1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

একাত্তোরের অকুতভয়বীর মরহুম বৃগেডিয়ার জেনারেল এম.এ. মতিন পি.এস. সি.বি.পি. এক বিস্মৃত বীরঃ স্মরন

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ১৭০ বার পঠিত

:মুজিবুর রহমান মুজিব:
একাত্তোরের মহান মুক্তিযুদ্ধ, বাংলা ও বাঙ্গাঁলির হাজার বছরের ইতিহাসে একটি গৌরব ময় অধ্যায়। তৎকালীন সময়ে পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র পাকিস্থানের ১৯৭০ সালের সাধারন নির্বাচনে বাঙ্গাঁলি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের জনক, আওয়ামীলীগ প্রধান বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক বিজয় নিরিংকুশ সংখ্যা গরিষ্টতা অর্জনের পর পাকিস্থানের ক্ষমতাসীন- ক্ষমতালিপ্সু ফৌজি প্রেসিডেন্ট লে: জে: এ.এম ইয়া হিয়া খান ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা করতঃ একাত্তোরের পচিশে মার্চ কাল রাতে অপারেশন সার্চ লাইট নামে পূর্ব বাংলার বিরুদ্ধে আঘোষিত যুদ্ধ ঘোষনা করতঃ বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেফতার এবং বাঙ্গাঁলি হত্যা অগ্নিসংযোগ লুন্ঠন ধর্ষনের উদ্ভিন্ন উল্লাসে মেতে উঠে। দেশও জাতির এই ক্রান্তি কালে চট্রগ্রামের কালুর ঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে পাকিস্থান সেনাবাহিনির এক দেশ প্রেমিক মেজর স্বদেশপ্রেম ও স্বাদেশিকতায় উদ্ভোদ্ধ হয়ে জাতির নির্বাচিত নেতাও স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর পক্ষে আমি মেজর জিয়া বলছি বলে মহান মুক্তি যুদ্ধের ঘোষনা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে চীরস্থায়ীভাবে নিজের স্থান করে নেন, মুক্তিযুদ্ধের একটি দিক নির্দেশনাও দেন। পরবর্ত্তী কালে সৈয়দ নজরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্টপতি এবং তাজ উদ্দিন আহমদ কে প্রধান মন্ত্রী নির্বাচিত করে প্রবাসী মুজিব নগর সরকার গঠিত হয়। জেনারেল এম.এ.জি ওসমানীকে প্রধান সেনাপতি, সমগ্র বাংলাদেশকে এগারোটি সেক্টারে বিভক্ত করে এগারো জন সেক্টার কামান্ডার নিয়োগ দিলে যুদ্ধ কালীন প্রবাসী সরকার একটি সাংঘটনিক রূপ লাভ করে। মুক্তি যুদ্ধের প্রাথমিক পর্য্যায়ে পাকিস্থান সেনাবাহিনীর বাঙ্গাঁলি অফিসার ও জোয়ানদের বীরত্ব পূর্ন অবদানও কৃতিত্ব পূর্ন ভূমিকা স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্নাক্ষরে লিপিবদ্ধ। ছ’ ফুটাদিক লম্বা, সুঠাম শরীর, উজ্জল ফর্সা চেহারার পিঙ্গঁল চুখি এম.এ. মতিনের জন্ম বৃটিশ ভারতের শেষ ভাগে মৌলভীবাজার সদর উপজেলাধীন পাঁচ নম্বর আখাইলকুরা ইউনিয়ন অন্তর্গত রসুলপুর গ্রামের এক সম্ভান্ত মুসলিম পরিবারে হলেও তার বেড়ে উঠাও লেখাপড়া সুনামগঞ্জ বসবাসরত সরকারি চাকুরে বড় চাচা মোহাম্মদ আনোয়ার এর অভিবাভকত্ব ও তত্ত¡াবধানে। বাল্যকৈশোর কাল থেকে মেধাবী কৃতি ক্রীড়া বিদ এম.