ করছে। প্রতিটা বাজার ও বিপনী বিতানে অতিরিক্ত পুলিশ মুতায়েন রাখা আছে।’
মৌলভীবাজার জেলা ভোক্তা অধিকার অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মো. আল আমিন বলেন, ‘কোন ব্যবসায়ী যাতে অতিরিক্ত দামে কোনো কিছু বিক্রি করতে না পারে সে সেদিকে আমাদের নজর আছে।’