1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

একজন এস কে সিন্হা ও সম্যক আলোকপাত

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ১ নভেম্বর, ২০১৬
  • ৪০৭ বার পঠিত

-আহমদ সিরাজ:
বঙ্গোপসাগরের পলি মাটি থেকে উৎসারিত এই দেশের মাটি, মানুষ ও নৈসর্গিক বৈচিত্র্যে ঋতু-ষড়ঋতুর ধারাপাত জনজীবনে যে আলোড়ন বিলোড়ন ঘটিয়ে চলেছে,তাতে পৃথিবীর মানুষজন থেকে এ দেশের মানুষের আলাদা রেখা টানা যেতে পারেÑযার ফলে এদেশের মানুষ জোয়ারের উজান ভাটির মতো হয়ে উঠেছে একই সঙ্গে ভাবুক ও বিপ্লবী।
এ জন্য এদেশের মানুষের জাতীয় চেতনায় যেমন করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘সোনার বাংলা’,ডি.এল. রায়ের ‘ধন ধান্যে পুষ্পেভরা’, নজর”লের ‘কাণ্ডারী হুশিয়ার’,জীবনানন্দের ‘রূপসী বাংলা’,লালনের ‘জাত গেল জাত গেল বলে’, তেমনি এ দেশে সকল ঔপনিবেশিক বিদ্রোহে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মণিপুর বিদ্রোহ, সাঁওতাল বিদ্রোহ, হাজং বিদ্রোহ, কোচ বিদ্রোহ, কৈবর্ত বিদ্রোহ বাংলাদেশ তথা সমগ্র ভারতবর্ষের আগাপাশতলায় ঝাকুনি দিয়েছেÑ যা ইতিহাসের প্রমাণ্য দলিল হিসাবে আছে। এসব বিদ্রোহ বিপ্লবের মধ্যে মণিপুর অধ্যুষিত ভানুবিল কৃষক বিদ্রোহ অন্যতম ইতিহাসাশ্রিত ঘটনাÑ যাতে কমলগঞ্জ উপজেলা চিহ্নিত হয়ে আছে। ইতিহাস ঐত্যিহ্যের দিক থেকে বাংলাদেশের অনেকগুলো বৈশিষ্টই যেমন কমলগঞ্জ উপজেলা ধারণ করে আছে,তেমনি ব্যক্তি ও ব্যক্তিত্বের দিক থেকেও এ উপজেলা বিরাটত্বের একটা জমিন উদ্ভাসিত হয়ে আছেÑ যা এই উপজেলার একজন এস কে সিন্হা’র প্রধান বিচারপতি হিসাবে অধিষ্ঠিত হওয়ার মধ্যে দিয়ে আমাদের জানান দিয়েছে।
রাজধানীর নিয়নবাতির আলোঝলমল কিংবা মসৃণ হোয়াইট কালার বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবার থেকে তার উঠে আসা নয়Ñকাঁদা-মাটি,লোক ঐতিহ্য ঘেরা, লোকজ গ্রামীণ জীবন ও সংস্কৃতিকে আলো বাতাসের মধ্যে ধারণ করে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসাবে এস.এক সিন্হার আসন চিহ্নিত হয়েছে।
একজন সাধারণ নাগরিকের মতো ভালোলাগা,মন্দ লাগা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় একজন সাধারণ নাগরিকের মতো এক ভোটের অভিন্ন অনুভূতি দ্বারা তাড়িত হলেও তিনি বিচার বিভাগের শীর্ষে প্রধান বিচারপতির আসনে অধিষ্ঠিত হওয়াতে ব্যক্তিগত অনুভূতির বাইরেও তিনি দেশ-জাতির অনুভূতি ধারণ করছেন,পাশাপাশি ন্যায় বিচারের ক্ষেত্রেও তিনি জাতির ‘ব্যারোমিটার’ হিসাবে বিবেচ্য হয়ে আছেন।
আজ থেকে ৬৫বছর আগে ১৯৫১সালের ০১জানুয়ারি কমলগঞ্জ থানার আলীনগর ইউনিয়নের তিলকপুর গ্রামে সুরেন্দ্র কুমার সিন্হা জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ললিত মোহন সিন্হা ও মাতার নাম ধনবতি সিন্হা। তিনি চার ভাই এক বোনের মধ্যে দ্বিতীয়। বোন প্রয়াত হলে বাকী তিনজন স্ব-স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।
পিতা ললিতমোহন সিন্হা শিক্ষকতা জীবনে একজন ঋষিতুল্য শিক্ষক হিসাবে শিক্ষাব্রতে জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। যা এখন ডিজিটালাইজড জীবন ব্যবস্থায় কল্পনাও করা যায় না। অতি সাধারণ জীবন যাপনের মধ্যে সূষ্প’ষ্ট থাকা, সহজ থাকা এবং সততা ও নিষ্ঠার সহিত জীবন গঠন করে শিক্ষা দান করা “আপনি আচরি ধর্ম” না হলে তা যেমন দেওয়া যায় না তেমনি গ্রহণ করা যায় না। শিক্ষাব্রতী ললিতমোহন সিন্হা তা করতে পেরেছিলেন বলে সন্তানদের এভাবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। তখনকার সময়ও শিক্ষা-দীক্ষায় মণিপুরী অধ্যুষিত গ্রাম তিলকপুর অগ্রসর হলেও সমগ্র গ্রামগুলো একই চরিত্র বহন করতো। পথঘাট বলতে কেবল কাঁচাই নয়Ñপেক-কাদা, ধুলা-বালি আর চলাচলের ক্ষেত্রে পায়ে হাটাই মুখ্য বিবেচিত হয়েছে। সুরেন্দ্র কুমার সিন্হার এসব পরিবেশের ভেতর থেকে গড়ে উঠতে হয়েছে। এ সময় তাকে স্থ’ানীয় রানীর বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাঠ নিতে হয় আরও দশ জন ছাত্রের সঙ্গে অবস্থ’ান করে। ১৯৫৯ সালের দিকে প্রাথমিক পাঠ সমাপ্ত করে কমলগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ১৯৬৬ সালে এস,এস,সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। অত:পর তিনি ভাল কলেজে পড়ার উদ্দেশ্যে সিলেট মদন মোহন কলেজে গিয়ে বাণিজ্য বিভাগে ভর্তি হন। এবং ১৯৬৮ সালে মদন মোহন কলেজ থেকে এইচ,এস,সি পরীায় উত্তীর্ণ হন। এখানে প্রসঙ্গত উলে­খ্য যে, সুরেন্দ্র কুমার সিন্হা ছাত্র থাকাবস্থায় লেপ বা কাথা মুড়ি দিয়ে বইয়ের পাতায় কেবল নিমগ্ন থাকেন নি। তিনি চোখ মেলে তাকিয়েছেন দেশ সমাজ তথা চলমান পরিস্থি’তির দিকেও। তৎকালীন ঔপনিবেশিক পাকি¯তান আমলে ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৬৬’র ৬দফা আন্দোলন, ৬৯’র গণ অভ্যূত্থান, ৭০’র নির্বাচন সর্বোপরি ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ ইত্যাদি চিন্তা চেতনা ধারাও আলোড়িত হয়েছেন।
তখন জাতীয়তাবাদী রাজনীতির পাশাপাশি প্রগতিশীল ধারাও বিশেষত মনিপুরী অধ্যুষিত এলাকায় এর প্রভাব কম ছিল নাÑ যার হিসাব এখন তলিয়ে যা”েছ। এসব তথ্যের এখনও জানান দিতে পারেন কমলগঞ্জের গণ-ফোরাম নেতা আব্দুর রশিদ চৌধুরী মাখন। অত:পর এইচ,এস,সি পাশের পর তিনি আইন পেশা অধ্যয়নে আগ্রহী হয়ে উঠেন। যদিও তার এ পেশায় যুক্ত হতে পিতা ললিত মোহন সিন্হার আগ্রহ ছিল না। কিন্তু’ পুত্র সুরেন্দ্র কুমার সিন্হা জিদ ধরে এ পেশা গ্রহণ করে। ১৯৭৩সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এলএলবি ডিগ্রী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৭৪সালে তিনি খ্যাতিমান আইনজীবী সুলেমান রাজা চৌধুরীর সহকারী হিসাবে আইন পেশায় যুক্ত হয়ে নিজেকে গড়ে তুলতে মনোযোগী হয়ে পড়েন।
