1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস! অতঃপর কী?

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০২৪
  • ৪৯ বার পঠিত
রায়হান আহমেদ তপাদার:
পশ্চিমা বিশ্ব বেমালুম এটা ভুলে যায় যে ইহুদি গণহত্যার দায় ইউরোপের, অথচ ক্ষতিপূরণের জন্য মূল্য গুনতে হচ্ছে আরবদের, বিশেষত ফিলিস্তিনিদের। ১৯৪৭ সালের ২৯ নভেম্বর সদ্য গঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডকে ইহুদি ও আরবদের মধ্যে দুই ভাগ করার প্রস্তাব অনুমোদনের মধ্য দিয়ে কফিনের শেষ পেরেকটি বুঝি পুঁতে দেওয়া হয়। এদিকে জায়নবাদীরা নিজ ভূখণ্ড থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়িয়ে দেওয়ার ছক কেটে ফেলে। প্ল্যান দালেত বা প্ল্যান ডি নামে এই পরিকল্পনার নেতৃত্বে ছিলেন ইসরায়েলের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন গুরিয়ান। পোল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী বেন গুরিয়ান ১৯০৬ সালে অটোমান ফিলিস্তিনে অভিবাসী হয়ে আসেন এবং কট্টর জায়নবাদী হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন। প্ল্যান ডি ছিল হত্যা-ধর্ষণ-লুটতরাজ-সন্ত্রাসের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি আরবদের নিজ ভূমি থেকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার মহাপরিকল্পনা। ১৯৪৮ সালের ১০ মার্চ এই পরিকল্পনা চূড়ান্ত হলে ইসরায়েলি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলো তা বাস্তবায়নে পুরোদমে নেমে যায়। তখন পর্যন্ত ব্রিটিশদের শাসনাধীনে থাকা সত্ত্বেও ব্রিটিশ বাহিনীকে পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়, যাতে নিরস্ত্র ও অপ্রস্তুত আরবেরা সুরক্ষা না পায়। ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ফিলিস্তিনে ব্রিটিশ ম্যানডেট বা শাসন শেষ হলে বেন গুরিয়ান আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন ইসরায়েল রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। আর এই ইসরায়েলকে নিয়েই পশ্চিমাদের যত কৌশল।আকাশ থেকে খাবার ফেলা ও অস্থায়ী বন্দর চালু করে গাজার ভুখা মানুষকে মানবিক সাহায্য পাঠানোর এই সিদ্ধান্ত বুঝিয়ে দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্য কৌশল নিয়ে বাইডেন এখন উদ্বিগ্ন। আকাশ থেকে গাজাবাসীকে লক্ষ্য করে যুক্তরাষ্ট্র একাধারে দুটি জিনিস ফেলছে, যেমন: বোমা ও খাবারের ঝাঁকা। অন্যভাবে বলতে গেলে, একাধারে মৃত্যু ও জীবনদায়ী বস্তুর জোগান দিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ভারসাম্যহীন মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে গোঁজামিল দিয়ে ভারসাম্য খুঁজছেন।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাসের হামলার মধ্য দিয়ে যুদ্ধের শুরু। ইসরায়েল ওই দিনই গাজায় পাল্টা হামলা করে, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। কয়েক মাসের যুদ্ধে গাজায় ৩২ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। তাঁদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু। বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখো ফিলিস্তিনি। অবরুদ্ধ গাজায় দেখা দিয়েছে চরম মানবিক সংকট। গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ আগে থেকেই ছিল। তবে ভেটোর কারণে এর আগে নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব পাস হয়নি। তবে এবারের প্রস্তাবটি নজিরবিহীনভাবে চৌদ্দ-শুন্য ভোটে পাস হয়েছে। প্রস্তাবটিতে ভোট আর ভেটো-কোনোটিই দেননি জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত লিন্ডা টমাস-গ্রিনফিল্ড। প্রস্তাবে গাজায় যুদ্ধবিরতির পাশাপাশি অবিলম্বে ও নিঃশর্তভাবে হামাসের হাতে জিম্মি দশায় থাকা ব্যক্তিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে গাজায় ত্রাণসহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। গাজায় নির্বিচার হত্যাকাণ্ড শুরুর পাঁচ মাস পর অবশেষে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অধিকৃত ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাস হয়েছে। ৭ অক্টোবর ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর বেশ কয়েকবার যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উঠেছিল। যুক্তরাষ্ট্র ওই প্রস্তাবে তিন দফা ভেটো দিয়েছে। সম্ভবত, ইসরায়েলের বর্বরতার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তীব্র প্রতিক্রিয়া, নির্বাচনী বছরে ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাতকঠিন সমর্থনের কারণে সৃষ্ট অভ্যন্তরীণ সমালোচনা ইত্যাদি কারণে ওয়াশিংটন ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে, কিংবা ভেটোও প্রয়োগ করেনি। রাষ্ট্রদূত জাতিসংঘকে বলেছেন, প্রস্তাবের সব বিষয়ে তাঁরা একমত নন। তাঁর এ বক্তব্যে প্রায় ৩২ হাজার বেসরকারি ফিলিস্তিনি নাগরিক হত্যা নিয়ে মার্কিন সরকারের যে নৈতিক অস্পষ্টতা, তা প্রকাশ্যে আসে। তারা হয়তো এখন ভাবছে গণহত্যার প্রতিটি ঘটনায় ঢাল হয়ে দাঁড়ানোর চেয়ে এই অবস্থান শ্রেয়তর।
যদিও গাজার মানুষের যে ভোগান্তি এবং এই ভোগান্তির যে ক্রমবর্ধমান বৃদ্ধি, সেই পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্‌যাপনের কিছু নেই। তারপরও এই সিদ্ধান্তের কিছু প্রভাব আছে। হয়তো অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় নৈমিত্তিক যে হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসে সাময়িক বিরতি আসবে। প্রিয়জনের জন্য শোক করার সুযোগ পাবে গাজাবাসী, ক্ষত প্রশমনের দীর্ঘ ও বেদনাদায়ক প্রক্রিয়াও শুরু হবে। জাতিসংঘ মহাসচিব সম্প্রতি রাফা সীমান্তে যান। তিনি গাজায় ত্রাণসহায়তা পৌঁছানোয় যে প্রতিবন্ধকতা তা অপসারণের আহ্বান জানান। প্রতিবন্ধকতাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো ইসরায়েল। আশা করা হচ্ছে, যুদ্ধবিরতিতে খাদ্য, পানি ও চিকিৎসাসহায়তা গাজার বিপর্যস্ত হাজার হাজার মানুষের কাছে পৌঁছাবে। দুর্ভিক্ষ-যা ইসরায়েলের সৃষ্টি-তা এখন গাজায় হানা দিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গাজা উপত্যকায় শিশুরা মৃত্যুর দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছে। উপরন্তু হাজার হাজার শিশু এই অপবিত্র যুদ্ধে অনাথ হয়েছে। চোখের সামনে গণহত্যা যারা ঘটতে দেখেছে, সেই শিশুদের জন্য বিশেষ চিকিৎসাসেবা ও মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ মুহূর্ত থেকে এ ব্যাপারে কাজ শুরু করতে হবে। গাজার মানুষের কাছে দ্রুত মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর পাশাপাশি প্রতিটি পক্ষের উচিত হবে সহিংসতা স্থায়ীভাবে বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া। মনে রাখতে হবে, এর আগেও নভেম্বরে সপ্তাহব্যাপী যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে ইসরায়েল ও হামাস সম্মত হয়েছিল। কিন্তু দ্রুতই দীর্ঘ মেয়াদে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা ভেঙে যায়।
যুদ্ধবিরতির নতুন এই সিদ্ধান্ত কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি হওয়া প্রয়োজন। যদিও সমাধানের কথা এ মুহূর্তে তোলা অযৌক্তিক। কিন্তু পরিস্থিতি থিতিয়ে এলে হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনিকে হত্যার জন্য ইসরায়েলকে মূল্য চুকাতে হবে। ফিলিস্তিনিদের জীবনের দাম আছে।
