1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৫ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

স্বপ্নের যুক্তরাজ্যে বিচারক স্বাধীন, পুলিশ ঘুস খায় না- মানুষ পায় তার ন্যায্যবিচার-

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০২৩
  • ৫৫১ বার পঠিত

আজিজুল আম্বিয়া, যুক্তরাজ্য থেকে :

যারা জীবনে নিজেকে বিত্তশালী করতে চান তাদের কাছে যুক্তরাজ্য একটি স্বপ্নের দেশ বলা যায়। তার বিভিন্ন কারণ খুঁজে পাওয়া যায়। এ দেশে মানুষের আয় রোজগার পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মানুষের চেয়ে অনেক ভালো।
এছাড়া এখানে গরিব রোগীদের সরকার বিনাপয়সায় চিকিৎসা করে। যারা কাজ করতে সক্ষম নয় তাদের সরকার সংসার চালানোর জন্য টাকাপয়সাও দেয়। বাচ্চাদের লালন পালনের জন্য ও সহযোগিতা করে সরকার। যাদের থাকার ঘর নেই তারাও সরকারের কাছ থেকে ঘর বা ঘরের বাড়ার টাকা পায়।
যারা কাজ করতে সমর্থ নয় তাদের ও সরকার অর্থনৈতিক সহযোগিতা করে এবং এখানে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত। বিচারক স্বাধীন, পুলিশ ঘুস খায় না। তাই মানুষ পায় তার ন্যায্যবিচার। নিজ দেশে ফেরত গেলে প্রাণনাশের হুমকি আছে এমন ব্যক্তিদের এ দেশের সরকার ফেরত পাঠায় না।

 


এ কারণে দিন দিন মানুষের কাছে এই দেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। তাই এ দেশে মানুষ খুব বেশি প্রবেশ করে, বিশেষ করে ভ্রমণ ভিসা নিয়ে। এছাড়া স্টুডেন্ট, ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়েও অনেকে আসেন।
কিন্তু আসার পর অনেকের জীবনে প্রভাব পড়ে এদেশের গতানুগতিক বিভিন্ন ব্যবস্থার। কেউ কেউ তাদের ভিসা চালিয়ে নিতেও অনেক সময় সমর্থ হন না। তাই অনেকেই ভিসা শেষ হওয়ার পূর্বে নিজে নিজে কিংবা বাধ্য হয়েই সুইচ করেন অন্য ভিসাতে। আর যাদের ভিসার মেয়াদ বিভিন্ন কারণে শেষ হয়ে যায় তারা হয়ে যান অনিয়মিত। জীবনে শুরু হয় বিভিন্ন সমস্যার।
তাদেরকে কাজ দিতে অনেক মালিক চান না। কারণ অবৈধদের কাজ দিলে এখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিককে জরিমানা দিতে হয় বিশাল অংকের। আর যারা কাজ দেন তারা অনেকে ন্যায্য বেতন দেন না, বরং কর্মচারীদের সাথে অনৈতিক আচরণে লিপ্ত থাকেন।
এমনকি থাকার ঘর থেকে শুরু করে খাবারের বেলায় ও উদাসীন থাকতে দেখা যায় কোনো কোনো মালিককে। কোনো কোনো সময় পার্টনারশিপ বিজনেস এ কাগজপত্র ঠিক না থাকাতে অসাধু পার্টনাররা তাদের পার্টনারদের টাকাপয়সার হিসাবও ঠিকমতো বুঝিয়ে দেন না এবং সুযোগ পেলে এই টাকা তারা কখনো কখনো আত্মসাৎ করে নেন। কারণ অবৈধ অভিবাসীরা আইনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত থাকেন সবসময়।
তাই কাগজের ভয়ে তারা এসব নীরবে সহ্য করে চলেছেন। তাদের কান্নায় ভারি হয়ে কখনো কখনো ব্রিটেনের আকাশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
কিন্তু কে দেখবে এসব? যারা কমিউনিটির নেতৃত্ব দেন তাদের ও কেউ কেউ এই কাজে লিপ্ত থাকেন, তাই হয়ত এসবের সুরাহা হচ্ছে না। যারা এই দেশের আইনকানুন জানেন, তারা মনে করেন, এ দেশে স্থায়ী হওয়ার একমাত্র সহজ পথ হল ব্রিটিশ নারীকে বিয়ে করা।

আর এই বিয়ে করতে গিয়ে গুনতে হয় বিরাট অংকের মোহরানা যা সর্বনিম্ন হতে পারে ১০ হাজার পাউন্ড। কেউ কেউ ১৫ থেকে ২০ হাজার পাউন্ড নিয়ে নিচ্ছেন বরের কাছ থেকে। এটাকে সহজে হজম করার জন্য অনেক কন্যার পিতা বলে থাকেন এটি পরবর্তীতে ঘর কেনার কাজে ব্যবহার করা হবে। কেউ কেউ আবার এটিকে পুঁজি করে নারীবান্ধব আইনের কারণে কন্যা সেজে বিয়ে করেন এবং বরের টাকাপয়সা হাতিয়ে নিয়ে কিছু দিনের ভিতরে আবার তাকে ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ের জন্যও তৈরি থাকেন।
এভাবে জীবনের সব সঞ্চয় হারিয়ে অনেক যুবক ব্রিটেনের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। অনেকে আবার মিথ্যা মামলার শিকার হয়ে জেলও খেটেছেন অনেক দিন। মামলা এখানে এত ভয়ানক হয় যে, অনেক সময় আপন স্ত্রী যখন সংসার করে না স্বামীর সাথে, তখন তাদের কেউ কেউ স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষনেরও অভিযোগ আনছেন। যা পরবর্তীতে কোটে গিয়ে প্রমাণিত হচ্ছে সত্য বা মিথ্যা।

 


