1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

মনু নদীর উভয় তীরে কোটি কোটি টাকার বালু রাখায় বিপাকে ২শতাধিক কৃষক পরিবার

  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৮৩ বার পঠিত

কুলাউড়া প্রতিনিধি: কুলাউড়া উপজেলার মনু নদীর উভয় তীরে অর্থাৎ হাজীপুর ও টিলাগাঁও ইউনিয়নে বিশাল আকারের কমপক্ষে ১০টি বালুর স্তুপ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন দু’শতাধিক কৃষক পরিবার। আউশ আমন আর সবজি ক্ষেত সবই বিনষ্ট বালুর কারণে।এই বালুর স্তুপকারী ইজারাদার বিক্রির অযুহাতে জোরপূর্বক বালুগুলো লুটের অপচেষ্টা চালায় বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্থানীয় লোকজন পতিত সরকারের আমলে তোলা বালু নিতে বাঁধা দিলে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। যে কোন সময় বড়ধরনের সংঘর্ষেও আশঙ্কাও রয়েছে। এসব বালুর ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ০২ডিসেম্বর সোমবার সরেজমিন তদন্তক্রমে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে চিঠি দিয়েছেন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক।
সরেজমিন মনু নদীর বালুস্তুপ করা এলাকায় গেলে দেখা যায়- বালুস্তুপ নয় যেন একেক স্তুপ একেক পাহাড়। ২০ থেকে ৩০ ফুট উচ্চতার এসব বালুর পাহাড়ের একেকটার আয়তন ৫ থেকে ১০ একর জায়গা জুড়ে। মনু নদীর টিলাগাঁও ইউনিয়ন অংশে সালন ও গন্ডারগড় এলাকায় এবং হাজীপুর ইউনিয়নের মন্দিরা ও হরিচক এলাকায় বৃহদাকার ১০টি বালুর পাহাড় রয়েছে।
জানা যায়, মনু নদীর বালু মহালের সাবেক ইজারাদার দীপক দাস ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা মুল্যে ইজারা নেন। তিনি এসব বালুর ইজারাদার হলেও নেপথ্যে বিগত আওয়ামী লীগের অনেক রাঘববোয়াল এর সাথে জড়িত। ফলে দল ও ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে মানুষের জমিতে বালুগুলো স্তুপ করে রাখেন।
সরেজমিন পরিদর্শণকালে হরিচক, মন্দিরা, সালন ও গন্ডারগড় গ্রামের কৃষক কবির মিয়া, আলীম, আশীষ দাস. সজ্জাদ মিয়া, নেপাল ও খসরু মিয়া অভিযোগ করেন, তার কৃষি নির্ভর। কৃষিতে তাদেও পরিবারে জীবিকা নির্বাহ হয়। এমনকি ধান ও শীতকালীন সবজি বিক্রি করে বছরে হাজার হাজার টাকা আয় করেন। কিন্তু এসব বালুর স্তুপের কারণে এসব এলাকার দুই শতাধিক পরিবারের কৃষক দুটি ফসল ও শীতকালীন সবজি চাষে সম্পুর্ন ক্ষতিগ্রস্থ হন। বিগত বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানির সাথে বালু গিয়ে কৃষি জমি বিনষ্ট হয়। এতে আউশ ও আমন চাষ সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয় এবং শীতকালীন সবজি আবাদ করা সম্ভব হয়নি। কৃষকরা ইজারাদারের কাছ থেকে পুরো বছরের কৃষির ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেন, বালু মহালের সাবেক ইজারাদার দীপক দাস হাজীপুর ইউনিয়নের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে বালু নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন। বালু বিক্রির অযুহাতে একাধিকবার স্তুপকৃত এসব বালু নিতে জোরপূর্বক চেষ্টাও চালিয়েছেন। কিন্তু ক্ষমতার পট পরিবর্তনে এলাকার মানুষ এসব বালু লুটেরাদের বাঁধা হয়ে দাঁড়ান। শেষতক বহিরাগত লোক এনে তাদের ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়েও বালু লুটের চেষ্টা করেন। কিন্তু এলাকাবাসী শক্ত অবস্থানে থাকায় সেটা ব্যর্থ হয়। এনিয়ে যেকোন সময় সংষর্ষের আশঙ্কা বরছেন এলাকাবাসী।
বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন ২০১০ এর ধারা ৭ এর ক ও খ অনুসারে ইজারা গ্রহিতা কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উত্তোলিত বালু বা মাটি কোনক্রমেই সর্বসাধারণের ব্যবহার্য্য রাস্তা বা রাস্তা সংলগ্ন স্থান খেলার মাঠ, পার্ক বা উন্মুক্ত স্থানে স্তুপ আকারে রেখে স্বাভাবিক চলাচলে বিঘœ ও জনদূর্ভোগ সৃষ্টি করতে পারবে না। এছাড়া ইজারা গ্রহিতা কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উত্তোলিত বালু বা মাটি সংশ্লিষ্ট মালিক বা আইনানুগ ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির অনুমতি ব্যতীত স্থানীয় জনগনের জমিতে বা সরকারের জায়গায় বা অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের মাঠে, আঙ্গিনায় স্তুপ আকারে রাখতে পারবে না। বালুর ব্যাপারে অভিজ্ঞ লোকজন জানান, স্তুপকৃত বালুর বাজারমূল্য ১০ কোটি টাকারও বেশি হবে। যদি বালুগুলো নিলামে বিক্রি করা হয়, তাহলে সরকার কোটি টাকা রাজস্ব পাবে।
এদিকে জমাটবদ্ধ এসব বালু বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের কাছে বর্তমান ইজারাদার খালেদ আহমদ একটি লিখিত অভিযোগ করেন। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ১৪৩০ বাংলার ইজারাদার বালু স্তুপ করে রাখায় তিনি ইজারাকৃত স্থান থেকে বালু উত্তোলন ও পরিবহন করতে পারছেন না। এতে তিনি আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তাছাড়া সাবেক ইজারাদার বালু বিক্রয় ও বিপননের পায়তারায় লিপ্ত।
এব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিউদ্দিন জানান, জেলা প্রশাসক মহোদয় এব্যাপারে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছেন। তদন্ত করে প্রতিবেদন পাঠাবো। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা তিনি গ্রহন করবেন।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..