গাজার অনাথ শিশু, গোটা একটি প্রজন্ম, বিশ্বের দিকে ন্যায়বিচারের আশায় তাকিয়ে আছে। সবার চোখ এখন ইসরায়েল ও তার পৃষ্ঠপোষক যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নিবদ্ধ।
তেল আবিব কি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্তকে মেনে নেবে, নাকি হিংস্র রাষ্ট্র হিসেবে যে পরিচিতি তারা পেয়েছে, সেই পরিচিতিই অক্ষুণ্ন রাখবে? তারা কি এই আহ্বান উপেক্ষা করে গাজায় নৃশংসতা চালিয়ে যাবে? সামনের দিনগুলো পুরো অঞ্চলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ফিলিস্তিনের গাজায় অবিলম্বে ইসরায়েলি হামলা বন্ধ করতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তিনটি প্রস্তাবে ভোটে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। স্থায়ী সদস্যদেশ হওয়ায় মার্কিন ভেটোতে বাতিল হয়ে যায় গাজায় যুদ্ধবিরতির সেসব প্রস্তাব।গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদে আবারও একটি প্রস্তাব তোলা হয়। সবাইকে অবাক করে দিয়ে প্রস্তাবে ভেটো দেওয়া থেকে বিরত ছিল যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে এবারই প্রথম জাতিসংঘের সর্বোচ্চ পর্ষদ নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান-সংবলিত প্রস্তাব পাস হলো। জো বাইডেন প্রশাসনের ভেটো না দেওয়ার এমন নীতি নজিরবিহীন। বিশ্লেষকদের মতে, এর মধ্য দিয়ে গাজা নিয়ে ইসরায়েলের নেতৃত্বের প্রতি ওয়াশিংটনের ক্রমবর্ধমান হতাশা মনোযোগ কেড়েছে। যদিও ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে থাকা ব্যক্তিরা বলছেন, প্রতীকী কিংবা বাগাড়ম্বরপূর্ণ প্রচেষ্টা থেকে বেরিয়ে এসে ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন প্রশাসনের মৌলিক সমর্থনের বিষয়টি নতুন করে চিন্তাভাবনা করা দরকার। অবশ্য প্রস্তাবটি আইনিভাবে মেনে চলা বাধ্যবাধকতা নয় বলছে ওয়াশিংটন। এর পরও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এই পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকদের অনেকেরই প্রশ্ন, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর কঠোর দমনপীড়ন বন্ধে ইসরায়েলের ওপর বাইডেন প্রশাসন চাপ প্রয়োগ করবে কিনা? এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
বাইডেন প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে ইসরায়েল সরকারের প্রতি গাজা উপত্যকায় বেসামরিক মানুষজনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি গাজায় আরও ত্রাণ বিতরণের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে,তাহলে কি গাজা নিয়ে নীতি বদলে ফেলছে যুক্তরাষ্ট্র? এমন প্রশ্ন অনেকের মনে। স্পষ্ট ভাষায় জবাব দিয়েছেন হোয়াইট হাইসের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মুখপাত্র জন করবি। তিনি বলেন, আমাদের ভেটো না দেওয়া কখনোই, আমি আবারও বলছি, কখনোই আমাদের নীতি পরিবর্তনের প্রতিনিধিত্ব করে না। জন কারবি আরও বলেন, আমাদের অবস্থান সুস্পষ্ট। আমরা জিম্মি মুক্তির চুক্তির অংশ হিসেবে যুদ্ধবিরতির পক্ষে বরাবর নিজেদের সমর্থন জানিয়ে এসেছি। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থানকে ভিন্নভাবে দেখছেন নেতানিয়াহু। বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর দপ্তর জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি পাস হওয়া ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতা মার্কিন প্রশাসনের আগের অবস্থান থেকে স্পষ্টত সরে আসার উদাহরণ। নেতানিয়াহুর মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো না দেওয়ার ঘটনা হামাসের বিরুদ্ধে চলমান ইসরায়েলি যুদ্ধচেষ্টার পাশাপাশি হামাসের হাতে থাকা ১৩০ জনের বেশি জিম্মিকে মুক্ত করার চেষ্টাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে। আর এর প্রতিক্রিয়ায় নেতানিয়াহু তাঁর দেশের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদলের পূর্বনির্ধারিত ওয়াশিংটন সফর বাতিল করেছেন। গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফায় সম্ভাব্য ইসরায়েলি সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করতে দেশটির প্রতিনিধিদলের ওয়াশিংটন সফর করার কথা ছিল। নিরাপত্তা পরিষদের ভোটাভুটির আগেই ইসরায়েল জানিয়ে দিয়েছিল, যদি জো বাইডেন প্রশাসন ভেটো দেওয়া থেকে বিরত থাকে, তাহলে তারা তাদের প্রতিনিধিদলকে ওয়াশিংটনে পাঠাবে না। রাফায় পুরোদমে সামরিক অভিযান শুরু না করতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
মার্কিন প্রশাসন সতর্ক করে বলেছে, রাফায় অভিযান বেসামরিক মানুষদের ব্যাপক প্রাণহানির কারণ হতে পারে। সেই সঙ্গে এ অভিযান পুরো বিশ্ব থেকে ইসরায়েলকে আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলতে পারে। বিশ্বকে মনে রাখতেই হবে, ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে জায়নবাদীরা যে পাপের সূচনা ঘটিয়েছে, তা একাধারে অপরাধ ও দখলদারির মধ্য দিয়ে দশকের পর দশক ধরে বিস্তৃত হয়ে আসছে। এ জন্য ৬৯ বছর ধরে জায়নবাদীরা প্রকৃত ইতিহাসের বিকৃতি শুধু ঘটায়নি, বরং বাছাই করা সত্য ও সযত্নে তৈরি মিথ্যার সুদক্ষ মিশেলে নিজেদের অপকর্মের বৈধতার জন্য বিভ্রান্তিকর ভাষ্য তৈরি করেছে এবং এখনো করে যাচ্ছে।আশার কথা হলো, খোদ ইসরায়েলের ভেতর থেকেই এর প্রতিবাদ ও পাল্টা ভাষ্য উঠে আসছে,প্রকৃত ইতিহাস ও তার নির্মোহ বিশ্লেষণ করছেন ইসরায়েলি ইতিহাসবিদ ও গবেষকেরাই। এই দলে আছেন বেনি মরিস, শলমো স্যান্ড, ইলান পেপে, অভি শ্লিম, ইয়ায়েল লোটান, ইউরি আভনেরিসহ অনেকেই। জায়নবাদীদের তীব্র সমালোচনা ও অশালীন আক্রমণ তাঁদের নিবৃত্ত করতে পারেনি, ইসরায়েল রাষ্ট্রের দমননীতি তাঁদের টলাতে পারেনি। বরং তাঁরা ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা, অধিকার ও মর্যাদার পক্ষে জোরালো অবস্থান নিয়েছেন। বিশ্ব মোড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদদে ও পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন নিয়ে বৈশ্বিক নিয়মনীতি অবজ্ঞা করে লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে উদ্বাস্তু বানিয়ে এবং নিজ ভূমে তাদের অবরুদ্ধ করে ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সংজ্ঞা পূরণ না করেও ইসরায়েল প্রচণ্ড প্রতাপের সঙ্গে টিকে আছে। প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানে চরম উৎকর্ষ ইসরায়েলের বিকশিত হওয়ার প্রক্রিয়া জোরদার করেছে। সামরিক শক্তিতে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ এই দেশটি পারমাণবিক অস্ত্রসহ বিশাল অত্যাধুনিক অস্ত্রভান্ডার গড়ে তুলেছে। তবে এত কিছুর পরও জায়নবাদী রাষ্ট্র ইসরায়েল শান্তিতে নেই। নিঃশর্তে নিজ ভূমে ফিলিস্তিনিদের ফিরতে না দিলে, দখলদারির অবসান ঘটিয়ে ফিলিস্তিনিদের জমি-পানি-সম্পদ ফিরিয়ে না দিলে এবং জাতিগত নিশ্চি‎হ্নকরণের জন্য ক্ষমা না চাইলে আর যা-ই হোক, শান্তি আসবে না।
লেখক: গবেষক ও কলাম লেখক

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..