বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ০৫:০৬ পূর্বাহ্ন
বিশেষ প্রতিবেদক: মৌলভীবাজারে গত কয়েক দিনের টানা বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে মৌলভীবাজার জেলার সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। মনু ও কুশিয়ারা এবং ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি অভ্যাহত রয়েছে। গতকাল সন্ধা পর থেকে মনু নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় পুরো জেলায় ৬৭ ইউনিয়নের মধ্যে ৫০ইউনিয়নের ৫’শত গ্রামের ৩ লক্ষ মানুষ পানিবন্ধি হয়ে জীবন যাপন করছেন। কুলাউড়া-বড়লেখা আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বন্যা কবলিত মানুষ বাড়ি-ঘড় ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র খুঁজছেন। পানি প্রবেশ করায় ইতোমধ্যে কুলাউড়া ও জুড়ী উপজেলায় কার্যক্রম অনেকটাই বন্ধ রয়েছে।
হাকালুকি হাওরের তীরবর্তী ভূকশিমইল ইউনিয়নের সাদীপুর, মীরশংক, গৌরিশংকর, কালেশারসহ বিভিন্ন এলাকার একাধিক বাসিন্দারা জানান- ২০ জুন সকাল থেকে পানি বাড়ার কারণে তারা অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছেন। পানি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়াতে সদ্য পাওয়া বোরো ধান, গৃহপালিত গবাদি পশু, শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে আর বসত বাড়িতে থাকা যাচ্ছেনা। তাই তারা আত্মীয় স্বজনের বাসাবাড়ি বা আশ্রয় কেন্দ্রেয়গুলোতে ছুটছেন। অনেক স্থানে প্রধান সড়কে গরু ছাগলসহ গবাদি পশু রেখেছেন। বসত বাড়ি ও বসবাসের ঘরে কোমর পানি থাকায় রান্নাবান্না করতে না পারায় ও পর্যাপ্ত খাবার সংগ্রহে থাকায় চরম খাবার সংকটে ভোগছেন।
জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায় বন্যার কারণে এপর্যন্ত জেলার ৭টি উপজেলার ১১৬ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। মাধ্যমিক,উচ্চমাধ্যমিক ও মাদ্রাসা বন্ধ রয়েছে ৪৫টি। সবমিলিয়ে ১৬১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
এদিকে আশ্রয় কেন্দ্রে থাকা অধিকাংশ মানুষের অভিযোগ তারা এখনো কোন ত্রান সামগ্রী পাননি। তারা সরকার ও বৃত্তবানদের কাছে দ্রুত সহযোগীতার জন্য আহবান জানান। আশ্রয় কেন্দ্রে থাকার আরো কয়েকজন জানান, সরকারী ত্রান সামগ্রী অপ্রুতুল। সেগুলো বরাদ্ধ বাড়ানোরও দাবী জানান তারা।
মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, বন্যা কবলিত এলাকায় ৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ পর্যন্ত আশ্রয় কেন্দ্রে ১৫হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। ২১০মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়া বন্যাকবলিত এলাকা ২হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। শুকনো খাবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ বিতরণ করছেন। বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক খোঁজ খবর নিতে ও সহযোগিতা দিতে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।