শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৭:২১ পূর্বাহ্ন
। মুজিবুর রহমান মুজিব।
ছয়ই জানুয়ারী এক চল্লিশ সাল বৃহত্তর নোয়াখালির এক শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত অভিজাত ও খান্দানী পরিবারে মানব শিশু সিরাজুল আলম খান এর জন্ম। তাঁর উ”চ শিক্ষিত আদর্শ মানুষ শিক্ষা বিভাগীয় উর্ধ্বতন কর্ম্মকর্তা পিতার নাম খুর্শেদ আলম খান। বাল্যকাল থেকেই বালক সিরাজ অসম্ভব রকমের মেধাবী ও চিন্তাশীল যুবক ছিলেন। বাল্যকাল থেকেই তিনি পাঠপুস্তকের সঙ্গেঁ সঙ্গেঁ ইতিহাস ঐতিহ্যকৃষ্টি সংস্কৃতি বিজ্ঞান-ভূগোল সংক্রান্ত পুস্তক পাঠে উৎসাহী ছিলেন। ছাত্র হিসাবে অসম্ভব রকমের মেধাবী সিরাজুল আলম খান মেট্রিক থেকে মাষ্টার্স পর্যন্ত প্রতিভার ছাপ রাখেন। পিতা এবং পরিবার বর্গ উ”চ শিক্ষিত সরকারি চাকরি সহ কর্ম্ম জীবনে সু-প্রতিষ্টিত হলেও সিরাজুল আলম খান ডিগ্রী নিয়ে সরকারি চাকরি নিয়ে অর্থ কামাইর কোন ই”ছাই ছিল না ছাত্র জীবন থেকেই তিনি ছিলেন একজন রাজনৈতিক চিন্তাবিদ। বাঙ্গালি জাতীয়তা বাদী আন্দোলনের সমর্থক এবং বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তার আদর্শিক নেতা। পাকিস্তানী প্রতিক্রিয়াশীল সামরীক স্বৈর শাসনামলে এভডো, প্রডো, ডি,পি,আর, সহ বিভিন্ন নিবর্তন মূলক আইনের কারনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে রাজনৈতিক দল সমূহ সু-সংঘটিত ছিল না। বাঙ্গালি জাতীয়তা বাদী আন্দোলনের মহান নেতা বঙ্গঁশার্দুল শেখ মুজিবুর রহমান জেল ঝুলুম নির্যাতন উপেক্ষা করে বাঙ্গাঁলি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে বেগবান করতঃ বাঙ্গাঁলির মুক্তি সনদ ঐতিহাসিক ছয়দফা কর্ম্ম সূচী ঘোষনা করলে তৎকালীন পাকিস্তানের রাজনীতি টালমাটাল হয়ে উঠে। সেই সময় ছাত্র লীগ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র শক্তি ইত্যাদি ছাত্র সংঘটন কে সামরীক সরকার বিরোধী ছাত্র আন্দোলন পরিচালনা করতে হত। বিশেষতঃ ছাত্র লীগকেই ছয়দফা কর্ম্ম সূচীর প্রচার এবং প্রাদেশিক স্বায়ত শাসনের আন্দোলনকে পরিচালনা করতে হত পঞ্চাশ ষাটের দশকে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, কে,এম, ওবায়দুর রহমান, শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান, তোফায়েল আহমদ, আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ তারকা ছাত্র রাজনীতিবিদ গন ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে সভাপতি সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন। আয়ুবী স্বৈর শাসনামলের কঠিন সময় ১৯৬৩-৬৫ সালে মেধাবী ও কষ্ট সাহিষ্ণু ছাত্র নেতা সিরাজুল আলম খান ছাত্রলীগ এর কেন্দ্রীয় সম্পাদকের শুরু দায়িত্ব- দুই বছর মেয়াদে পালন করেন। রাজনৈতিক চিন্তাবিদ ও তাত্বিক সিরাজুল আলম খান ১৯৬৩ সালে স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্টার