শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ০৮:২৬ পূর্বাহ্ন
বিনোদন ডেস্ক : কভিড-১৯ মহামারীর কারণে ধুঁকছিল বক্স অফিস। সারা বিশ্বে ছিল একই অবস্থা। ২০২২ সালে হলিউডভিত্তিক বেশকিছু সিনেমার সাফল্যের কারণে মুনাফার পরিমাণ বেড়েছে। ২০২২ সালে বৈশ্বিক হিসেবে বক্স অফিস মোট আয় করেছে ২ হাজার ৬০০ কোটি ডলার। ২০২১ সালের তুলনায় আয় বেড়েছে ২৭ শতাংশ। তবে অতিমারী পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় এ পরিমাণ নিতান্তই কম। কিন্তু অর্থনৈতিক মন্দা, থিয়েটারে যাওয়ার প্রতি দর্শকের অনীহা, ওটিটির উত্থান ও অন্যান্য বৈরী পরিস্থিতির মধ্যে বক্স অফিসের এ আয় মূলত এর ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়টিকেই ইঙ্গিত করে।
গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বক্স অফিস আয়ের হিসাব করেছে গোয়র স্ট্রিট অ্যানালিটিকস। তাদের দেয়া তথ্য অনুসারে, সারা বিশ্ব থেকে ২০২২ সালে বক্স অফিসের মোট আয় ২ হাজার ৫৯০ কোটি ডলার। ২০২১ সালে আয়ের পরিমাণ ছিল ২ হাজার ১৪০ কোটি ডলার। কিন্তু ২০১৭-১৯ সাল পর্যন্ত বক্স অফিসের আয়ের গড় হিসাব করলে দেখা যায়, ২০২২ সালের আয় আসলে ৩৫ শতাংশ কম। গোয়র স্ট্রিটের হিসাব অনুযায়ী অতিমারী পূর্ববর্তী সময়ের হিসাবে বক্স অফিসের আয় মূলত ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার পিছিয়ে রয়েছে।
আমেরিকাভিত্তিক মিডিয়া বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান কমস্কোরও এ নিয়ে কাজ করেছে। তাদের হিসাব অনুসারে উত্তর আমেরিকার বক্স অফিস ২০২২ সালে ৭৫০ কোটি ডলার আয়ের সম্ভাবনা নির্দেশ করেছিল। এ অংক ২০২১ সালের তুলনায় ৬৫ শতাংশ বেশি হলেও ২০১৭-১৯ সময়কালের তুলনায় ৩৫ শতাংশ কম। ধারণা করা হয়েছিল, চীনের বক্স অফিস থেকে আয় হবে ৪৩৩ কোটি ডলার। চীনের বক্স অফিসের হিসেবেও ২০২১ সালের তুলনায় এ আয় ৩৬ শতাংশ ও অতিমারী-পূর্ববর্তী তিন বছরের গড়ের তুলনায় ৪৯ শতাংশ কম। অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, চীনের বক্স অফিসের এ বছরের মোট আয় গত ১১ বছরের তুলনায় সর্বনিম্ন। হলিউডের সিনেমার ক্ষেত্রে চীন দ্বিতীয় বৃহত্তম বাজারে পরিণত হয়েছে। কিন্তু সেখানে গত বছর নানা কারণে কিছু সিনেমা মুক্তি না পাওয়া ও চীনে কভিড-১৯ মহামারীর তীব্রতার কারণে এ থিয়েটারে লোক সমাগম আগের মতো হচ্ছে না। ফলে ব্যবসায়ও পড়েছে ভাটা।
চীন ও উত্তর আমেরিকা বাদে অন্যান্য অঞ্চলে ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার আয় করার মতো পরিস্থিতি তৈরি করেছিল ২০২২ সালে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো। ২০২১ সালের আয় অনুসারে ২০২২ সালে আয় বেড়েছে ৫৫ শতাংশ। কিন্তু ২০১৭-১৯ সালের হিসাবে বক্স অফিস পিছিয়ে আছে ২৯ শতাংশ। ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা থেকে আয় হয়েছে ৭১০ কোটি ডলার। ২০২১ সালের আয়ের তুলনায় ৫২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে এখানে। চীন বাদে এশিয়া প্যাসিফিকে আয় হয়েছে ৫২০ কোটি ডলার। ২০২১ সালের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৯ শতাংশ। লাতিন আমেরিকায় ১৮০ কোটি, যা ২০২১ সালের তুলনায় ৮৭ শতাংশ বেশি। সিনেমা বাজারের ক্ষেত্রে রাশিয়া দুর্বল একটি অঞ্চল। সেখানে যুদ্ধ ও অন্যান্য কারণে সিনেমার বাজার ২০২২ সালেও চাঙ্গা হয়নি। কিন্তু ভারত, চীন, জাপান, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া সম্ভাবনা তৈরি করছে। অতিমারী-পূর্ববর্তী সময়ের মতো আয় করা কঠিন কিন্তু ২০২১ সালের তুলনায় যেভাবে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বক্স অফিস, তাতে সামনের বছরগুলোয় আরো বেশি মুনাফা আশা করাই যায়।