তার পূর্বে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সইতে হয় অনেক যন্ত্রণা। তবে অধিকাংশ সময় এই মামলাগুলো মিথ্যা বলে প্রমাণিত হচ্ছে।
অনেক সময় শোনা যায়- সুখের সংসার চলাকালীন স্বামী নামাজ পড়ছে, অন্যদিকে স্ত্রী নিজে ঘরের দরজার লক লাগিয়ে পুলিশকে কল করে বলেছে তাকে স্বামী নির্যাতন করছে এবং ঘর থেকে বের যাতে না হতে পারে সেজন্য দরজা লক করে রেখেছে।
পুলিশ এসে দরজা ভেঙ্গে দেখে সে তো তার ঘরে নামাজ পড়তেছে। তাকে ধরে নিয়ে বাহিরে গিয়ে ছেড়ে দিয়েছে, এই বলে যে, এটি মিথ্যা অভিযোগ- তাই ছেড়ে দিলাম কিন্তু ঘরে ফিরে যাবে না। কারণ সে চাচ্ছে না তাই। কৌশলী মেয়েরা কিন্তু বোকা ছেলেদের এ কাজে পছন্দ করে, তারা যাতে নিরাপদে প্রতারণা করতে পারে।
আর যারা নিয়মিত সংসার করতেছেন তাদের অনেকেই নারী নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। যার উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, মা-বাবাকে দেশে টাকা পাঠানো থেকে শুরু হয় মানসিক নির্যাতন। অথচ বেতনের পুরো টাকাটা এনে দিতে হয় এই মহারানির হাতে।
কিন্তু তিনি তার জন্মদাতা পিতামাতা কেউ টাকাপয়সা দিতে খুশি নয়। তিনি ঘরের সমস্ত কাজ এই পুরুষকে দিয়ে করাতে পছন্দ করেন। ভুলে যান সেও একজন মানুষ। বাধ্য হয়ে অনেকে করেন, কিংবা করতে হয় এসব। তাছাড়া বাচ্চাদের দেখাশোনাও অনেক সময় তাকে করতে হয়।
তারপরও সুখ হলো তাদের জন্য সোনার হরিণ। অনেকে সংসার করছেন খুব ভালো। কিন্তু শাশুড়ি মা কিংবা বড় বোনের শক্ত নজরদারির কারণে বউ বনে যান একজন গোয়েন্দা অফিসার। মানুষ মাত্রই ভুল থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু তারা নিজেদের ভুল না দেখে লেগে থাকেন বরের ভুল ধরার জন্য। আর সামান্য ভুল পেলেই তিলকে তাল বানিয়ে তৈরি করেন মহাসমস্যা। আর তার জন্য ঘর করা হয় না আর তাদের।
এটাকে সমাধান না করে খুঁজতে থাকেন নতুন বর এবং একটা বিয়ের চিহ্ন শেষ হতে না হতেই করে ফেলেন আরেকটি
বিয়ে। তারা মনে করেন আমি যদি আরেকজনকে বৈধতা দিতে পারি আমার পার্টনার কিংবা স্বামীর পরিচয়ে তাহলে আপস করব কেন?
এভাবে হারিয়ে যাচ্ছে, অনেক সুন্দর সংসার আর শান্তি কিন্তু যারা এরকম একটি সংসার ভাঙ্গার কাজে লিপ্ত কিংবা সহযোগিতা করছেন তাদের মনে কিন্তু এই কাজকে অপরাধ হিসাবে মনে হচ্ছে না। তাই এর ধারাবাহিকতা কয়েক যুগ থেকে চলছে।
এখানে কমিউনিটির মানুষের মাধ্যমে একটি সরব ক্যাম্পেইন করা দরকার এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে। আর এই কাজে লজ্জা ভুলে আগামী প্রজন্মকে নিরাপদ করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে সবাইকে, বিশেষ করে এগিয়ে আসতে হবে নির্যাতিত মানুষদের।
কারণ তারাই পারবেন মানুষকে আসল বিষয়টি তুলে ধরতে। তখন হয়ত মানব সচেতনতার জন্য এ অন্যায়ের প্রতিবাদ আর প্রতিরোধ সম্ভব হবে। সচেতনতার জন্য আরও কিছু কাজ করা যেতে পারে, যেমন নির্যাতিত ব্যক্তিদের দ্বারা প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন সামাজিক টেকনোলজি ব্যবহার করে সবাইকে এক প্লাটফর্মে নিয়ে আসতে হবে। এখানে সবাই তাদের নির্যাতনের কথা বলবেন এবং প্রতিকারও চাইতে পারেন।
পরবর্তীতে তা একজন আইনজীবীর সহযোগিতা নিয়ে এর মোকাবিলা করার জন্য তৈরি হতে হবে। এভাবে একদিন এটি রূপান্তরিত হবে মহাগ্রুপে। তখন যে কোনো অনৈতিক বিষয়ে লড়তে সুবিধা হবে। বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনে কোর্ট পর্যন্ত ও লড়া সম্ভব হবে সবার আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে।
আর তখন হয়ত টনক নড়বে এই অন্যায়কারীদের এবং তারা শাস্তির আওতায় আসতে বাধ্য হবে। এখানে নারীবান্ধব আইনের কারণে নারীরা তাদের বিচার পেয়ে যান খুব সহজে। এটি একটি শুভ লক্ষণ। কিন্তু যারা এরকম ঘৃণ্য আচরণ করেন নারীদের সাথে তাদের বরাবর এই জাতি শুধরানোর উপদেশ দেয়।
আর এই দেশের নারীদের বলব, আপনাদের কাছে আশ্রিত মানুষগুলির প্রতি আপনারা সদয় হোন। ভাবুন এরা আপনাদের জন্য তার সবকিছু ছেড়ে চলে এসেছে। তাই তাদের যাওয়ার আর কোনো জায়গা নেই। এজন্য আসুন এদের আমরা একটু ভালোবাসা দিয়ে মনকে প্রফুল্ল করে তুলি।
আর আমরা যদি হিংসামুক্ত আর নির্লোভ একটি ব্রিটেন উপহার দিতে পারি তবে জাতি আমাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..