শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫, ০৪:১২ অপরাহ্ন
শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি:: মৌলভীবাজার শ্রীমঙ্গলে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে দৃষ্টিনন্দন ত্রিপুরা মহারাজার কাচারী বাড়িটি।
এ উপজেলার হবিগঞ্জ রোডে উপজেলা ভূমি অফিসে অবস্থিত শতাব্দীর প্রাচীন নিদর্শন ঐতিহাসিক ত্রিপুরা মহারাজার কাচারী বাড়িটি সংস্কারের অভাবে বর্তমানে জড়াজীর্ণ অবস্থায় পরিণত হয়েছে। পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গলের অনেক পুরাকীর্তি ও ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানের মধ্যে এটি অন্যতম।
ইতিহাস পর্যালোচনায় জানা যায়, ১৮৯৭ সালে তৎকালীন ত্রিপুরা মহারাজা কর্তৃক এতদ্ঞ্চলের প্রজাদের কাছ থেকে খাজনা আদায়ের জন্য শহরের মধ্যভাগে প্রায় প্রায় ১.৬৭ একর জায়গার ওপরে বাড়িটি নির্মাণ করা হয়। অষ্টাদশ শতাব্দী হতে পর্যায়ক্রমে ত্রিপুরার মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র মাণিক্য দেববর্মন বাহাদুর, এবং আধুনিক ত্রিপুরার স্থাপতি মহারাজা বীর চন্দ্র মাণিক্য দেববর্মন বাহাদুর ও তার পুত্র মহারাজা রাধাকিশোর মানিক্য দেববর্মন বাহাদুর ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এতদঞ্চলে তাদের রাজত্বকালে এখান থেকেই তাদের প্রশাসনিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতেন। বর্তমানে এই কাছারি বাড়িটি স্থানীয় ভূমি অফিসের সীমানার অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
কাচারি বাড়িটি শতাধিক বছরের পুরনো একতলা কাচারি বাড়িটি প্রস্থে ৩০ ফুট ও দৈর্ঘ্যে ২০ ফুট লম্বা। এতে রয়েছে ৩টি কক্ষ, ৮টি দরজা ও ৯টি জানালা। যার প্রতিটি দেয়াল ১২ ইঞ্চি চওড়া ও প্রাচীন চুন-সুরকি দ্বারা নির্মিত। কারুকাজ ও রয়েছে চোখে পড়ার মতো, কিন্তু বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণ এবং সংস্কারের অভাবে কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে এই ঐতিহাসিক কাচারী বাড়ি। ইতিমধ্যে এসব পুরাকীর্তির কোনটি আংশিক এবং কোনটি পুরোপুরি ধ্বংসের মুখে এসে দাড়িয়েছে। দেওয়াল গুলোতে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল, বিল্ডিংগের ছাদে দেখা দিয়েছে ফাটল, পুরো স্থাপনা জুড়ে শেওলা জমাট বেঁধেছে।
স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে বাড়িটি অযত্ন অবহেলায় ও সংস্কারের অভাবে ধ্বংসের সম্মুখীন। এটি দেখার যেন কেহ নাই। এই ভবনটি সংস্কার করা হলে ঐতিহ্যের দর্শন হয়ে নতুন প্রজন্মের নিকট ইতিহাসে শিক্ষণীয় বিষয় হওয়ার পাশাপাশি দর্শনীয় কেন্দ্র ও হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
স্থানীয়দের দাবী এটিকে দ্রুত সংস্কার করে ত্রিপুরা মহারাজার কাচারী বাড়িটির ঐতিহ্য ধরে রাখতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হউক।