মঙ্গলবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৩ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট : সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সবাইকে আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।
আজ বুধবার (৩০ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৬টি ইউনিটের রেজিমেন্টাল কালার প্রদান অনুষ্ঠান বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টার, রাজশাহী সেনানিবাসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেছেন।
রাজশাহী সেনানিবাসের ‘রেজিমেন্ট অব দি মিলেনিয়াম’খ্যাত বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টারের প্যারেড গ্রাউন্ডে সেনাবাহিনী প্রধান উপস্থিত হলে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ৬৬ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার রংপুর এরিয়া মেজর জেনারেল মো. ফয়জুর রহমান তাকে অভ্যর্থনা জানান।
এ সময় একটি সম্মিলিত চৌকষ দল মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করে এবং সেনাবাহিনী প্রধানকে সালাম দেয়।
গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক ইউনিটসমূহ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা দেশ মাতৃকার সেবায় বিশেষ অবদান এবং বিবিধ প্রশিক্ষণ ও অপারেশনাল কার্যক্রমে সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ একটি ইউনিট বা রেজিমেন্টকে রেজিমেন্টাল কালার দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১১ এসপি রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ৩৭ এডি রেজিমেন্ট আর্টিলারি, ১৯ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন, ২৫ বীর (সাপোর্ট ব্যাটালিয়ন), ২৯ বীর এবং ৩৪ বীর আজকের কালার প্যারেডে অংশগ্রহণ করে এবং প্রধান অতিথির কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিমেন্টাল পতাকা গ্রহণ করে।
সেনাপ্রধান রেজিমেন্টাল কালারপ্রাপ্ত ইউনিটগুলোকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এই বিশেষ দিনে আমি পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। সেই সঙ্গে স্মরণ করছি মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে আত্মদানকারী ৩০ লাখ বীর শহীদদের। যাদের অবদান জাতি সর্বদা স্মরণ করবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে প্রিয় বাংলাদেশ আজ দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ফোর্সেস গোল-২০৩০ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন হচ্ছে। সেনাবাহিনীর সামরিক ঐতিহ্য অনুযায়ী যে কোনো ইউনিটের জন্য রেজিমেন্টাল কালার প্রাপ্তি অত্যন্ত গৌরবের বিষয়।
তিনি এ সময় সবাইকে আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সদা প্রস্তুত থাকতে আহ্বান জানান।
শেষে সেনাবাহিনী প্রধান রেজিমেন্টাল কালার দেয়া উপলক্ষে একটি সুশৃঙ্খল, মনোজ্ঞ ও বর্ণিল কুচকাওয়াজ প্রদর্শনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
এরপর সেনাবাহিনীপ্রধান বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টাল সেন্টারে বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে উপস্থিত বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের অধিনায়ক ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন এবং এ রেজিমেন্টের উন্নয়ন, পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি ও দেশে-বিদেশে পরিচালিত বিভিন্ন কার্যক্রম বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
সেনাপ্রধান ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহ্য, দেশমাতৃকার সেবায় সক্রিয় অবদানের কথা স্মরণ করেন। আধুনিক ও যুগোপযোগী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে রেজিমেন্টের সবার প্রতি আহ্বান জানান।
রেজিমেন্টাল কালার প্রদান এবং বাংলাদেশ ইনফ্যান্ট্রি রেজিমেন্টের বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে সেনাপ্রধানের উপস্থিতিতে এই রেজিমেন্ট এবং কোর অব ইঞ্জিনিয়ার্সের সদস্যদের মাঝে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি ও প্রতিটি সদস্যের মাঝে আগামী দিনে দেশসেবার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
অনুষ্ঠানে জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহম্মদ তাবরেজ শামস চৌধুরী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটেন্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. মোশফেকুর রহমান এবং জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ১১ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার বগুড়া এরিয়া মেজর জেনারেল মো. খালেদ-আল-মামুনসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ও স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিভিন্ন পদবির সেনাসদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।