বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৩৩ পূর্বাহ্ন
বিষেশ প্রতিনিধি : রাজনগর উপজেলার শতবর্ষীয় মহলাল সরকারি বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের অভিভাকরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিও) বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন। গত ২৭ সেপ্টম্বর ডিপিও বরাবরে এ অভিযোগ করা হয়। অভিযোগের অনুলিপি দেওয়া হয়েছে, রাজনগর উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে। ২১জন অভিভাবক স্বাক্ষরিত অভিযোগে বলা হয়, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিক আবু ইব্রাহিম দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে এই স্কুলে শিক্ষকতার কারণে স্কুলের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। প্রধান শিক্ষক আবু ইব্রাহিম, সহকারি শিক্ষক তার স্ত্রী রহিমা বেগম এবং তার ভাই আবুল কাছিম ম্যানেজিং কমিটির কথিত সভাপতি। একই স্কুলে একই পরিবারের ৩জন থাকার সুযোগে মিলেমিশে স্কুলটিকে তারা দুর্নীতির বিষবৃক্ষে পরিণত করেন। স্কুলের উন্নয়নের জন্য বরাদ্ধকৃত অর্থ ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে উন্নয়ন কাজের নামে প্রায় ৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ বিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী গরীব, অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা মোবাইল ঠিকমত ব্যবহার করতে না জানা এবং অনেকটা বিশ^াস করে প্রধান শিক্ষক আবু ইব্রাহিমের মোবাইলের সহায়তায় উপবৃত্তির টাকা পাওয়ার জন্য সরল বিশ^াসে প্রধান শিক্ষকের মোবাইল নম্বর উপবৃত্তির কাজে ব্যবহার করেন।
এ সুযোগে বিদ্যালয়ের গরীব শতাধিক শিক্ষার্থীর সরকারি উপবৃত্তির টাকা প্রধান শিক্ষক নামে বেনামে সিম ব্যবহার করে মোবাইলে সংগ্রহ করে আত্মসাৎ করেছেন। তাছাড়া স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ দায়িত্বশীলদেরকে পাশ কাটিয়ে এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির নাম স্বাক্ষর জাল করে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন তহবিলের বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জোয়াইর আহমদ বলেন, আমি সর্বসম্মত ও নির্বাচিত সভাপতি বহাল থাকা অবস্থায় স্কুল পরিচালনা কমিটিকে না জানিয়ে সবার অগোচরে নিয়ম বর্হিভূতভাবে তার আপন ভাইকে সভাপতি নির্বাচন করেছেন। স্কুলের ভূমিদাতা ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য পার্থ সারথি ঘোষ অধিকারী জানান, শুধু শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ করেননি, সভাপতির নাম স্বাক্ষর জাল করে স্কুলের তহবিলের উন্নয়ন ফান্ডের টাকা ভুয়া বিল ভাউচার তৈরি করে আত্মসাৎ করেছেন প্রধান শিক্ষক। এলাকার অভিভাবক মহল দুর্নীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম রেনু বলেন, বিষয়টি আমরা আপোষে মীমাংসার চেষ্টা করছি। অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক আবু ইব্রাহিম জানান, মুল সমস্যাটা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নিয়ে। করোনাকালে সভাপতি নির্বাচন করা হয়। বিএ পাশ ছাড়া সভাপতি করা যায় না। ফলে আগের সভাপতি বাদ পড়ায় তিনি মুলত এসব অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আপোষ মীমাংসা করে দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ডিপিও) শামছুর রহমান জানান, অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।