বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:২০ অপরাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনাভাইরাসে বিধ্বস্ত গোটা ভারত। অক্সিজেন, প্রয়োজনীয় ওষুধ এবং হাসপাতালে বেডের প্রকট সংকট দেখা দিয়েছে। দেশটিতে প্রগতি ও ধারাবাহিকভাবে বেড়ে চলেছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।
পোড়া লাশের গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। এমন অবস্থায় রয়টার্সে প্রকাশিত কিছু ছবিতে ভীতি ছড়িয়েছে আরও। সেখানে দেখা গেছে, বালুচরজুড়ে শুধুই পোতা লাশ। যতদূর চোখ যায় ততদূরই এমন চিত্রের দেখা মিলছে।
সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, করোনাভাইরাসসহ অন্যান্য কারণে মৃতদের দাহ করতে কাঠের অভাব দেখা দিয়েছে। শশ্মানে লাশ দাহ করার জন্য লম্বা সিরিয়াল দিতে হচ্ছে। কখনো কখনো কয়েকদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে লাস দাহ সিরিয়াল পেতে। এমন অবস্থায় অনেক লাশ নদীর তীরের বালুচরেই পুতে রাখা হচ্ছে। দাহ কাজ সম্পন্ন এড়াতে।
উক্ত এ ঘটনা সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ছে উত্তরপ্রদেশে। যমুনা ও গঙ্গার দুই ধারে এমন হাজার হাজার গণকবরের সন্ধান মিলেছে। অনেক লাশ অল্প গভীরে পোতা হয়েছে যার কারণে কাপড়ে ঢাকা লাশের অংশ বাইরে বেরিয়ে এসেছে। বাতাসে দুর্গন্ধের কারণে বসবাস করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এর আগে নদীতেও শত শত লাশ ভাসতে দেখা গেছে। এখনো নদীতে মিলছে লাশ। শুরুতে বিভিন্ন রাজ্যের প্রশাসন এই ঘটনাকে অন্যদিকে নিতে চাইলেও পরে তারাও এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে। উত্তর প্রদেশ সরকার শুরুতে জানিয়েছিল, কুসংস্কারের কারণে অনেক বাসিন্দারা তাদের কারো মৃত্যু হলে নদীতে ভাসিয়ে দেয়। তবে পরে শত শত ভেসে আসা লাশ দেখে ব্যবস্থা নেয় প্রশাসন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার গঙ্গায় নজরদারির জন্য আলাদা ফোর্স নিযুক্ত করেছে। স্থানীয় জেলে ও পুলিশের সহযোগিতায় ভেসে আসা লাশ সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাতে নদীর পানি ও বাতাস দূষিত হতে না পারে।
প্রসঙ্গত,ভারতে গত একদিনে আবারও চার হাজারের বেশি মৃত্যু হয়েছে করোনায়। আক্রান্ত হয়েছেন আড়াই লাখের বেশি মানুষ। করোনায় হতাহতের দিক দিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন দুই কোটি ৬২ লাখ ৮৫ হাজার ৬৯ জন। মৃত্যু হয়েছে দুই লাখ ৯৫ হাজার ৫০৮ জন।
বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন যে, এভাবে চলতে থাকলে ভারত যুক্তরাষ্ট্রকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। এরই মধ্যে দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এমন আরও কিছুদিন থাকলে সমস্যা আরও প্রকট হবে।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।