মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২২ অপরাহ্ন
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :: মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না’ এই প্রতিপাদ্যে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুরে অসহায় মানুষের মাঝে বিভিন্ন সময় নগদ অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী দিয়েছেন মানবতার ফেরিওয়ালা নামে খ্যাত যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আহমদুর রহমান নোমান। হাজীপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অসহায় মানুষের পাশাপাশি রোগে আক্রান্ত মানুষের পাশে থাকেন তিনি।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সরজমিন আহমেদুর রহমান নোমান এর বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, যাদের জোটে না দু’বেলা দু’মুঠো খাবার। আর এখনতো করোনার ছোবলে তারা দিশেহারা। এসব দিশেহারা মানুষের মাঝে গত দুই বছর ধরে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন অনেকটা নীরবে-নিভৃতে এবং প্রচারও বিমুখ।
শুধু তাই নয় গত বন্যার সময় শতাধিক মানুষের পাশাপাশি ৪ জনের ঘর নির্মান করে দিয়েছেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অক্সিজেন কন্টেলট্রেটর ও অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিয়ে চিন্তিত সাধারন মানুষ মাঝে দিয়ে শ্বাসকষ্ট রোগির পাশে দাঁড়িয়ে এই ক্রান্তিকালে মুখে হাসি ফুটাচ্ছেন। এ সকল মানবিক উদ্যোগে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন হাজীপুরের মাহাতাবপুর গ্রামের যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আহমেদুর রহমান নোমান।
প্রতিবারের মতো এবারও শনিবার সকালে মাতাবপুর এলাকার মনুবাজারে নিজ বাড়ীতে আগত প্রবিত্র রমজান উপলক্ষে শতাধিক অসহায় দরিদ্র পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন। কোন আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া দেশে থাকা বড় ভাই রেজাউর রহমান চৌধুরী কয়ছর নিরবে প্রচার বিমুখ ছাড়া বাড়ীতে সারি সারি ইফতার সামগ্রী রেখেছেন। এখান থেকে একজন দুইজন করে আসছেন তা নিয়ে যেথে দেখা যায়।
রেজাউর রহমান চৌধুরী কয়ছর বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থাকা ছোট ভাই আহমদুর রহমান নোমানের সহযোগিতায় প্রতি বছর রমজানে আগে অসহায়দের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরন করেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আর্থিক অনুদান ছাড়াও খেলার সরঞ্চাম, চিকিৎসা ও ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়।
এ ভাবে প্রবাসে থাকা লোকজন প্রতি পরিবারের পাশে দাঁড়ালে অসহাত্ব কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন।
দীর্ঘদীন ধরে করোনার প্রভাবে ক্ষুধার্ত মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন গুনীজনের মাধ্যমে প্রবাসে থেকেও তাঁদের তালিকা তৈরী করে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন নোমান। প্রতি রমজানে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন তিনি। কিন্তু খাদ্য সামগ্রী বিতরণে তাঁর কোন দল নেই। দলমত নির্বিশেষে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ৫শ’ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন আহমদুর রহমান নোমান।
প্রবাস থেকে আহমদুর রহমান নোমান মোবাইল ফোনে বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে আমি দায়িত্ব মনে করেছি সাধারণ মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর। ছোট বেলা থেকেই শুনে আসছি, দু’বেলা দু’মুঠো খাওয়ার সংগ্রাম। এই সংগ্রামটাই আমি অসহায়দের জন্য করছি। শুধু খাদ্য সামগ্রীই নয় তিনি অসহায় রোগিদের মাঝে নগদ অর্থ চিকিৎসা সামগ্রী ও ঘরবিহীন মানুষকে ঘর দিয়ে সাহায্য করছেন।
তিনি আরও বলেন, অসহায়দের পেটে যতোদিন ক্ষুধা আছে ততদিন তাদের পাশে থাকতে চাই। এটাই আমার তৃপ্তি। অসহায় মানুষগুলো পেটপুরে খাওয়ার পর তৃপ্তির যে হাসিটা দেয়, এটা আমার কাছে কোটি টাকার সম্বল। আমার এই পরিশ্রম স্বার্থক হয় তখন। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষেরা চাল-ডাল পওয়ার পরে তাদের হাসিমাখা মুখটা দেখার আনন্দটা নিজের চোখে না দেখলে বোঝানো যাবে না।