1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৮ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

কুলাউড়ায় স্বপ্নের বাড়িতে উঠলেন আরো ১০০ পরিবার : ঘরের নিচে শুয়ে মরবো স্বপ্নেও ভাবিনি

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২০ জুন, ২০২১
  • ৪১১ বার পঠিত

মাহফুজ শাকিল, কুলাউড়া : ঘরের নিচে শুয়ে মরবো এটা কখনো স্বপ্নেও ভাবিনি। অবশেষে একটি মাথা গোজার ঠাঁই হলো। বাকি জীবনটা স্বামী-স্ত্রী মিলে সুখে-দুঃখে কাটিয়ে দিতে পারবো বলে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলেন বাবুল মালাকার (৬০)। কান্না থামার পর তিনি জানালেন, স্ত্রী শেফালী রানী মালাকারকে নিয়ে রেলের জায়গায় ঘর বানিয়ে ঝড় বৃষ্টির সাথে লড়াই করেই অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করেছিলাম। এবার না হয় মরতে পারবো নিশ্চিন্তে। যিনি এই ঘরটি দান করেছেন, সেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাছে থেকে একটিবার দেখার বড় শখ। ঘরে প্রবেশ করেই ইশ^রের কাছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করে প্রার্থনা করবেন বলে জানান।
কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের মাইজগাঁও গ্রামের বাসিন্দা বাবুল মালাকার। অভাবের তাড়নায় ভিটেমাটি হারিয়ে রেলে পতিত জমিতে দীর্ঘদিন থেকে বসবাস করছিলেন। বাবুল মালাকার উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে এসেছিলেন স্ত্রী শেফালী রানী মালাকারকে সাথে নিয়ে। জায়গাসহ একটি পুর্নাঙ্গ ঘর পেয়ে যেন তার আনন্দ অশ্রু থামছিলো না। নি:সন্তান এই দম্পতির এখন মাথা গুজার ঠাঁই হয়েছে। বাবুল মালাকারের মত কুলাউড়া উপজেলায় ২য় পর্যায়ে আরো ১০০ জন ভূমিহীন পরিবার পেলেন জমিসহ ঘর। রোববার দেশব্যাপী মুজিববর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান ২য় পর্যায়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রীর ভার্চুয়াল উদ্বোধন অনুষ্ঠান শেষে উপজেলা পরিষদ হলরুমে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত জমির দলিল হস্তান্তর উপলক্ষে আলোচনা সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলীর পরিচালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মেহেদী হাসান, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুশীল চন্দ্র দে, আওয়ামীলীগ নেতা নবাব আলী ওয়াজেদ খান বাবু, কর্মধা ইউপি চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক, ভাটেরা ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ একেএম নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক মাহফুজ শাকিল প্রমুখ।
অনুষ্ঠান শেষে উপজেলার ১০০ ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে প্রথমদিনে ৫০ পরিবারের হাতে জমির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়। এসময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপকারভোগীদের ফুলেল শুভেচ্ছা ও মিষ্টিমুখ করানো হয়। এছাড়া উপকারভোগীদের প্রত্যেক পরিবারের জন্য ১০টি করে ফলজ, বনজ ও ওষুধি গাছের চারা বিতরণ করা হয়। ঘরের কাগজাদি হাতে পেয়ে অন্য উপকারভোগীরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ঘরটি পেয়ে আমরা অনেক খুশি হয়েছি। এতোদিন আমরা অন্যের বাড়িতে আশ্রিত ছিলাম, এখন আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে নিজের বাড়িতে উঠলাম। আমরা মন থেকে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করছি, মহান আল্লাহ পাক যেন উনাকে সবসময় সুস্থ রাখেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়া উপজেলায় আশ্রয়ন প্রকল্প-২ এর আওতায় দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০০টি পাকা ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি ঘরের খরচ ধরা হয়েছে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। ঘরগুলো নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক তালিকাভুক্ত ৪৪০ ভূমিহীন পরিবার রয়েছে। তার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ১১০ ভূমিহীন পরিবার পেয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর এই উপহার। দ্বিতীয় পর্যায়ে উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নে ৩৩টি, জয়চন্ডীতে ১১টি, রাউৎগাঁওয়ে ৪টি, টিলাগাঁওয়ে ১১টি, পৃথিমপাশায় ১০টি, কর্মধা ১০টি, শরীফপুরে ১৬টি, হাজিপুরে ৪টি, বরমচালে ১টি ভূমিহীন পরিবার পাচ্ছে এই ঘর। প্রতি পাঁচটি ঘরের জন্য দেয়া হবে একটি করে ডিব টিউবওয়েল এবং বিদ্যুতায়নও করা হবে ঘরগুলো। উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার জমি ও ঘর প্রাপ্তদের জন্য ধর্মীয় উপাসনালয় তৈরি করে দেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহার হিসেবে সারাদেশের ন্যায় কুলাউড়ায়ও ১০০ ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য ঘরনির্মাণ করা হয়েছে। এর আগে প্রথম পর্যায়ে আরো ১১০ ভূমিহীন পরিবারকে ঘরনির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির মাধ্যমে উপকারভোগীদের নির্বাচন করা হয়। প্রথম দিনে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে ৫০ জন উপকারভোগীদের হাতে কবুলিয়ত, নামজারি খতিয়ান, গৃহ হস্তান্তরের সনদপত্রসহ ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..