বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে মালবাহী জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবির ঘটনায় তল্লাশি অভিযানের তৃতীয় দিনে এক শিশুসহ আরও দুজনের লাশ উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকর্মীরা।
আজ মঙ্গলবার সকালে বন্দর উপজেলার মদনগঞ্জ শাহ সিমেন্ট এলাকা থেকে ত্রিশের ঘরের এক পুরুষ এবং হরিহপুর এলাকা থেকে তিন বা চার বছর বয়সী এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
রবিবারের ওই ঘটনায় এ নিয়ে মোট ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা গেল। তাদের মধ্যে ৭ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নৌ পুলিশ জানিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ সদর নৌ থানার ওসি মনিরুজ্জামান সোমবার রাত পর্যন্ত মোট চারজন নিখোঁজ থাকার তথ্য জানিয়েছিলেন।
তারা হলেন মুন্সীগঞ্জ গজারিয়ার জয় রামের সাড়ে তিন বছর বয়সী মেয়ে আরোহী, চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ বিষ কাঠালী এলাকার আব্দুল্লাহ্ আল জাবের (৩২), মুন্সীগঞ্জ জোবায়ের হোসেন এবং কুয়েত প্রবাসী মোসলেম উদ্দিন হাতেম (৫৫)।
ওসি মনিরুজ্জামান জানান, মঙ্গলবার সকালে দুজনের লাশ পাওয়ার পর স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। মরদেহ দুটি শনাক্ত হলে নিখোঁজের তালিকায় আরও দুজনের নাম বাকি থাকবে।
নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে মালবাহী জাহাজের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল আফসারের আরও এক যাত্রীর মরদেহ সোমবার উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরিরা।
আগের দুই দিনে উদ্ধার হওয়া যে সাতজনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে, তারা হলেন: মুন্সিগঞ্জ সদরের উত্তর ইসলামপুরের ব্যবসায়ী জয়নাল ভূঁইয়া (৫৫), মুন্সিগঞ্জ সদরের আরিফা আক্তার (৩৫), তার ছেলে সাফায়েত (১৫ মাস), পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের সালমা বেগম (৪০), তার মেয়ে ফাতেমা (৭), মুন্সিগঞ্জ সদরের স্মৃতি (২০), উম্মে খায়রুন ফাতেমা (৪০)।
এ ছাড়া সোমবার উদ্ধার হওয়া আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী একজন পুরুষের মরদেহ এখনও শনাক্ত করা যায়নি।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আরেফিন বলেন, মঙ্গলবারও নদীর কয়েক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের ডুবুরিরা।
রবিবার দুপুর ২টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদরের সৈয়দপুর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে সিটি গ্রুপের মালিকানাধীন মালবাহী জাহাজ রূপসী-৯ পেছন থেকে চাপা দিলে ডুবে যায় যাত্রীবাহী লঞ্চ এমএল আফসার উদ্দিন।
নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জগামী লঞ্চে সে সময় অর্ধশতাধিক যাত্রী ছিলেন বলে নৌপুলিশের ভাষ্য। যাত্রীদের অনেকে সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও নিখোঁজ থাকেন বেশ কয়েকজন।
ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌ পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ কর্মীরা উদ্ধার কাজে অংশ নেন। সোমবার ভোরে উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’ ৫৫ হাত পানির নিচ থেকে লঞ্চটিকে টেনে তুলে তীরে নিয়ে রাখে।
রূপসী-৯ জাহাজটি এবং এর মাস্টারকে রবিবারই মুন্সীগঞ্জের হোসেনদি এলাকা থেকে আটক করে নৌ পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ থেকে সব পথে ছোট লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়।