1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০২:৫৯ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

প্রায় বিপন্ন মুনিয়াদের আকাশে মেঘের ঘনঘটা : ১১ মৃত মুনিয়া উদ্ধার

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১৫৩ বার পঠিত

স্টাফ রিপোর্টার :: ছন ক্ষেত যাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন। মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ক্রমশ দেশের ছন ক্ষেতে গড়ে উঠছে আবাসন ও ফসলের মাঠ। অন্যদিকে মানুষের স্বক্ষমতা বেড়ে যাওয়ায় এখন আর ছন খলার প্রয়োজনীয়তা খুবই কম। কারণ এখন কেউই সস্তায় ছন কিনে ঘরের ছাওনী দেয়না। দেশের ৯৯ ভাগ ঘরই টিন ও ইটের। এতে কমে যাচ্ছে ছনখলা অন্যদিকে শিকারীদের হাতে প্রতিনিয়তই ধরা পড়তে হচ্ছে। এ যেন মুনিয়াদের ভাগ্যাকাশে মেঘের ঘনঘটা।


ছনখলা বিলুপ্তের যুগে দেশের সিলেট অঞ্চলের চা বাগানের কিছু বাড়িঘরে ছনের ছাউনী থাকায় বেশ কিছু বাগানে আলাধা করে রাখা হতো ছনখলা। কিন্তু চা বাগানেও এখন লেগেছে উন্নয়নের ছোয়া। শ্রমিকের ঘরে লেগেছে টিনের ছাউনী। কমেছে চা বাগানের ছনখলার প্রয়োজনীয়তাও। ক্রমশ: শত শত ছনখলায় গড়ে উঠেছে চারা বাড়ি, না হয় প্লান্টেশন। আবার কোথাও শ্রমিকের আবাসন। তবে নি:শেষ হতে হতে ঠিকে ছিল মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কুরমা চা বাগানে ১১ নং সেকশনে একটি ছন খলা। কিন্তু এই ছনখলায় কর্তৃপক্ষের উৎপাদনের চিন্তা আর শিকারীদের উত্তম স্থান।
পাখি প্রেমী খোকন সিংহ জানান, এই ছনখলাই ছিল বিপন্ন মুনিয়া পাখির আবাসস্থল। তিনি বলেন, মুনিয়া ছোট ছোট পাখি। এরা ছনখলায় বসবাস করতে পছন্দ করে। ছনখলার গোড়ার ভিতরে এরা ডিমপাড়ে এবং বাচ্চা ফোটায়। কুরমা চা বাগানের ১১নং সেকশনের ছনখলায় এবং ঝোপঝাড়ে মুনিয়াসহ বিভিন্ন রকমের পাখি রয়েছে। তিনি বলেন, সময় পেলেই সেখানে ছবি তুলতে যান। শুধু তিনি নন এখানে মুনিয়াদের দেখতে দেশের পাখি প্রেমীরা প্রায়শ্চই ছুঠে যান সেখানে। এসেছেন পাখি প্রেমী ইনাম আল হকও।


ইনাম আল হক জানান, মুনিয়া ছোট প্রজাতির পাখি। এরা ফসলের মাঠ, ছনখলা, নলখাগড়ার বন ও ঝোপে বসবাস করে। এরা চলাচল করে ঝাঁকে ঝাঁকে। কিন্তু চা বাগান কর্তৃপক্ষ এই ছনখলা পরিস্কার করে ক্রমশ চাবাগান বর্ধিত করছেন। তিনি বলেন এভাবে আবাসন হারালে বিপন্ন হতে পারে মুনিয়ারা।
সরজমিনে দেখাযায়, কুরমা চা বাগানের মুনিয়াদের আবাসস্থলের অর্ধেক ইতিমধ্যেই প্লান্টেশন হয়েগেছে। যদিও বাগান কর্র্তৃপক্ষ বলেছেন আর এক্সটেনশন করবেন না।
এদিকে এই ছোট পাখিগুলোও এখন মানুষের জি¦বার লালসায়। প্রতিনিয়তই শিকারীরা উৎপেতে থাকে এদের ধরতে। বন বিভাগের চোখে ফাঁকি দিয়ে ছনখলার নিচে জাল পেতে একটা চক্র এদের ধরে জবাই করে এর মাংস রান্না করে খায়। শুক্রবার বিকেলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে বনবিভাগ ও পরিবেশবাদী সংগঠন স্ট্যান্ড ফর আওয়ার এন্ডেঞ্জারড ওয়াইল্ডলাইফ (এসইডবিøউ এর একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে জবাই করা ১১টি ও জীবিত খাঁচায় বন্দি আরো ১১টি মুনিয়া পাখি উদ্ধার করেন। এ সময় আনসার আলী (৫০) নামে এক পাখি শিকারীকে আটক করে বন বিভাগ। পালিয়ে যায় আরো দুই শিকারী । ধৃত আনসার আলীর উপজেলার কানাইদাশী গ্রামের মৃত তাজ বক্স এর ছেলে।
শ্রীমঙ্গল বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহীদুল আলম জানান, গোপন খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে জীবিত ও মৃত ২২ টি মুনিয়া পাখি, পাখি ধরার সরঞ্জামসহ একজনকে আটক করেন। এ ঘটনায় রাতেই মামলা দিয়ে পাখি ও আসামীকে কমলগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করেছেন।
এ ব্যাপারে বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, কুরমা চা বাগানের ছনখলায় প্রচুর মুনিয়া পাখির রয়েছে। এখানে চা বাগান বর্ধিত না করার জন্য বাগান কর্র্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে বনবিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। এর পরও তারা ছনখলা কেটে চারা বাড়ি করেছেন। পরে বিষয়টি মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানকেও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
পরিবেশবিদ ও পাখিপ্রেমী সিতেশ রঞ্জন দেব জানান, মুনিয়া খুবই ছোট পাখি। এর ওজন সর্বচ্চো ১৫ গ্রাম হবে। এই পাখির কতটুকুই আর মাংস। এটাও শিকার করে খেতে হয়! এই শিকারীদের বিরুদ্ধে শক্ত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার মিত্র জানান, জীবিত পাখিগুলোকে অবমুক্ত করে মৃত পাখিগুলোকে পুলিশের উপস্থিতিতে মাটিতে পুঁতে দেয়া হয়েছে।

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..