শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:১২ পূর্বাহ্ন
জেলা প্রতিনিধি :: চা শ্রমিকদের ৩০০ টাকা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বাংলাদেশে ১৬৭টি চা বাগানে আন্দোলনরত শ্রমিকদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ বলেছেন, ব্রিটিশ আমল থেকেই চা শ্রমিকরা প্রকট মজুরি বৈষম্যের শিকার। বিশ্বের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাংলাদেশের চা শিল্পের উৎফুল্ল ঘটলেও চা শ্রমিকদের জীবনমানের কাঙ্খিত কোনো পরিবর্তন হয়নি।
বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ কথা বলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুলতান মনসুর। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই চা শ্রমিকদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই ধারাবাহিতায় জাতির জনকের কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ছাড়া কোনো সরকারই চা শ্রমিকদের মানোন্নয়নে কাজ করেনি।
তাই চা শ্রমিক ও চা বাগান মালিকদের সমন্নয় করে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া চা শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়- প্রধানমন্ত্রীই এখন চা শ্রমিকদের শেষ ভরসাস্থল।
চা শ্রমিকদের আন্দোলনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি জানিয়ে মৌলভীবাজারসহ সারাদেশের চা শ্রমিকদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্ন না ঘটে সেদিকে নজর রাখতে স্বরাষ্টমন্ত্রীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান সুলতান মনসুর।
আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক এই ভিপি আরো বলেন, একসময় পাট শিল্পের ব্যাপক সুখ্যাতি ছিল। পাট শিল্পকে সোনালী আঁশ বলা হত,কিন্তু সঠিক ব্যবস্থাপনার ঘাটতি ও দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের কারণে পাট শিল্প ধ্বংষ হয়ে গেছে। এখন যাতে চা শিল্প ধ্বংষ না হয় সেদিকেও আমাদের সবার খেয়াল রাখতে হবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানসহ অন্যান্যরা।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আজ ২৭ আগস্ট শনিবার বিকেলে গণভবনে চা-বাগান মালিকদের সাথে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এই বৈঠকের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় মৌলভীবাজারের ৯২টিসহ দেশের ১৬৭টি চা-বাগানের আন্দোলনরত শ্রমিকরা। শ্রমিকদের প্রত্যাশা, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে মজুরি বৃদ্ধি করবেন। প্রশাসন থেকে শুরু করে চা শ্রমিক সংগঠনের নেতারা শ্রমিকদের কাজে যোগদান করতে নানা কৌশল ও বৈঠক করলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা ছাড়া কাজে যোগদান করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। সাংসদ সুলতান মনসুর আশা প্রকাশ করছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বাগান মালিকদের জরুরী বৈঠকে চা-শ্রমিকদের মজুরী বৃদ্ধির দাবিতে একটি কার্যত সিদ্ধান্ত আসবে যাতে করে চা-শ্রমিকরা চলমান আন্দোলন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে পুনরায় বাগানে কাজে ফিরবে।