১৯৭৮সালে এস কে সিন্হা ঢাকা হাইকোর্ট বিভাগের এডভোকেট হিসাবে উপমহাদেশের প্রখ্যাত এর্টনি সবিতা রঞ্জন পাল (এস.আর পাল) এর চেম্বারে যোগদান করেন। তার দক্ষতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেলে ১৯৯০ সালে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী হিসাবে পরিচিতি ও খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৯৯সালের ২৪অক্টোবর তিনি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হলে সুনামের সহিত ১০বছর দায়িত্ব পালন শেষে ২০০৯সালের ১৬জুলাই তিনি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ লাভ করেন। এসময়কালে তিনি স্বীয় দক্ষতা বলে উলে­খযোগ্য অবদান রাখায় দেশে বিদেশে প্রশংসিত হয়ে উঠেন।
তিনি তখন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি হিসাবে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল কমিশনের চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত হন। উচ্চতর এসব আদালতে বহু যুগান্তকারী রায় প্রদানে তিনি দক্ষতা ও সাহসের পরিচয় দিয়েছেন যা বিচার বিভাগে নজির হিসাবে ইতিহাস হয়ে উঠেছে।
২০১৫ সালের ১৭ই জানুয়ারি এসকে সিন্হা সুপ্রিম কোর্টের ২১তম প্রধান বিচারপতি হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন। বাংলাদেশের শীর্ষবিন্দুতে অব¯থানকারী কেবল হাতে গোনা কয়েকজনের মধ্যে এস কে সিন্হা একজন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে উঠেন।
মার্কসবাদীরা বলে থাকে সাবজেক্ট অবজেক্ট অর্থাৎ বিষয় ও বিষয়ীগত অবস্থা বিবেচ্য হয়ে না উঠলে সমাজের বদল ঘটে নাÑ কিন্তু’ এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিচারের ক্ষেত্রে যুদ্ধাপরাধীর বিচার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জন্য টার্নিং পয়েন্ট হিসাবে বিবেচ্য হয়ে উঠেছিল। এক্ষেত্রে এস.কে. সিন্হার প্রধান বিচারপতি হিসাবে দক্ষতা ও সাহসিক পদক্ষেপে বাংলাদেশে দৈশ্বিক ও বৈশ্বিক ইতিহাসে একটা নজির ও নজিরবিহীন ঘটনাও বটে।
তিনি বিচারপতি, প্রধান বিচারপতি হিসাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও পরিচিত ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন। তিনি বিচার বিভাগের কাজের পাশাপাশি বহু আন্তর্জাতিক সেমিনারেও অংশ নিয়েছেন। ২০০২সালে ৬-৮ ডিসেম্বর ভারতের লকেèèৗ শহরে বিশ্বের প্রধান বিচারপতিদের সম্মেলনে যোগদান,২০০৬সালে ২২দিন ব্যাপী কোরিয়ার সিউলে অনুষ্ঠিত সিনিয়র জজদের সম্মেলনে যোগদান, ২০১০ সালে কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত বিচারকদের উৎকর্ষ সম্পর্কিত কর্মসূচীতে উপস্থিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাপত্র উপস্থাপন। এছাড়াও বিভিন্ন জার্নালে বিচার আইন বিষয়ক রচনা,প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি দায়িত্বের অংশ হিসাবে পৃথিবীর বহু দেশ সফর করেছেন। যেমন নেপাল, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা অষ্ট্রেলিয়া ইত্যাদি।
বিদগ্ধ বিশিষ্টজনদের চোখেও বিচারপতি এস,কে সিন্হা যেভাবে উঠে এসেছেন তার কতিপয় রেখাপাত করা যেতে পারে।
ব্যারিস্টার এম আমীর-উল-ইসলাম: ‘বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিন্হাকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি পদে নিয়েগের মাধ্যমে তার যোগ্যতা, নিষ্ঠা, অভিজ্ঞতা এবং প্রজ্ঞাকে যেমন স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। তেমনি একই সাথে আমাদের সংবিধানের ১৯১, ২৮২ ও ২৯৩ অনুচ্ছেদের উজ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনেরও সুযোগ ঘটেছে।
ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ :‘বাংলাদেশে ২১তম প্রধান বিচারপতি পদে আজ তিনি আসীন। এই সাফল্যের ঁিসড়িতে প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের নাম জড়িয়ে আছে। মদনমোহন কলেজ (১৯৪০)।
প্রফেসর ডা: মৃগেন কুমার দাস চৌধুরী : এ সময় সুরেনকে প্রায়ই ঢাকা থেকে অসুস্থ পিতাকে নিজ হাতে স্নান করায়ে, রান্না করে খাওয়ায়ে, তুষ্টি লাভ করতে প্রত্য করেছি।
অধ্যাপক মোঃ রফিকুর রহমান: যেহেতু আমরা একই থানার একই স্থানের একই স্কুলের ছাত্র ছিলাম। তাই সিলেট থাকা অবস্থায় আমাদের সম্পর্ক ছিল অত্যš- নিবিড়। কলেজ বন্ধ হলে ট্রেনেই বাড়ী আসতে হতো, তাই প্রোগ্রাম করেই একসাথে আসতাম। সিকান্দার জুলকার নাইন: ‘মাননীয় বিচারপতি এস কে সিন্হার তড়িৎ সিদ্ধান্ত- গ্রহণের ক্ষমতা অসাধরণ। কমিশনের যে কোন ফাইল তার টেবিলে এক মিনিটও পড়ে থাকতে দেখি নাই। ফাইলটি কি বিষয়ে এটুকু বললেই তিনি বুঝে ফেলতেন এবং তড়িৎ সিদ্ধান্ত দিয়ে দিতেন’।
এডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিব :‘এখনও তিনি কথায়-বক্তৃতায় তার শ্রদ্ধেয় সিনিয়রদের কথা আন্তরিকতার সঙ্গে স্মরন করেন’।
ড. রনজিৎ সিংহ: ‘বিচারপতি এস কে সিন্হা উৎসব অনুষ্ঠনাদিতে শেকড়ের সন্ধানে নিজ গ্রামের বাড়ীতে চলে আসতেন, মিলিত হতেন নানান বয়সের মানুষের সঙ্গে’।
প্রধান বিচারপতি হিসাবে সুকঠিন দায়িত্বের পাশাপাশি নিজে প্রতিবেশ, সমাজকে ভুলে যেতে চান নি। জন্মস্থান তিলকপুরকে ঘিরে গড়ে তুলেছেন সমাজ হিতৈষী প্রতিষ্ঠান ‘ললিতমোহন-ধনবতী মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন ও ললিত মোহন গ্রন্থাগার’। তার এ ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য হচ্ছে সংক্ষেপে এ রূপ:
” একটা পাঠাগার গড়ে তোলা-যাতে একটি সৃষ্টিশীল পাঠক গোষ্ঠী গড়ে উঠে।
” গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি প্রদানের মধ্যে দিয়ে উচ্চ শিক্ষার পথ সুগম করা।
” নৃ-তাত্বিক জনগোষ্ঠীর লোকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সুযোগ প্রদান করা।
” সমাজে কন্যা দায়গ্রস্থ পিতাকে বিবাহের খরচ বহনে সহায়তা প্রদান করা।
” আদিবাসী-মণিপুরীদের মৃতের সৎকার এর জন্য আধুনিক ইলেকট্রিক চুল­ী স্থাপন করা।
” চিকিৎসা ক্ষেত্রে দরিদ্রদের সহায়তা প্রদান করা।
এই ল’ সামনে রেখে ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে গ্রন্থাগারের জন্য ১৫০০বই সংগৃহিত হয়ে প্রতিদিন বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চালু রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রতি বছর আবেদনের প্রেক্ষিতে এই ফাউন্ডেশনের আওতায় উচ্চ শিক্ষার জন্য গরীব ও মেধাবী মণিপুরী ছাত্ররা (বিশেষত বিষ্ণুপ্রিয়া) বৃত্তির সুযোগ লাভ করেছে। বছরে ৩০-৩৫জন ছাত্র বৃত্তি পেয়ে থাকে। যাদের ১৫০০-২০০০ টাকা পর্যন্ত অনুদান দেওয়া হয় প্রতি মাসে।
গরীব অসহায় পরিবারকে আবেদনের পে্িরক্ষতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। বছরে গড়ে ৪-৫জন এ সুবিধা পেয়ে থাকে। গরীব অসহায় কঠিন রোগ-ব্যাধিতেও সাহায্য পেয়ে থাকে। ২০১৫সালে একজন বিষ্ণুপ্রিয়া পরিবার চিকিৎসা খাতে ফাউন্ডেশন থেকে ৫০,০০০ টাকার আর্থিক সহায়তা লাভ করেছে। এলাকার মণিপুরী মন্দির সংস্কারের জন্য সময় সময় আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়। মণিপুরী সমাজের মৃতের দাহ অনুষ্ঠানাদীর বৈদ্যুতিক চুল­ী স্থাপনের কাজ চুড়ান্ত পর্যায়ে। এটি চালু হয়ে গেলে মতৈ মণিপুরী নারী-পুরুষ সৎকারে বিরাট সাহায্য পাবে। ফাউন্ডেশনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ভাবে এসব কর্মকান্ড পরিচালনা হচ্ছে।
এসব কর্মকান্ডের পাশাপাশি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বিনামূল্যে অসহায় মানুষদের আইনগত সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে এবং আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ন্যায়-নীতি পালন ধর্মী একটা মানবিক,অসা¤প্রদায়িক সমাজ গঠনের উদাহরন তৈরীতে ফাউন্ডেশন ভূমিকা রাখতে পারে। উন্নয়ন, অসা¤প্রদায়িকতা, মানবিকতা, ন্যায়-নীতি নিষ্ঠতার একটা সু-বাতাস এতদঅঞ্চলে প্রবাহিত হবেÑতার একটা রূপরেখা ললিতমোহন-ধনবতী ফাউন্ডেশন প্রণয়নে উদ্যোগ নিতে পারে। বর্তমানে অনাগত ভবিষ্যতে যাতে প্রেরণার উৎস হিসাবে পথ দেখাতে পারে।
শিখরে অধিষ্ঠিত মাননীয় প্রধান বিচারপতির হয়তো চাওয়া-পাওয়ার তেমন নেইÑতিনি দেশ সমাজ তথা মানুষের জন্য বাকী জীবনটুকু নিঃশেষিত হয়ে যেতে চান হয়তো। ফাউন্ডেশন গঠনের মধ্যে দিয়ে তার এ অনুভূতি আমাদের জানান দিচ্ছে।
দেশের বরণ্যে প্রধান বিচারপতি হিসাবে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্খার বাংলাদেশ তথা গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেতা ও সমাজতন্ত্রের বাংলাদেশ নির্মানে ’৭২এর সংবিধান প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ললিতমোহন-ধনবতী ফাউন্ডেশন একটি আলোকিত প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে উঠবে এ প্রত্যাশা রাখতে দ্বিধা নেই।
সহায়ক সুত্র: আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে ২০১৫
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: বলরাম সিংহ,ললিতমোহন-ধনবতি গ্রন্থাগার, তিলকপুর।
লেখক: লোক গবেষক ও প্রাবন্ধিক।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..