সোমবার, ২৭ মার্চ ২০২৩, ০৯:০২ পূর্বাহ্ন
ক্রীড়া ডেস্ক :: নড়বড়ে নব্বইয়ের বৃত্তে আটকা পড়ে গেছেন তামিম ইকবাল। টেস্ট ক্যারিয়ারের ১১৯ ইনিংসে যেখানে মাত্র একবার আউট হয়েছিলেন নব্বইয়ের ঘরে, সেখানে গত তিন ইনিংসের দুবার নব্বইয়ের ঘরে থামলেন দেশসেরা এ ওপেনার। সিরিজে দ্বিতীয়বারের মতো সেঞ্চুরির কাছে গিয়েও খালি হাতেই ফিরতে হলো তাকে।
শ্রীলঙ্কার করা ৪৯৩ রানের জবাবে শুরু থেকেই সাবলীল ব্যাটিং করছিলেন তামিম। তার ব্যাটে ভর করেই পাল্টা জবাবটা বেশ ভালোভাবে দিচ্ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দলীয় সংগ্রহ দেড়শ পেরুতেই তামিমের উইকেট তুলে নিলেন শ্রীলঙ্কার অভিষিক্ত বাঁহাতি ওপেনার প্রবীন জয়াবিক্রম।
বাংলাদেশ ইনিংসের ৪৪তম ওভারের দ্বিতীয় বলে প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো দিমুথ করুনারাতেœর হাতে ধরা পড়েছেন তামিম। আউট হওয়ার আগে ১২ চারের মারে ১৫০ বলে ৯২ রান করেছেন তিনি। অবশ্য এর আগে ব্যক্তিগত ৯১ ও ৯২ রানে শর্ট লেগের হাত থেকে জীবন পেয়েছিলেন তামিম।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইনিংসের ৪৫ ওভার শেষে বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ১৫৭ রান। ফর্মে থাকা অধিনায়ক মুমিনুল হক খেলছেন ৩০ রানে। চতুর্থ উইকেট জুটিতে তাকে সঙ্গ দিতে নেমেছেন দলের নির্ভরযোগ্য ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।
প্রথম ইনিংসে শ্রীলংকার সংগ্রহ দাঁড়ায় ৭ উইকেটে ৪৯৩ রান।
জবাবে খেলতে নেমে টানা তৃতীয়বারের মতো ইনিংসের প্রথম ওভারেই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরু করেন তামিম, বুঝিয়ে দেন চেপে বসতে দেবেন না বোলারদের। আগের ম্যাচের আত্মবিশ্বাস নিয়ে শুরু থেকেই লঙ্কান বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকেন তিনি।
তামিমের সাবলীল ব্যাটিংয়ে সাহস পান প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ হওয়া সাইফ হাসানও। দুজনের ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে ১৩ ওভারেই চলে আসে জুটির ৫০ রান। যেখানে তামিমের অবদানই ছিল ৪১ রান। রান কম করলেও, প্রথম ম্যাচের চেয়ে বেশি আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করছিলেন সাইফ।
রমেশ মেন্ডিসের করা ইনিংসের ১৫তম ওভারের প্রথম দুই বলে জোড়া বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৪৯ রানে পৌঁছে যান তামিম। সেই ওভারের পঞ্চম বলে ১ রান নিয়ে পূরণ করেন ক্যারিয়ারের ৩১তম হাফসেঞ্চুরি। যেখানে ছিল ৮টি চারের। এটি তামিমের টানা চতুর্থ ইনিংসে হাফসেঞ্চুরির কীর্তি।
তবে তামিমের জন্য এটিই প্রথম টানা চার ইনিংসে ফিফটি নয়। ২০১০ সালে টানা পাঁচ ইনিংসে পঞ্চাশোর্ধ্ব রান করার নজির রয়েছে তামিমের। সেবার শেষের দুইটি ইনিংস ছিল সেঞ্চুরি। কিন্তু এবার চার ইনিংসের একটিকেও সেঞ্চুরিতে রূপ দিতে পারলেন না তামিম।
যে ওভারে পঞ্চাশ পূরণ করেন তামিম, সেই ওভারের শেষ বলে উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে লং অন দিয়ে ইনিংসের প্রথম ছক্কা হাঁকান সাইফ। পরের ওভারের প্রথম বলেই আবার বাউন্ডারি হাঁকান তামিম। অভিষিক্ত প্রবীণ জয়াবিক্রমার পরের ওভারে হাঁকান জোড়া চার।
উইকেটে টার্ন ও বাউন্সের দেখা মিললেও তাতে তামিমের ব্যাটিংয়ে কোনো সমস্যা হচ্ছিল না। সাইফও খেলছিলেন আগের চেয়ে বেশি সাহস ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে। বিশেষ করে রমেশ মেন্ডিসের করা ২৩তম ওভারে অফসাইডে অসাধারণ দুইটি ড্রাইভ খেলেন সাইফ।
মনে হচ্ছিল উদ্বোধনী জুটি অবিচ্ছিন্ন থেকেই মধ্যাহ্ন বিরতিতে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু বিধিবাম! বিরতির আগে দুই ওভারে সাজঘরের পথ ধরেন সাইফ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। অভিষিক্ত জয়াবিক্রমের বলে সেকেন্ড স্লিপে ধরা পড়েন ২৫ রান করা সাইফ।
রমেশের করা পরের ওভারের শেষ বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন নাজমুল শান্ত। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ক্যারিয়ার সেরা ১৬৩ রানের পর টানা দুই ইনিংসেই শূন্য রানে আউট হলেন শান্ত। টেস্ট ক্রিকেটে যা বিরল নজিরই বটে।
দিনের দ্বিতীয় সেশনে নতুন করে ইনিংস গড়ায় মনোযোগ দেন তামিম ও মুমিনুল। দুজন মিলে রান যেমন নিচ্ছিলেন নিয়মিত, তেমনি নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে বারবার মনে ভয় ঢোকাচ্ছিলেন জয়াবিক্রম ও রমেশ। যার ফল তারা পেয়ে যায় ৪৪তম ওভারে। তামিমের বিদায়ে ভাঙে ৫২ রানের তৃতীয় উইকেট জুটি।