শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:০৮ অপরাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট :: গত কয়েক দিনের ভ্যাপসা গরমে নাভিশ্বাস উঠছিল। জ্যৈষ্ঠের এই খরতাপ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টির প্রতীক্ষায় ছিল মানুষ। তাদের সে প্রতীক্ষার অবসান হয়েছে।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝড় ও বৃষ্টি হয়েছে। এতে করে গত কয়েকদিনের ভ্যাপসা গরম থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছে নগরবাসী। শনিবার (২১ মে) ভোর পৌনে ৬টার দিকে ঢাকায় কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পরই শুরু হয় বৃষ্টি। সকাল ৮টায়ও রাজধানীতে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছিলো।
এ দিন ভোরে হঠাৎ ঝড়ের তীব্রতায় ঘুম ভেঙে যায় অনেক নগরবাসীর। শুধু ঢাকা নয়, শনিবার সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঝড় ও বৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
শনিবার সকাল থেকে কুমিল্লা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর ও যশোর অঞ্চলের ওপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় ও বৃষ্টি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
গত কয়েকদিনের তুলনায় শুক্রবার ঝড়-বৃষ্টির প্রবণতা বেড়েছে। এ দিন খুলনা বিভাগ ছাড়া সব বিভাগেই কম বেশি বৃষ্টি হয়েছে। আগামী কয়েকদিন ঝড়-বৃষ্টির এ প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে, বৃষ্টিতে প্রাণে স্বস্তি ফিরলেও অস্বস্তি হয়ে আসে আংশিক বা পুরোপুরি ডুবে যাওয়া রাজধানীর সড়ক।
রাজধানীর মিরপুর ১০ ও ১৩ নম্বর, মধ্য বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা গেছে।
মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্কর এলাকায় সড়ক পুরোপুরি পানিতে ডুবে গেছে। সেখান দিয়ে যানবাহনগুলোকে ধীরে ধীরে চলতে হয়েছে।
মিরপুর-১৩ নম্বরে বনফুল আদিবাসী গ্রিন হার্ট কলেজ ও স্কলাস্টিকার সামনের সড়কে জলাবদ্ধতা দেখা যায়।
সরকারি চাকরিজীবীদের সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও শনিবার কর্মস্থলে যেতে হয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের। বৃষ্টির মধ্যে ঘর থেকে বেরিয়ে গন্তব্যে যেতে যানবাহন পেতে সমস্যা হয়েছে অনেকের। কেউ কেউ জলাবদ্ধ সড়ক ধরে হাঁটতে বাধ্য হয়েছেন।
আবহাওয়াবিদ খো. হাফিজুর রহমান জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায়, চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বিজলি চমকানোসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে।
খুলনা বিভাগ বৃষ্টিহীন থাকায় যশোর ও সাতক্ষীরা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা শনিবারও অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন এ আবহাওয়াবিদ।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মর্তবান উপসাগর ও তৎসংলগ্ন মিয়ানমারে সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে প্রথমে সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং পরবর্তীতে নিম্নচাপে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি উত্তরপূর্ব দিকে সরে গিয়ে মিয়ানমার উপকূলের দিকে অগ্রসর হতে পারে। অপর একটি লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
শনিবার সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নৌবন্দরগুলোকে ২ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া দেশের অন্যান্য অঞ্চলের ওপর দিয়ে পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এসব এলাকার নৌবন্দরসমূহকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।