লক্ষে গোপন সংঘটন “নিউক্লিয়াস” গঠন করেন। ঐ ব্যাপারে তাঁর ঘনিষ্ট ও বিশ্ব¯’ দুই সহযোগি ছিলেন ছাত্রলীগ এর কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাক এবং কাজি আরিফ আহমদ। ছাত্রলীগ এর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে দায়িত্ব পালন শেষে আজীবন আপাদ মস্তক সার্বক্ষনিক রাজনীতিবিদ সিরাজুল আলম খান অতঃপর আর কোন রাজনৈতিক দলের সদস্যপদ গ্রহন করেন নি। তিনি পদ লোভী ছিলেন না, পদের চাইতে তিনি কাজের প্রতি উৎসাহী ছিলেন। স্বাধীনতা পূর্ব কালে আওয়ামী লীগের কোনঅঙ্গ কিংবা সহযোগি সংঘটন ছিল না, বিশেষত, শ্রমিক রাজনীতি বাম ভাবাদর্শের অনুসারীদের নিয়ন্ত্রনে ছিল। তেঁজগাঁও, টঙ্গীঁ এলাকার কল কারখানা সমূহে বামপহ্ণীদের এক”ছত্র প্রাধান্য ছিল। চিন্তাবিদ সিরাজুল আলম খান শ্রমিক লীগ গঠন করে কল কারখানা ও শ্রমিক পর্যায়ে ছয়দফা কর্ম্মসূচী ছাড়িয়ে দিলে শ্রমিক মজুর মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করে। আগড়তলা ষঢ়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার উনসত্তোরের ছাত্রগন অভ্যোত্থান এবং একাত্তোরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বলিষ্ট সংঘটক হিসাবে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেন শক্তিমান সংঘটক তাত্বিক সিরাজুল আলম খান। ষাটের দশক থেকে তাত্বিক সংঘটক সিরাজুল আলম খান এর সঙ্গেঁআমার পরিচয় সম্পর্ক ও সখ্যতা। তাঁর আমৃত্যো সেসম্পর্ক ও সখ্যতা বহাল ছিল। সেকাল থেকে একাল পর্যন্ত তিনি আমাকে অসম্ভব ¯েœহ করতেন। ভালোবাসতেন। বিশ্বাস করতেন। স্বল্পভাসি, দৃশ্যত কঠিন ও কঠোর প্রকৃতির মানুষ সিরাজুল আলম খান ছিলেন সহজ সরল বিনয়ী বন্ধু বৎসল সাদামনের বিনয়ী মানুষ। সৎ ও মহত মানুষ। তাঁর বিশাল চুল দাড়ি গোঁফ এর আড়ালে একটি মিষ্টি মধুর মন মানষিকতা ছিল, যা দেখাযেত না, হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে হত। শিশু কিশোর দেরকে তিনি অসম্ভব ভালো বাসতেন চকলেট পুস্তক উপহার দিতেন। তার সদাচরন সৌজন্য বোধ ও মায়া মমতার কারনে দেশীয় রাজনৈতিক অঙ্গঁনে তিনি দাদা হিসাবে অভিহিত পরিচিত ছিলেন। অনাঢ়ম্বর জীবন, স্বল্প আহার পাজামা-পাঞ্জাবি সাধারন পোষাকের এক অসাধররন মানুষ ছিলেন সিরাজুল আলম খাঁন। ৬২ সালে মেট্রিক কেনডিডেট ছিলাম। আমরাই ছিলাম মেট্রিকের শেষ ব্যাচ। এর পর থেকে শুরু হয় এস,এস,সি সিষ্টেম। ষাটের দশকের শুরুতে ছাত্রলীগের একজন কর্মি হিসাবে আমার ছাত্র রাজনীতিতে প্রবেশ। হামদুর রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট বাতিলের দাবীতে “ছাত্র হত্যার বিচার চাই” শ্লোগানের আওয়াজ শুনে সেই যে মিছিলে যোগ দিয়েছিলাম শ্লোগান দিয়েছিলাম বেলা শেষে এই পড়ন্ত বেলায় এখন মিছিলে যাবার শারীকি সক্ষমতা না থাকলেও মিটিং মিছিল শ্লোগানের মায়া এখন ও যায় নি। ঐ দশকে একজন সংঘটক হিসাবে আমি প্রথমে আমাদের কলেজ শাখা ছাত্রলীগ অতঃপর মহকুমা শাখার সভাপতি নির্ব্বাচিত হয়ে ছিলাম। তখন নিয়মিত ছাত্র লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হত। যেতাম। তৎকালীন ইকবাল হল ছিল ছাত্র রাজনীতির প্রানকেন্দ্র। এখানেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খান, আশম রব, শাহ জাহান সিরাজ প্রমুখকে পাওয়া যেত। আমাদের অগ্রজ প্রতিম বৃটেনের সাবেক হাই কমিশনার গিয়াস উদ্দিন মনির ভাই এই হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন। ছাত্র রাজনীতিতে আমার প্রেরনার উৎস ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা অসম্ভব রকমের কষ্টসহিষ্ণু সিরাজুল আলম খাঁন এবং শাক্তিমান সংঘটক অনলবর্ষী বক্তা আশম রব। আটষট্টি সালে হায়ার সেকেন্ড ক্লাশ নিয়ে বি,এ,পাশ করলে পিতা-মাতার ই”ছামত উ”চ শিক্ষার জন্য ঢাকা বিশ্ব-বিদ্যালয়ে ভর্ত্তি হয়ে ¯’ায়ী ভাবে ঢাকা বাসি হলে দাদা সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে যাবার নেতৃত্বে কাজ করার সুযোগ পাই। আমার দীর্ঘ দেহ, উ”চ কন্ঠে শ্লোগান গরম গরম ভাষন ও দুঃসাহসের কারনে সিরাজ ভাই আমাকে খুব ¯েœহ করতেন। তাঁর নিউক্লিয়াসে এই জাতীয় কর্মির প্রয়োজন ছিল। সত্তোর সালের সাধারন নির্ব্বাচনে আমাদের ঐতিহাসিক বিজয় এবং একাত্তোরের অগ্নিঝরা দিন গুলিতে জাতির নির্ব্বাচিত নেতা বঙ্গঁবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহŸানে দেশ ব্যাপী অহিংস অসহযোগ আন্দোলনে সংগ্রামে ঢাকায় অব¯’ান কালে দাদার নির্দেশ মত সন্ধ্যা বেলা “সান্ধ্য আইন” বিরোধী মিছিলে যোগ দিয়েছি, আওয়াজ তুলেছি, বঙ্গঁবন্ধুর ঘোষনা সান্ধ্য আইন মানি না, বীর বাঙ্গাঁলি অস্ত্রধর বাংলাদেশ স্বাধীন কর- ইত্যাদি। দিনের শেষে পাকসামরীক সরকার ঢাকা শহরে সান্ধ্যজারী করে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করতেন। পরিশ্রমী সংঘটক সিরাজুল আলম খানের ব্যব¯’াপনা ও নির্দেশনায় আমরা মহসিন হল, জিন্না হল, ইকবাল হল থেকে বেরিয়ে এসে নিউ মার্কেট নীল ক্ষেত এলাকার শ্রমিক জনতাকে নিয়ে সান্ধ্য আইনভঙ্গঁ করতাম। সান্ধ্য আইন বিরোধী মিছিল করতাম। এক সন্ধ্যায় মিছিলে টি,এস,সি, এলাকায় পাক আর্মি গুলি বর্ষন করলে একজন ভাষানী পহ্ণীছাত্র ইউনিয়নের নেতা বর্তমান কালের সোনালি ব্যাংক এর অবসর প্রাপ্ত ব্যব¯’াপক আমার আত্মীয় আব্দুল মজিদ খসরু সহ ফাঁড়ি পথে দোড়াতে দোড়াতে আমাদের হল হাজি মহসিন হলে ফিরে আসি। বীর দর্পে হলে ফিরে এসে ছাত্র ইউনিয়ন নেতা আব্দুল মজিদ খসরু স¯েœহে আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউ মাউ করে কেঁদে উঠেন। আমার সম্পর্কে চাচা বিধায় তিনি সব সময় আমার জন্য চিন্তায় থাকতেন এখনও তাঁর সঙ্গেঁ আমার দেখা হলে জড়িয়ে ধরে সে সময় কার কান্না কাটির জন্য শরমিন্দা হন। স্বাধীন বাংলা প্রতিষ্টার