রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ০২:০৯ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট :: উদ্বোধনের পরদিন অর্থাৎ আগামীকাল রোববার (২৬ জুন) থেকেই পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলবে, সেজন্য সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
আগামীকাল রোববার সকাল ৬টা থেকেই সব ধরনের যানবাহন সেতুতে উঠতে পারবে বলে জানিয়েছেন পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম।
শনিবার সেতু উদ্বোধনের পর বিকালে তিনি বলেন, আজ সেখানে কোনো যানবাহন চলাচল করবে না। রোববার সকাল ৬টা থেকে যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, শুরুর দিন যানবাহন ব্যাপক চাপ হবে বলে আমরা ধারণা করছি। আমাদের টোলপ্লাজার কর্মীদেরও সেভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি, তারা ভিড় সামলাতে পারবে। এছাড়া সেতু রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার জন্যও সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া আছে।
৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হল। এই ২১টি জেলার মাওয়া রুট ব্যবহারকারী বাসসহ যানবাহনগুলো এতদিন ফেরিতে পারাপার হত। এখন সেতুতে চলবে।
পদ্মা সেতু নিয়ে মানুষের ব্যাপক আগ্রহ থাকায় রোববার ভিড় হবে বলে ধরে নিচ্ছে সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু উদ্বোধন করে টোল দিয়ে প্রথম পদ্মা সেতু পার হন।
সেতুতে টোলের হার ইতোমধ্যে নির্ধারিত হয়েছে।
ছোট বাসে ১৪০০ টাকা, মাঝারি বাসে ২০০০ টাকা এবং বড় বাসে ২৪০০ টাকা টোল দিতে হবে। ছোট ট্রাকের টোল ১৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকে ২১০০-২৮০০ টাকা, বড় ট্রাকে ৫৫০০ টাকা। পিকআপের টোল ১২০০ টাকা।
কার ও জিপের টোল ধরা হয়েছে ৭৫০ টাকা, মাইক্রোবাসে ১৩০০ টাকা। মোটরসাইকেল নিয়ে পদ্মা সেতু পার হতে চাইলে টোল দিতে হবে ১০০ টাকা।
পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াতকারী বেশিরভাগ পরিবহনের বাস ছেড়ে যাবে ঢাকার সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে।
বৃহত্তর দক্ষিণবঙ্গ কোচ ও বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, সায়েদাবাদ থেকে আগে যেসব বাস ছেড়ে যেত, রোববারও সেগুলো ছেড়ে যাবে। আমাদের এদিক থেকে চলাচলকারী বাসগুলো বন্ধ ছিল অনেকদিন। সেই সব বাসই যাবে। এছাড়া হানিফ, গ্রিনলাইনসহ কয়েকটি পরিবহনের বাসও যাওয়ার কথা রয়েছে।
গ্রিনলাইন পরিবহনের মহাব্যবস্থাপক মো. আবদুস সাত্তার জানান, পদ্মা সেতু হয়ে সাতক্ষীরা, বেনাপোল, খুলনা, যশোর, বরিশাল ও কুয়াকাটায় যাবে তাদের বাস। আমাদের সব গাড়িই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। রুট পারমিট নেওয়া ছিল, কাল সকাল থেকেই আমরা এই রুটে বাস চালাব।
গত ২৪ মে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের তারিখ অনুমোদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারই দৃঢ় মনোবলের কারণে শেষ পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী মূল সেতুর পাইলিং ও নদীশাসনের কাজ উদ্বোধন করেন। এরপর একে একে সব ধাপ পেরিয়ে পদ্মার বুকে গড়ে ওঠে স্বপ্নের সেতু।
সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্থাপনা পদ্মা সেতু। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার। দ্বিতল এ সেতুর এক অংশ পদ্মা নদীর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত এবং অপর অংশ নদীর আকে পাড় শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যুক্ত।
একইসঙ্গে ট্রেন ও গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা রয়েছে এ সেতুতে। চার লেন বিশিষ্ট ৭২ ফুট প্রস্থের এ সেতুর নিচতলায় রয়েছে রেল লাইন। এর মাধ্যমে দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা।