শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের জন্য নতুন নির্দেশনা জারি করেছে ভারত। উঠিয়ে নেয়া হয়েছে ঝুঁকির তালিকায় থাকা দেশগুলোর নাম। ভারতে নামা বিদেশিদের জন্য ৭ দিনের বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টিনের নিয়ম তুলে দিয়েছে দেশটির সরকার।
বৃহস্পতিবার তাদের দেওয়া সংশোধিত ভ্রমণ নির্দেশনায় ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ দেশের ক্যাটাগরিও বাদ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে এনডিটিভি।
করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন নিয়ে বিশ্বজুড়ে বিচলিত অবস্থার মধ্যে ভারত ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ দেশের তালিকা করে সেসব দেশ থেকে যাওয়া যাত্রীদের প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করেছিল। দৈনিক শনাক্ত কমে আসায় এখন ধাপে ধাপে তা শিথিল করা হচ্ছে।
১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে আন্তর্জাতিক ভ্রমণার্থীদের জন্য সংশোধিত নতুন এ নির্দেশনাটি কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয়টি কোভিড-১৯ এর ‘ক্রমাগত পরিবর্তিত পরিস্থিতির’ ওপর নজর রাখায় জোর দেওয়ার পাশাপাশি ‘অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়’ সেদিকে মনোযোগ দেওয়া দরকার বলেও স্বীকার করে নিয়েছে।
নতুন নির্দেশনায় ভারতে নামা বিদেশিদের আগের মতোই অনলাইনে একটি স্বঘোষিত ফর্ম (ওয়েব পোর্টাল এয়ার সুবিধায় এই ফর্ম মিলবে) পূরণ করতে হবে, যেখানে আগের ১৪ দিনের ভ্রমণবৃত্তান্ত লিখতে হবে।
এ ফর্মের সঙ্গে বিমানে চাপার সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টা আগে কোভিড শনাক্তে করা আরটি পিসিআর পরীক্ষার ‘নেগেটিভ’ ফলের কাগজও আপলোড করতে হবে।
তবে বাংলাদেশ, কানাডা, হংকং, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, বাহরাইন, কাতার, অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ড ও বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশসহ ৮২টি দেশ বা অঞ্চলের নাগরিকরা চাইলে আরটি-পিসিআর পরীক্ষার ফলের বদলে কোভিড টিকার দুই ডোজ নেওয়ার সনদও আপলোড করতে পারবেন।
“এয়ারলাইনস কেবল সেসব যাত্রীদেরই বিমানে তুলবে যারা স্বঘোষিত ওই ফর্মের সকল তথ্য পূরণ করবেন এবং আরটি-পিসিআর টেস্টে আসা নেগেটিভ ফল বা কোভিড-১৯ এর টিকা সনদ আপলোড করবেন,” বলেছে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
তারা জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের উপসর্গ নেই এমন যাত্রীদেরই বিমানে তুলতে হবে, আর ফ্লাইটের সময়ে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।
ভারতে নামার পর যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার পাশাপাশি প্রত্যেক ফ্লাইটের সর্বোচ্চ ২ শতাংশ যাত্রীকে (এয়ারলাইন্স বেছে নেবে) আরটি-পিসিআর পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।
কোনো যাত্রীর দেহে করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা গেলে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে কোয়ারেন্টিনে নিয়ে যাওয়া হবে ও তার দেহে কোভিডের উপস্থিতি শনাক্তে পরীক্ষা করা হবে। কারও দেহে করোনাভাইরাস পাওয়া গেলে, তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদেরও শনাক্তকরণ পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
আর উপসর্গ বা লক্ষণ না পাওয়ার পর যাদেরকে ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে, তারা নিজেরাই নিজেদের ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে রাখবেন, বলেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের বিস্তার রুখতে ভারত সরকার গত বছরের শেষদিকে বিদেশিদের ভারতে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করেও দেশটিতে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরনের ছড়িয়ে পড়া আটকাতে পারেনি।
ওমিক্রনের কারণে দেশটিতে কোভিডের তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়, এক পর্যায়ে গত মাসের মাঝামাঝি দেশটিতে দৈনিক শনাক্ত সাড়ে তিন লাখের কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল।
দৈনিক শনাক্ত রোগী কমা শুরু করলে মুম্বাই, দিল্লিসহ অনেক শহরই বিধিনিষেধ শিথিল করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে মনোযোগী হয়।
বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের সরকার সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৬৭ হাজার ৮৪ জনের দেহে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার খবর দেয়; আগের ২৪ ঘণ্টাতেও এই সংখ্যা ছিল ৭১ হাজারের ওপর।
ভারতে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ।