শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:১২ অপরাহ্ন
শুক্রবার বিকালে ওই নববধূকে (আঁখি) নিয়ে ভুরুঙ্গামারীতে শ্বশুর বাড়িতে যাওয়ার মুহূর্তে উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের খামার আন্ধারীঝাড় এলাকার আয়নাল হকের মেয়ে আইরিন আইমিন নিজেকে ছানোয়ারের স্ত্রী দাবি করে তার বাড়িতে আসেন। এ সময় ছানোয়ারের পরিবার এবং আঁখির আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে আইরিনের বাকবিতণ্ডা হয়। এদিকে ছানোয়ারকে নিয়ে দুই বধূর টানাহেঁচড়া শুরু হয়। আঁখির আত্মীয়-স্বজন ছানোয়ারকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যেতে চায় এবং অন্যজন টেনে নামাতে চায়। এক পর্যায়ে বিষয়টি হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়। এই অবস্থায় এলাকাবাসী উভয়কে শান্ত করে বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সুরাহার উদ্যোগ নেন। এ সময় আঁখির পক্ষে ভুরুঙ্গামারী ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ১০/১২ জন নেতাকর্মী একটি মাইক্রোবাসযোগে এসে ছানোয়ার এবং আঁখিকে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ভুরুঙ্গামারী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আন্ধারীঝাড়ের নববধূ আইরিনের দাবি, ছানোয়ারের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত ২৩ জুলাই নাগেশ্বরীতে তার মামার বাড়িতে ছানোয়ারের পরিবারের সম্মতিতে রেজিস্ট্রি করে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ছানোয়ারসহ ওই মামার বাড়িতে দুদিন কাটান তারা। শুক্রবার পারিবারিকভাবে তাকে ছানোয়ারের বাড়িতে তুলে নিয়ে আসার কথা ছিল। সেই অনুযায়ী বাড়িতে আয়োজন চলছিল। আত্মীয়স্বজনকে দাওয়াতও করা হয়েছিল।
আইরিন বলেন, ‘বরযাত্রী আসতে দেরি হওয়ায় ছানোয়ারকে ফোন দেয়া হচ্ছিল। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। পরে লোক মারফত ভুরুঙ্গামরীতে তার বিয়ের কথা জানতে পারি এবং এসে দেখি নতুন বউ নিয়ে তিনি শ্বশুরবাড়ি পাড়ি জমাচ্ছেন। আমি ছানোয়ারের বিয়ে করা প্রথম স্ত্রীর দাবি করে এখন তার বাড়িতে অবস্থান করছি। অন্যদিকে ভুরুঙ্গামারীর নববধূ আঁখির দাবি, ছানোয়ারের সঙ্গে তার চলতি বছরের মার্চ মাসে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তবে তা ব্যাপকভাবে প্রকাশ করা হয়নি। গত বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) রাতে আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে আমি শ্বশুরবাড়িতে আসি। আমিই ছানোয়ারের প্রথম স্ত্রী। ওরা (আইরিন) ছানোয়ারকে বাড়িতে চায়ের দাওয়াত দিয়ে জোর করে বিয়ের রেজিষ্ট্রি করিয়েছেন।’
এ ব্যাপারে ছানোয়ার কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে সামনাসামনি বসে কথা বলতে চেয়েছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মাস্টার জানান, একজন ব্যক্তি সপ্তাহের মধ্যে দুই বিয়ে করার ঘটনাটি ন্যক্কারজনক। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পর্যায় বসার কথা ছিল। তবে ছাত্রলীগের ছেলেরা এক পক্ষ নিয়ে এসে ছানোয়ারসহ আঁখিকে নিয়ে যায়। ভুরুঙ্গামারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন সরকার বলেন, ‘আমরা কয়েকজন গিয়ে ছানোয়ার ও আঁখিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। সেখানে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। আমার জানা মতে ছানোয়ারের সঙ্গে আঁখির বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছে এক বছর আগে।’
ভুরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, স্ত্রীর দাবি করা দুজনই ব্যাংক কর্মকর্তা ছানোয়ারের বৈধ স্ত্রী। একজনকে চলতি বছরের মার্চ এবং অন্যজনকে জুলাই মাসে বিয়ে করেছেন। এটা তাদের পারিবারিক বিষয়। এ বিষয়ে কোনোপক্ষই এ পর্যন্ত থানায় কোনো অভিযোগ করেননি।