বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৩২ পূর্বাহ্ন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: মায়ের কোল আলো করে পৃথিবীতে এসেছিলেন দু’জনে একসঙ্গে। বেড়ে ওঠার মধ্যেও ছিল না কোনও তফাৎ। যমজ ভাই করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে হার মানলেন। পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে একসঙ্গে পরলোকে পাড়ি দিলেন তাঁরা। মারণ ভাইরাসের দাপটে মাত্র ২৪ বছর বয়সি দুই ছেলের প্রাণহানিতে শোকে পাথর বাবা-মা।
দিনটা ছিল ১৯৯৭ সালের ২৩ এপ্রিল। এখন স্পষ্ট সেদিনের কথা মনে পড়ে ভারতের মীরাটের ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাসিন্দা গ্রগারি রেমন্ড রাফেলের। ওইদিন হাসপাতালের ভিতরে চলছিল অস্ত্রোপচার। অপারেশন টেবিলে শুয়েছিলেন স্ত্রী। বাইরে উৎকণ্ঠা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রাফেল। কিছুক্ষণের মধ্যেই পেলেন সুখবর। জানতে পারলেন যমজ পুত্রসন্তানের বাবা হয়েছেন তিনি। অবিকল একইরকম দুই পুত্রসন্তানের মুখ দেখে আনন্দে চোখে জল এসে গিয়েছিল তাঁর। দুই ছেলের সাধ করে নাম রেখেছিলেন জোফ্রেড ভার্গিস গ্রগারি এবং রাফ্রেড জর্জ গ্রগারি। শিক্ষক বাবা-মা বেশ কষ্ট করেই দু’জনকে বড় করে তোলেন। কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে হায়দরাবাদে দুই ভাই পড়াশোনা করতে শুরু করেন।
এ পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই ছিল। তবে সমস্যা তৈরি হল গত ২৪ এপ্রিল। ওইদিন জানা যায় যমজ ভাইয়ের শরীরে থাবা বসিয়েছে করোনা ভাইরাস। বাবা-মা জানান, বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা চলছিল তাঁদের। তবে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় হাসপাতালে ভরতি করা হয় দু’জনকে। পরিজনদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ রাখছিলেন তাঁরা। দুই ভাইয়ের কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভও হয়ে যায়। কিন্তু ১৩ মে ঘটল বিপত্তি। আচমকা প্রাণ হারান এক ভাই। তখনও পর্যন্ত যদিও আরেকজনকে মৃত্যু সংবাদ জানানো হয়নি। দুঃসংবাদ না জানতে পারলেও মৃত্যু ছুঁয়ে গেল আরেক ভাইকেও। ঠিক কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ১৪ মে প্রাণ গেল আরেক ভাইয়েরও। দুই ছেলের একইসঙ্গে প্রাণহানি মানতে পারছেন না তাদের বাবা-মা। শোকে যেন পাথর হয়ে গিয়েছেন দু’জনেই।