মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটে চলছে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা। রবি ও সোম পানি অনেকটা কমলেও মঙ্গলবার বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত। বরং মঙ্গলবার রাতভর ও বুধবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টি হওয়ায় সহসা পানি কমার সম্ভাবনা কম। অপরদিকে, সিলেটের কয়েকটি উপজেলার বিস্তৃর্ণ অঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। কুশিয়ারা ও সারি নদীর দুটি পয়েন্টের পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ছয়টা পর্যন্ত ওই পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটারে অবস্থান করছিল। বুধবার সকাল ৯টায় ওই পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটারে অবস্থান করছে। নদীর সিলেট পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে ছিল ১১ দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার। বুধবার সকাল ৯টার হিসাব অনুযায়ী সেখানে পানি ছিল ১১ দশমিক ১১ সেন্টিমিটার।
কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৪০ সেন্টিমিটার। সেখানে গত সোমবার পানি ছিল ১৭ দশমিক ২৯ সেন্টিমিটার। বুধবার সকাল ছয়টায় সেখানে পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। নদীর শেওলা পয়েন্টে বিপৎসীমা ১৩ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার। সেখানে সকাল ৯টায় পানি অবস্থান করছে ১৩ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটারে। কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও সকাল ৯টায় বিপৎসীমার দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটার নিচ থেকে প্রবাহিত হচ্ছে। ওই পয়েন্টে বিপৎসীমা ৮ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার। সেখানে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ছিল ৮ দশমিক ৩১ সেন্টিমিটার। বুধবার সকাল ৯টায় সেখানে ১০ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটারে অবস্থান করছিল।
এ ছাড়া লুভা নদীর পানি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ১৩ দশমিক ৯২ সেন্টিমিটারে ছিল। বুধবার সকাল ৯টায় সেটি ১৩ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটারে অবস্থান করছে। সারি নদীর পানি সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ০৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে সিলেট নগরীর তালতলা, মির্জাজাঙ্গাল, লামাবাজার, কুয়ারপাড়, লালাদীঘির পাড়, শিবগঞ্জ, তেররতন, শাহজালাল উপশহর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে- এসব এলাকায় পানি আগের অবস্থানে রয়েছে। বন্যাকবলিত নগরীর বাসিন্দারা বিশুদ্ধ পানির সংকটে রয়েছেন। তবে সিলেট সিটি করপোরেশনের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা ট্যাংক বিভিন্ন পাড়া–মহল্লার সামনে এবং আশ্রয়কেন্দ্রের সামনে অবস্থান করতে দেখা গেছে। নগরীর শাহজালাল উপশহর এলাকায় পানি কিছুটা নামলেও সেখানে নৌকা চলাচল করছে।
সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগরীতে ৮৬টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে সিটি করপোরেশন। সেগুলোতে প্রায় ৭ হাজার বন্যাকবলিত মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। সিলেট সিটি করপোরেশনের পানি সরবরাহ করার পাম্পগুলো বন্যার পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় পানি সরবরাহ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে পানি সরবরাহের ভ্রাম্যমাণ ট্যাংকের মাধ্যমে নগরীর বাসিন্দাদের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ পাওয়া চাল বিতরণ করা হচ্ছে।