এ মতিন পঞ্চাশের দশকে সেকেন্ড লেপ্টেনেন্ট হিসাবে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। একাত্তোর সালে মেজর অবস্থায় বঙ্গঁবন্ধুর আহবানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গেঁ সম্পর্ক ছিন্ন করে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করতঃ ব্রিগোডিয়ার জেনারেল খালেদ মোশাররফ এর নেতৃত্বে বীর বিক্রমে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন। স্বাধীনতা উত্তর কালে বঙ্গঁবন্ধুর সরকার তাঁকে মুক্তিযুদ্ধে কৃতিত্ব প্রদর্শনের জন্য বীর প্রতীক খেতাবে ভূষিত করেন। সেনাবাহিনীর এড জুটেন্ট জেনারেল সহ বিভিন্ন গুরুত্ব পূর্ন পদে দায়িত্ব পালন করতঃ পেশাগত দক্ষতা প্রদর্শন করেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল পদ মর্য্যাদায় উন্নিত হন। ১৯৭৫ সালে মেজর জেনারেল শফিউল্লা বীর উত্তম যখন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান তখন পনেরোই আগষ্টের কাল রাত্রিতে সেনাবাহিনীর কতেক বিপথগামী জুনিয়র সেনাকর্মকর্তা বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্টপতি, স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যাকরে। তার ভাষায় পনেরোই আগষ্টের সারথী হয়ে তাঁর ভাষায় দেশ ও জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনে বঙ্গঁবন্ধুর মন্ত্রীসভার বানিজ্য মন্ত্রী খুনীখন্দকার মুশতাক আহমদ রষ্টক্ষমতায় আসীন হন, নিজেই স্বঘোষিত রাষ্টপতি হন। খুনী খন্দকার মুশতাক আহমদকে নতুন রাষ্টপতি হিসাবে অভিনন্দন জানানোর হিড়িক এবং বঙ্গঁভবন হত্যাকারি ছোকরা মেজরদের আড্ডা আয়েশ খানা হলেও মুজিবানুগামী বীর মুক্তিযুদ্ধা ব্রিগেডয়ার জেনারেল এম.এ মতিন পি.এস.সি.বি.পি তা সমর্থন করেন নি, খুনীখন্দকার মুশতাক এর মোসাহেব এবং হত্যাকারি মেজর চক্রের সহযোগী না হওয়াতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম.এ মতিন পদোন্নতি ও উপযুক্ত পদায়ন থেকে বঞ্চিত হন। তাকে বার্মায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে মিলিটারি এ্য টাসি হিসাবে বদলি করা হয়। অথছ তার জুনিওর লে: কর্নেল শরিফুল হক সহ একাধিক খুনী মেজর চক্রকে বিদেশে বিভিন্ন হাইকামিশনে গুরুত্ব পূর্ন দেশে গুরুত্ব পূর্ন পদে পদায়ন বদলি করা হয়। বার্মা থেকে দেশে এসে চাকরি জীবনের এক পর্য্যায়ে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডি.জি হিসাবে কাজ করতে হয়েছে তাকে। ব্রিগোডিয়ার পদ মর্য্যাদায় এখান থেকেই তিনি অবসর গ্রহন করেন। ক্রীড়া বিদ ব্রিগোডিয়ার জেনারেল এম.এ মতিন একজন দৌড় বিদও বটেন। তার মনোঃ কষ্ট ও একাকিকিত্ব নিয়ে ঢাকার একটি প্রভাবশালী ইংরেজী পত্রিকা “লউনলিনেছ অফ এ লং ডিষ্টেন্ট রানার” শিরোনামে একটি হৃদয় গ্রাহী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলেন। এই বীর যোদ্ধার সহধর্মিনী সৈয়দা আর্জুমান্দ মতিন তাদের চার সন্তান আরমান মতিন, ইরমান মতিন, প্রিয়াংকা মতিন ও পূরবী মতিনকে নিয়ে সপরিবারে স্থায়ীভাবে ঢাকায় বসবাস করেন। সন্তান গন পিতৃ ভূমি মৌলভীবাজার এসে কোন দিন বসবাস করেন নি। এলাকা বাসিও তাদেরকে চিনেনা। তার একমাত্র জ্যেষ্ট ভ্রাতা এম.এ মনির বাংলাদেশ বিমানের উচ্চপদ থেকে অবসর গ্রহন করে পরিণত বয়সেই ইন্তেকাল করেছেন। বর্ত্তমান প্রজন্ম বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগোডিয়ার জেনারেল এম.এ মতিনকে বর্ত্তমান প্রজন্মের অনেকেই দেখেন নি, কেহ কেহ তার নাম শুনেছেন মাত্র। তার জন্মভিঠা রসুলপুরের পৈত্রিক বাড়িটি এখন পরিত্যক্ত। এই বাড়িও পরিবারের প্রধান সরকারি চাকরিজীবী ও শিক্ষানুরাগি মো: আনোয়ার আশির দশকেই ইন্তেকাল করেছেন। তাঁর সন্তান গনের মধ্যে একমাত্র কন্যা বেগম ছালেহা ছত্তার শ্বশুর বাড়ি সুনামগঞ্জ পরিনত বয়সে, আর সকলেই দেশে বিদেশে কবর বাসি। মুক্তি যুদ্ধের প্রামান্য গ্রহ্ণ, বঙ্গঁবন্ধুর ¯েœহ ধন্য লেখক গবেষক সাংবাদিক এম.আর মুকুল এর আমি বিষয় দেখেছি গ্রহ্ণে মুক্তি যোদ্ধাদের নামের তালিকায় দুই নম্বর সেক্টরের সেনা কর্মকর্তাদের এক নম্বর নাম উল্লেখ করেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম.এ মতিন পি.এস.সি বি.পি এর নাম। একাত্তোরের অকুত ভয় বীর, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চেীকশ সেনাকর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম.এ মতিন পি.এস.সি.বি.পি. আমার মরহুম পিতার কাজিন। আমাদের গ্রামের বাড়ি পাশাপাশি। তিনি আমার বেশবয়ো: জ্যেষ্ট। তার মত আমারও সুনাম গঞ্জেই লেখাপড়া। লেখাপড়া শে শে তিনি এলেন, আমি গেলাম তবে সুনামগঞ্জের সঙ্গেঁই তার সবসময় যোগাযোগ ছিল। আমার চাচা হিসাবে আমাকে পুত্র বৎ ¯েœহ মমতা করতেন। লেখা পড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হতে উপদেশ দিতেন। আমার প্রয়াত পিতা আমাদের বংশের মধ্যে সকলের বড় হিসাবে সবাই বড় ভাই সাহেব বলে ডাকতেন সম্মান করতেন তাদের বড় ভাই সাহেব এর বড় ছেলে আমি তাই আত্বীয় স্বজনের কাছে আমার একটা আলাদা অবস্থান ছিল। চাচাকে বাল্য কৈশোর কাল থেকে দেখিছি মেধাবী। কার্ম্মঠ। দেশ প্রেমিক। ন্যায় পরায়ন ও নিষ্টাবান। স্বাধীনতার পূর্ব কালে আমার ঢাকাই ছাত্র জীবন এবং স্বাধীন বাংলা দেশে আমার ঢাকাই সাংবাদিকতা জীবনে তাঁকে তার সেনা নিবাসের অফিস ও বাসায় তাঁর কাছে থেকে তার দূঃসাহস, প্রান প্রাচুর্য্যও স্মার্টনেস দেখে বিমুগ্ধ বিমোহিত হয়েছি। তার সহধর্মিনী সৈয়দা আর্জুমান্দ মতিন ও একজন গুনবতীরমনী। আমার কাছে মমতাময়ী মায়ের মত। পচাত্তোর পরবর্তী কালে বীর প্রতীক খেতাব ধারি বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ,এ, মতিন পি,এস,সির প্রান প্রাচুর্য্য, হাসি খুশী আর কর্ম্ম চাঞ্চল্য দেখা যায় নি। কতেক পদচ্যোত, কতেক জুনিয়র সেনা কর্ম্মকর্তা কর্তৃক সপরিবারে বঙ্গঁবন্ধু হত্যাকান্ড একজন সেনা কর্মকর্তা হিসাবে স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে পারেন নি তিনি। একজন পেশাদার সাংবাদিক হিসাবে পুরাতন ঢাকায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর হেড কোয়ার্টারে ডি,ডি হিসাবে যখন তাকে দেখতে যাই তখন তাকে রয়েল বেঙ্গঁল টাইগারের মত গর্জন করতে দেখেনি, দেখেছি শুনেছি এক অব্যক্ত বেদনা নিয়ে মিনমিন আওয়াজ। বল্লেন হাজার কয়েক টাকা মায়নার গুরুত্ব হীন এ চাকরি আর করবেন না রিটায়ারমেন্টে যাবেন। আমি একাত্তোরের অকুতভয় বীরকে চেয়ে চেয়ে দেখলাম মনে হল সুন্দর বনের রয়েল বেঙ্গঁল টাইগারকে আগামসি লেনের খাচায় বন্দীকরে রাখা হয়েছে। চাকরি থেকে অবসর গ্রহন করে এক বুক বেদনা, মনের কষ্ট, অসীম অপমানে বুকে নিয়ে ধুকে ধুকে ঢাকায় ইন্তিকাল করেন একাত্তোরের অকুত ভয় বীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম.এ, মতিন পি,এস,সি। ঢাকা সেনা নিবাসস্থ গুরুস্থানে, যথাযোগ্য মর্যাদায়, সসম্মানে তিনি সমাহিত। বিজয়ের এই মাসে তার উজ্জল স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করছি। মহান মালিক তার বেহেশত নসীব করুন, এই মোনাজাত সহ আমীন। ছুম্মা আমীন।
[ মরহুমের আত্বীয়। মুক্তিযোদ্ধা। এডভোকেট হাই কোর্ট। সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব।]

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..