1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

মৌলভীবাজারে বৈশাখে মৃৎশিল্পীদের আগের ব্যস্ততা নেই

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২২
  • ৩৮২ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্টার :: বৈশাখ এলেই ব্যস্ত সময় পার করতেন মৃৎশিল্পের কারিগররা। যদিও আধুনিকতার ছোঁয়ায় মৃৎশিল্প প্রায় বিলুপ্তির পথে, কিন্তু বংশ পরম্পরায় এবং জীবিকা নির্বাহের তাগিদে অনেকেই এখনো মৃৎশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রয়েছেন। বৈশাখ উপলক্ষে মৃৎশিল্প খ্যাত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে সেই আগের ব্যস্ততা নেই।

বৈশাখ মাস শুরু হলেও আগের মত কাজ নেই। পহেলা বৈশাখকে ঘিরে বাঙালির আনন্দ-উল্লাসের কমতি নেই। বৈশাখকে সামনে রেখে ব্যস্ততার ধুম পড়তো মৃৎশিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট লোকদের মাঝে।

এক সময়ের মৃৎশিল্পের এক পল্লী ছিল মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার পূর্ব নন্দিউড়া গ্রামে ।

এ গ্রামের বেশিরভাগ মানুষই মাটির তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। হাড়ি, পাতিল, কলসি, বাটিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন মাটির তৈরি সামগ্রী তৈরি করতেন তারা। পাশাপাশি বৈশাখ এলেই খেলনা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাতেন । বিগত দুই দশক আগেও এমন দৃশ্যপট ছিল এখানে। এখন শুধু চাহিদার আলোকে মাটির তৈরি কলসি,থালা-বাসন, বিভিন্ন প্রকার মাটির সামগ্রী নিপূণভাবে তৈরি করে থাকেন। মনের মাধুরী মিশিয়ে ফুটিয়ে তোলেন চমৎকার সব নিদর্শন। বৈশাখ এলে তাদের মাটির তৈরি সামগ্রী বানানোর ধুম পড়ে। এ সময়টাতে তাদের তৈরি এসব জিনিস বাজারে বেশি বিক্রি হয়।

তবে দিন যত যাচ্ছে মানুষ ততই বিলাসিতার পথে হাঁটছে। আধুনিকতাকে সঙ্গী করে এখন মাটির বদলে প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসপত্রই বেশি ব্যবহার করছে। যে মাটির তৈরি জিনিসপত্র ছিল একমাত্র অবলম্বন এখন সেখানে প্লাস্টিকের তৈরি জিনিসপত্রকে স্বাগত জানাচ্ছে। এ অবস্থায় হয়তো ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প একদিন হারাতে বসবো আমরা। বৈশাখ মাসকে সামনের রেখে চৈত্র মাসে কাজ শেষ করতে হয়। প্রথা অনুযায়ী বৈশাখ মাসের চরক পুজার পর থেকে এক মাস এ কাজ বন্ধ থাকবে। গত দু’বছর ধরে কোরনার কারনে উৎসব অনুষ্ঠান পালন হয়নি। তবুও বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ এলেই শুধু এ কারিগরদের দেখা যায়। এছাড়া তেমন একটা খোঁজ পাওয়া যায় না মৃৎশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকজনের। এ গ্রামের ১৫ পরিবার এ শিল্পের সাথে জড়িত ছিল। বর্তমানে ৩ পরিবার বাপ-দাদার পেশাকে টিকিয়ে রাখতে এখন এ পেশার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। বেচাকেনা কম বিধায় অনেকেই এ কাজ করতে অনাগ্রহ প্রকাশ করছে। অনেকেই তাদের ছেলে-মেয়েকে এ পেশায় আনতে নিরুৎসাহিত করছে। আর এর মূল কারণ বেচা-কেনা কম। মানুষ এখন মাটির তৈরি জিনিসের চেয়ে মেলামাইন, প্লাস্টিককে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। এখন বেচা কেনা খুবই কম।

মৃৎশিল্পের কারিগর হরেন্দ্র পাল । তিনি তৈরি করছেন মাটির বিভিন্ন হাড়ি,পাতিল, কলসি, বাটি ও খেলনা সামগ্রী। বৈশাখী মেলাকে কেন্দ্র করেই তাদের এ আয়োজন ছিল। আগের মত মেলা উৎসব না হওয়াতে বাড়িতে পরমায়েসী কাজ চলছে।

হরেন্দ্র পাল বলেন, ‘আমাদের বাড়ির বেশিরভাগ লোকই মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিল। একসময় মাটির তৈরি এসব জিনিসের চাহিদা থাকলেও আধুনিকতার মারপ্যাঁচে মানুষ এখন আর এসবের দিকে ঝুঁকছেন না।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমরা মৌসুমী কারিগর হয়ে গেছি। বাপ-দাদার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে মাটির তৈরি এসব পাত্র বানাচ্ছি। আমাদের পরের প্রজন্ম এ কাজ শেখেনি। হয়তো আমাদের পর এ শিল্প আর টিকে নাও থাকতে পারে।’ উপেন্দ্র পাল বলেন ‘ এক সময় এ শিল্প আর টিকে থাকবে না। মৃৎশিল্প তৈরীর মাটি পাওয়া যায় না। বাসন পুড়ানোর জন্য জ্বালানী কাঠের সংকট রয়েছে। কোরনায় প্রভাবে গেলো দু’বছর ধরে বেচাকেনা তেমন নেই। বাড়িতে শুধু পরমায়েসি কাজ করছি।

নিবারন চন্দ্র পাল বলেন, সরকারি কোন সাহায্য সহযোগিতা না থাকায় বিলুপ্তির পথে মৃৎশিল্প। সরকারি পৃষ্টপোষকতা থাকলে হয়তো শেষ রক্ষা হতে পারে এ শিল্পের।

রাজনগর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাবুল সূত্রধর বলেন, এ পর্যন্ত মৃৎশিল্পের জন্য কোন সহযোগিতার সুযোগ নেই। সরকারি কোন প্রজেক্ট আসলে আমরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিব।

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..