1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৫:১৫ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

রেডিও খবর শুনে ভাষা আন্দোলন শুরু করেছিলাম

  • আপডেট টাইম : সোমবার, ১৩ জুন, ২০২২
  • ১৫০ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্টার :: ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস। ভাষা সৈনিক আব্দুল মালিক তখন মাত্র স্কুলপড়ুয়া ছাত্র। দেশের চারদিকে তখন বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার করার দাবি হাওয়ায় ভাসছে। এরইমাঝে একদিন রেডিওতে শোনা গেলো ঢাকায় ঝামেলা হয়েছে, গোলাগুলিতে কিছু ছাত্রও মারা গেছেন। মুহূর্তেই সে খবর ছড়িয়ে পড়ে সবদিকে। কুলাউড়ায় সেদিন রেডিও শুনে খবরটি পান আব্দুল মালিকও। তৎক্ষণাৎ ছুটে যান স্কুলে, সেখান থেকে ৮-১০ জন বন্ধু নিয়ে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে মিছিল দিতে শুরু করেন তারা।

এভাবেই শুরু হয়েছিলো কমরেড আব্দুল মালিকের ভাষাসৈনিক হিসেবে যাত্রার শুরুটা। সেদিনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আব্দুল মালিক বলেছিলেন, ‘সেদিনের সেই মিছিলে আমরা স্লোগানে স্লোগানে স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে দিয়েছিলাম। আমরা কিশোর ছিলাম, স্কুলের ছাত্র। কিন্তু সেদিন আমাদের সাহস দেখে মিছিলে যোগ দিয়েছিলেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। ফলে আমাদের ৮-১০ জনের শুরু করা মিছিল একসময় বিশাল রূপ ধারণ করে।’

সেদিনের সেই মিছিলের পর বৈঠক করেন তারা, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় সকলেই ক্লাস বর্জন করবেন। তখন তারা সকলেই কুলাউড়ায় একটি স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্র। তারা ক্লাস বর্জন করে আন্দোলনকে আরও বেগবান করতে বিভিন্ন ইউনিয়নে ভাষা আন্দোলনের পক্ষে কাজ শুরু করেন। পরে কেন্দ্রের ঘোষিত আন্দোলনে যুক্ত হন বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে।

১৯৭১ সালে সাধীনতা যুদ্ধে সম্মুখ সমরে নিজেকে না জড়ালেও দূরে থাকেন নি মুক্তিযুদ্ধ থেকেও। সেসময় ভাষাসৈনিক আব্দুল মালিক আগরতলা আশ্রয়কেন্দ্র এবং মুক্তিসেনাদের মধ্যে গোপন গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন তথ্য, খাবার, রসদ এসব এনে দিতে কাজ করতেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালীন সময়ে তিনি আজীবন পাহাড় আন্দোলন, কৃষক-শ্রমিকের অধিকার আদায় আন্দোলনসহ সকল আন্দোলনেই সক্রিয় ছিলেন।

ভাষা সৈনিক আব্দুল মালিক বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি লড়াই সংগ্রামে ছাত্র, যুব জনতাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ভাষা আন্দোলন ছাড়া বাষট্টির আইয়ুববিরোধী আন্দোলনেও যুক্ত ছিলেন আব্দুল মালিক। এসময় রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় অনেকের সাথে আব্দুল মালিককেও গ্রেফতার করা হয়। প্রায় চার মাস কারাভোগের পর মুক্তি পান তিনি। কারাগার থেকে ফিরে জড়িয়ে পড়েন ঊনসত্তরের গণ আন্দোলনে।

১৯৭১ সালে সাধীনতা যুদ্ধে সম্মুখ সমরে নিজেকে না জড়ালেও দূরে থাকেন নি মুক্তিযুদ্ধ থেকেও। সেসময় ভাষাসৈনিক আব্দুল মালিক আগরতলা আশ্রয়কেন্দ্র এবং মুক্তিসেনাদের মধ্যে গোপন গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন তথ্য, খাবার, রসদ এসব এনে দিতে কাজ করতেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীকালীন সময়ে তিনি আজীবন পাহাড় আন্দোলন, কৃষক-শ্রমিকের অধিকার আদায় আন্দোলনসহ সকল আন্দোলনেই সক্রিয় ছিলেন।

শেষ বয়সে এসে শারিরীকভাবে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েন মৌলভীবাজারের এই কৃতিসন্তান। রোগেশোগে ভোগে বাড়িতেই সময় কাটিয়েছেন। স্বপ্ন দেখতেন এই দেশে একদিন সম অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। সকলে সমান অধিকার ভোগ করবে। কিন্তু তাঁর সে স্বপ্ন পূরণের আগেই যেন চলে গেলেন তিনি।

প্রসঙ্গত, সোমবার (১৩ জুন) ভোরের দিকে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার পৃথ্বিমপাশায় নিজ গ্রামের বাড়িতে মারা যান ভাষাসৈনিক আব্দুল মালিক। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮৮ বছর

১৯৩৪ সালের ২৩ জুন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথ্বিমপাশায় জন্মগ্রহণ করেন ভাষাসৈনিক আব্দুল মালিক। তাঁর বাবার নাম মো. ইলিম এবং মায়ের নাম ছবরুননেছা খাতুন।

এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসন ভাষা সংগ্রামী আব্দুল মালিককে সম্মাননা প্রদান করে। আজীবন সংগ্রামী কৃষক নেতা, ভাষা সৈনিক কমরেড আব্দুল মালিক ভাষা আন্দোলন পরবর্তী প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সিলেট বিভাগে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছেন।

 

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..