গোপন সংঘটন নিউক্লিয়াসের জনক স্বাধীনতা সংগ্রামী সিরাজুল আলম খান এর ছাত্র ও রাজনৈতিক জীবনের গৌরবময় অধ্যায় আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে গৌরবোজ্জল ভূমিকা ও মুজিব বাহিনীর আঞ্চলিক অধিনায়ক এর দায়িত্ব পালন। তাঁর রাজনীতি ও রাজনৈতিক দর্শন শুধুমাত্র ক্ষমতা সীন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গেঁ দ্বিমত পোষন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এ বিভক্তি বিভাজন গ্রæপিং কোন্দল না করে তাঁর প্রেরনায় গঠিত হয় দেশের প্রথম বিরোধী দল জাতীয় সমাজ তান্ত্রীক দল জাসদ। নব গঠিত দলের তিনি কোন কর্মকর্তা ছিলেন না, ছিলেন প্রেরনাও দিক নির্দেশনার উৎস। স্বাধীন বাংলাদেশে কোন রাজনৈতিক দলের কর্মকর্তা সদস্য হন নি একজন চিন্তাবিদ দার্শনিক তাত্বিক হিসাব গবেষনা কর্ম্ম চালিয়ে যেতে থাকেন। সিরাজুল আলম খাঁন ও ড. জিল্লুর রহমান খান প্রনীত- ঈড়ংঃরঃরড়হ ধহফ ঈড়হংঃরঃঁঃরড়হধষ ওংংঁবং ঈড়সঢ়ধৎধঃরাব ঝঃঁফরবং অহধষরংরং অহফ চৎড়ংঢ়বপঃ পৃস্তক একটি ব্যতিক্রমী প্রয়াস ও ঐতিহাসিব সংযোজন। দেশে প্রচলিত আইন ও বিধি প্রসঙ্গেঁ সিরাজুল আলম খান পরিস্কার ভাবে বলেন যে, আইন ও বিধি দ্বারা বিদেশী শাসকেরা শাসন করে, সে আইন ও বিধিকে বদলিয়ে নিজেদের উপযোগী শাসন ব্যব¯’া প্রতিষ্টা করাই হল স্বাধীনতার মূল কথা। বিদেশী শাসক বদলিয়ে দেশীয় শাসক দের ক্ষমতায় বসিয়ে ঔপনিবৈশিক আমলের রাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং শাসন ব্যব¯’া দিয়ে দেশ পরিচালনা করা জনগনের জন্য এক ধরনের পরাধীনতা, যাকে রাষ্ট্র বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় “অভ্যন্তরীন উপনিবেষবাদ” ওহঃবৎহধষ ঈড়ষড়হরধষরংস। গনতন্ত্র এবং সামাজিক গনতন্ত্র প্রসঙ্গেঁ জ্ঞান তাপস এই স্বাধীনতা সংগ্রামীর মতে “ব্যক্তি পরিবার এবং সমষ্টি গত পর্য্যায়ে উৎপাদন বন্টনের ক্ষেত্রে শ্রম-কর্ম-পেশার সর্ব¯’রে সমাজ এবং রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত ও কার্য্যক্রম করার প্রশ্নে ব্যক্তির অধিকার ক্ষমতা “কর্তৃত্ব” প্রতিষ্টার জন্য গনতন্ত্রের প্রসারিত করাই হলো সামাজিক গনতন্ত্র। অংক ও বিজ্ঞানের ছাত্র হলেও দার্শিনিক ও তাত্বিক সিরাজুল আলম খাণ দর্শন, শিল্পকলা, পরিবেশ ও সামরিক বিজ্ঞান , রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আন্তর্জাতিক, সম্পর্ক প্রসঙ্গেঁ গঠন-পাঠন-অধ্যয়ন গবেষনা করতঃ পান্ডিত্য অর্জন ও জ্ঞান লাভ করেন। রাষ্ট্র বিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিষয়ক তার পান্ডিত্য ও জ্ঞানার্জনের কারনে তিনি ১৯৯৬-৯৭ সালে মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্রের উইসকন সিন রাজ্যের অসকস বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্র বিজ্ঞানের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ¯’ায়ী ভাবে মার্কিন যুক্ত রাষ্ট্র কিংবা পৃথিবীর যে কোন উন্নত দেশ বসবাস ও বিপুল পরিমান অর্থ কড়ি রোজগারে সুযোগ থাকলেও প্রিয় স্বদেশ ভূমি ছেড়ে কোথাও যেতে রাজি হন নি। তার রাজনৈতিক জীবনের আরেকটি স্মরনীয় অধ্যায় প্রশাসনিক সংস্কার মূলক ঐতিহাসিক “চৌদ্দ দফা” কম্মসূচী প্রনয়ন। চৌদ্দ দফার নয় দফায় জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল এন,এস,সি, রাষ্ট্র বিজ্ঞানীদের চিন্তা চেতনার নতুন দিগন্ত উম্মোচিত হয়। চৌদ্দ দফা কর্ম সূচীর পাঠক প্রিয়তা ও গনদাবীর প্রেক্ষিতে মুজিবুর রহমান মুজিবকে আহŸায়ক (লেখক) এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজি আব্দুল লতিফ সাজুকে সদস্য সচিব করতঃ জাতীয় সমন্ধয় কিমিটি গঠিত হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের ডি,আই,পি, লাউঞ্জে প্রেসকন ফারেন্স এর মাধ্যমে আবির্ভূত হয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে সৃষ্টি করে সদস্য সচিব এর আকস্মিক অকাল মৃত্যোতে সং¯’ার সাংগঠনিক কার্য্যক্রম দেশব্যাপী বিস্তার লাভ সম্ভব হয় নি। সাম্প্রতিক কালে দাদা সিরাজুল আলম খান আসি পেরিয়ে বিভিন্ন বার্ধক্য জনিত ব্যধিতে আক্রান্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন। বিগত দিনে আমরা তাঁর কতেক গুনগ্রাহী বীর মুক্তিযোদ্ধা এস,টি, করিম, সাবেক সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান, সাবেক সাংসদ গাজী আব্দুল হাই, সাবেক সাংসদ গোলাম মোস্তফা, কাজি আব্দুল লতিফ, চট্টগ্রামের বেলাল উদ্দিন আশরাফি, সুনামগঞ্জের পৌরপতি মুমিনুল মউজদীন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাতেন চৌধুরী, দাদার রাজনৈতিক সচিব সাংবাদিক এম,এ রহিম ও মুজিবুর রহমান মুজিব এর উদ্যোগে ছয়ই জানুয়ারী দাদার শুভ জন্মদিন উদযাপন করা হত ধানমন্ডির অক্সফোর্ডইন্টার ন্যাশনেল স্কুল এন্ড কলেজ ক্যাম্পাসে। প্রত্যেক জন্ম দিনে আমি দাদাকে একসেট পোষাক খদ্দরের পাঞ্জাবী, পাজামা চাদর উপহার দিতাম। তাঁর প্রিয় খাবার চিড়া, মুড়ি, গ্রীন-টি আমি শ্রীমঙ্গল থেকে নিতাম। দাদা খুব খুশী হতেন। দাদা ছিলেন আত্বপ্রচার বিমুখ। অনেক কর্তাব্যক্তি মিডিয়া দেখলেই বাকবাকুম পায়রার মত ভকর ভকর করেন, আবুল তাবুল বলেন। অতঃপর সমালোচনার ভয়ে অস্বীকার করেন, কিংবা তার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে বলেও বলে থাকেন। অবশ্য এক্ষেত্রে এক মাত্র ব্যতিক্রম মাননীয় কৃষি মন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। দাদা কোন সময়ই কোন মিডিয়ায় উপ¯ি’ত হয়ে লাগাম ছাড়া কথাবার্তা বলেন নি। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দাদার প্রিয় ভাজন সামসুদ্দিন পেয়ারাভাই দীর্ঘদিন তাঁর সঙ্গেঁ লেগে থেকে সাক্ষাত কার নিয়ে জাতিকে উপহার দিয়েছেন অনন্য রাজনৈতিক গ্রহ্ণ “আমিই সিরাজুল আলম খাঁন। একদিন ঢাকা প্রবাসি আমার একান্ত প্রিয় ভাজন সাংবাদিক ও সম্পাদক কবি সৌমিত্র দেব টিটো আমার কাছে বায়না ধরলেন, দাদার সঙ্গেঁ দেখা করবেন, কথা বলবেন, তাকে নিয়ে গেলাম দাদার কাছে, মত বিনিময়ে তিনি খুব খুশী হলেন, কিš‘ সাংবাদিক এবং সাক্ষাত কারের মত কথা শুনে তিনি না খোশ ও নারাজ হন। টিটো দুঃখ প্রকাশ করতঃ সাক্ষাত কার মূলক আলোচনায় বিরত থাকে। গত নয়ই জুন দাদার রাজনৈতিক সচিব বিশিষ্ট সাংবাদিক এম,এ, রহিম মোবাইল ফোনে কান্না জড়িত কন্ঠে জানালেন হ্রদরুগে আক্রান্ত হয়ে আমাদের শ্রদ্ধেয় দাদা আমার রাজনীতি ও মুক্তিযুদ্ধের শিক্ষাগুরু সিরাজুল আলম খান মারা গেছেন। কৃতজ্ঞ জাতি তাকে শেষ সম্মান দিয়েছেন, তার শেষ ই”ছানুযায়ী তার মায়ের কবরের পাশে চীর শয়ানে শায়িত করা হয়। দাদার যোগ্য শিষ্য স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলক সেকাল থেকে একাল পর্য্যন্ত নির্ভীক রাজনীতিবিদ জে,এস,ডি প্রধান আশম রব এর উদ্যোগ ও নেতৃত্বে শোকসভার মাধ্যমে একটি জাতীয় ভাবে শেষ সম্মান ও শ্রদ্ধা জানান। তার ইন্তিকালের পর জাতীয় কলামিষ্ট সাংবাদিক গন তাঁর সম্মান ও স্মরনে তাঁর উপর স্মৃতি কথা লিখেছেন। জাতীয় লেখকদের মূল্যবান রচনীর অবমূল্যায়ন অন্যায় না হলেও অসৌজন্য মূলক। ইসলামী আইনের বিধান মোতাবেক একজন মুমিনের মুত্যোর পর তার রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়, দোয়া, দুরুদ মিলাদ পড়ানো হয় “আলমে বরযকি” জীবনের সুখ শান্তি কামনা করা হয়। তাকে কোন লেখায় “কাপালিক” এবং প্রায় সকলেই “রাজনীতির রহস্য পূরুষ বলেছেন” যা সত্য নয়। সিরাজুল আলম খান কোন দিনই রাজনীতির রহস্য পুরুষ ছিলেন না, ছিলেন পরি”ছন্ন পুরুষ, তাঁর কথা তিনি সব সময় পরিস্কার ভাবে বলে গেছেন। তাঁর গোটা মানব জীবনই ছিল দেশজাতি ও রাজনীতির জন্য উৎসর্গী কৃত। তিনি ছিলেন সৎ, মহৎ, বন্ধু ও কর্মি বৎসল। তাঁর ঘর সংসার স্ত্রীপুত্র পরিবার ছিলেন তাঁর গুনগ্রাহী রাজনৈতিক সহকর্মিগন। তিনি ধান্দা ও চান্দাবাজি করেন নি, তিনি ছিলেন গৃহ হীন সর্বহারা। আমরা তাঁর কতেক কর্মি গুনগ্রাহী গন তাঁকে সাহায্য সহযোগীতা করেছি। বানিজ্যায়ন, দৃত্তায়ন-ভ্রষ্টাচার এর বিরুদ্ধে আজীবন তিনি ছিলেন সো”চার। এবার ৬ই জানুয়ারী তার শুভ জন্মদিন উপলক্ষে আমরা আটই জানুয়ারী জেলা বারের তিন নম্বর ভবনে শুভ জন্ম দিন উপলক্ষে এক শুভানুষ্টান ও দোয়া মাহফিল এর আয়োজন করেছি। ৬ই জানুয়ারী দাদা সিরাজুল আলম খান এর শুভ জন্ম দিনে তাঁর উজ্জল স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধাঞ্জল ও তাঁর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। মহান মালিক তাঁর বেহেশত নসীব করুন এই মোনাজাত।
[লেখক: দাদার ¯েœহ ধন্য কর্মি। মুক্তিযোদ্ধা। সিনিয়র এডভোকেট হাই কোর্ট, সাবেক সভাপতি, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব।]