1. [email protected] : Admin : sk Sirajul Islam siraj siraj
  2. [email protected] : admi2017 :
  3. [email protected] : Sk Sirajul Islam Siraj : Sk Sirajul Islam Siraj
  • E-paper
  • English Version
  • বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
বিনোদন :: গান গাইতে গাইতে মঞ্চেই গায়কের মর্মান্তিক মৃত্যু!,  খেলার খবর : অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ, বিমানবন্দরে যুবাদের জানানো হবে উষ্ণ অভ্যর্থনা,

তলপেটে প্রদাহজনিত রোগ পিআইডি

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৩৪৬ বার পঠিত

অনলাইন ডেস্ক: পিআইডি বা তলপেটে প্রদাহজনিত রোগ বলতে আমরা আসলে বুঝি নারীর জননতন্ত্রের ইনফেকশান। সাধারণত: কিছু যৌনবাহিত রোগে এই জটিলতা হয়ে থাকে; যেমন-ক্ল্যামাইডিয়া, গণোরিয়া। এছাড়াও আরো কিছু ইনফেকশনের কারণেও তলপেটে প্রদাহ হতে পারে।

তলপেটে প্রদাহ সাধারণত কাদের হয় : যৌনসক্রিয় (sexually active) যুবতী মেয়েদের মধ্যেই সাধারণতঃ পিআইডি বা তলপেটে প্রদাহ বেশী দেখা যায়।

 

পিআইডি বা তলপেটে প্রদাহ কেন হয় : বেশকিছু কারণ রয়েছে। তবে সাধারণতঃ যে সকল কারণে তলেপেটে প্রদাহজনিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশী দেখা যায়, তা নিম্নরূপঃ

 

-যৌনবাহিত রোগের যথাযথ চিকিৎসা না করালে।
-একের অধিক লোকের সাথে যৌন সম্পর্ক থাকলে।
-বহুগামী কোন ব্যক্তির সাথে যৌন সম্পর্ক থাকলে।
-টেম্পন বা ডুস ব্যবহারে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন না করলে।
-অনভিজ্ঞ কারো মাধ্যমে আইইউডি বা কপার-টি গ্রহণ করলে। ইত্যাদি।

 

কিভাবে একজন নারী তলপেটে প্রদাহের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে পারেন :

 

প্রথম কথা, যৌনবাহিত রোগ থেকে বাঁচার উপায় হল, ঝুঁকিপূর্ণ যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকা।
এছাড়া যৌনসক্রিয় একজন নারী তলপেটে প্রদাহের ঝুঁকি কমাতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর দিকে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন। যেমনঃ-বিবাহ বহির্ভূত যৌনাচার বা একের অধিক যৌন সহোচর রাখা থেকে বিরত থাকা।

একজন ব্যক্তির সাথে বিশ্বস্ততার সাথে যৌন সম্পর্ক রক্ষা করে চলাটাই ঝুঁকিমুক্ত যৌনাচারের মূলমন্ত্র। স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই একে অপরের প্রতি বিশ্বস্ততার সম্পর্ক রক্ষা করে চলা আবশ্যক। এ ব্যাপারে ধর্মীয় এবং সামাজিক মূল্যবোধ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

-ঝুঁকিপূর্ন যৌন সম্পর্কে প্রতিবার সঠিক উপায়ে ল্যাটেক্স কনডম ব্যবহার করা।

 

 

এক্ষেত্রে জেনে রাখা দরকার, বাজারে বহুল প্রচলিত কনডমের সবগুলোই কিন্তু ল্যাটেক্স দিয়ে তৈরী নয়।

 

কিভাবে বুঝবেন যে আপনার তলপেটে প্রদাহজনিত সমস্যা হয়েছে?

পিআইডি বা তলপেটে প্রদাহ সনাক্ত করার জন্য আলাদা কোন ল্যাব পরীক্ষা নেই। রোগীর উপসর্গ-লক্ষণ, শারীরিক পরীক্ষা এবং কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার সমন্বয়ে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকই কেবল এই রোগ শনাক্ত করতে পারেন।

চলুন একনজর দেখি, সাধারণতঃ নারীরা কি কি উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের নিকটে আসেন।

-তলপেটে ব্যথা বা জ্বালাপোড়া।
-জ্বর।
-সাদাস্রাব, যা অনেকসময় দুর্গন্ধযুক্ত হয়ে থাকে।
-যৌনকার্যে ব্যথা অনুভব করা বা রক্তপাত হওয়া।
-প্রস্রাব করার সময় ব্যথা অনুভব করা।
-দুই পিরিয়ডের মাঝে রক্তস্রাব হওয়া।
উল্লেখিত সমস্যাগুলো অনুভব করলে কি করবেন?
উপরে বর্ণিত সমস্যা যেকোন একটিও অনুভূত হলে,
-অবশ্য অবশ্যই আপনি একজন গাইনী বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করবেন। এবং শারীরিক পরীক্ষা করে নিশ্চিত হবেন।
-এছাড়া, আপনার শরীরে যৌনবাহিত কোন রোগ আছে কি না, ল্যাবটেস্টের মাধ্যমে জেনে নিবেন।
-যৌনাঙ্গে হঠাৎ কোন ক্ষত বা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব দেখা দিলেও সাথে সাথেই বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হবেন।
-নিজের বা স্বামীর অবৈধ যৌনাচার থাকলে খোলামেলাভাবে চিকিৎসকের সাথে আলাপ করে নিয়মিত চেকআপ অব্যাহত রাখবেন।

পিআইডি বা তলপেটে প্রদাহ কি ভাল হয়?

হ্যাঁ অবশ্যই। খুব দ্রুত শনাক্ত করার পর সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করলে তলপেটের প্রদাহ ভাল হয়ে যায়। তবে কয়েকটা বিষয় মনে রাখা জরুরী।

* এন্টিবায়োটিক শুরু করার পর আপনি অনেকটাই সুস্থ অনুভব করবেন। কিন্তু এতেই সন্তুষ্ট হয়ে ঔষধ বন্ধ করবেন না। ডাক্তারের পরামর্শ মতো পুরো চিকিৎসার ডোজ শেষ করবেন, যতদিন না আপনি উক্ত সমস্যা থেকে মুক্তি পান।

 

* পরবর্তী সতর্কতা অবলম্বন করাও জরুরী। একবার তলপেটে প্রদাহ হলে বারবারই হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পুনরায় যৌনবাহিত ইনফেকশন হলে পিআইডি হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

 

চলুন জেনে নিই, পিআইডির চিকিৎসা না করলে কি সমস্যা হতে পারে?

পিআইডি বা তলপেটে প্রদাহ দ্রুত সনাক্ত করে চিকিৎসা করলে এর পরবর্তী জটিলতাসমূহ থেকে বেঁচে থাকা যায়। তাহলে জেনে রাখা দরকার, এ রোগের চিকিৎসার ব্যাপারে হেলাফেলা করলে কি কি সমস্যা হতে পারে। অবহেলায় তলপেটের প্রদাহ থেকে যে সকল জটিলতাসমূহ দেখা দিতে পারে,তা হল-

-জরায়ুর দুইপাশের টিউব বা ডিম্বনালীতে ক্ষত হয়ে পুরোপুরি ব্লক হয়ে যেতে পারে।
-পরবর্তীতে জরায়ুর বাইরে টিউবে বাচ্চা বা এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হতে পারে।
-সন্তান ধারণে অক্ষমতা বা বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে।
-দীর্ঘমেয়াদী তলপেটে বা পুরো পেটে ব্যথা থেকে যেতে পারে যা উক্ত নারীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে অস্বস্তিকর এবং জটিল করে তোলে।  পিআইডি বা তলপেটে প্রদাহজনিত রোগ, আমাদের দেশের নারীদের খুবই সাধারণ একটি সমস্যা। আমরা আমাদের রোজকার প্র্যাকটিসে প্রতিদিনই দু’চারটে এমন রোগী পেয়ে থাকি। এবং উদ্বেগের বিষয় হল, বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই এই সকল নারী এবং তাদের এই রোগ পরিবারের কাছে উপেক্ষিত। ফলে দিন যায়, জটিলতা বাড়ে। এবং অধিকাংশ নারীই জটিলতা নিয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নিকট উপস্থিত হয়।

তলপেটে প্রদাহজনিত জটিলতাসমূহ এড়ানোর জন্য প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ। আমাদের বর্তমান সমাজে আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকা সামাজিক রোগগুলো ঠিকমতো প্রতিহত করতে না পারলে নারীসমাজের এই তলপেটে প্রদাহজনিত রোগ প্রতিরোধ করা প্রায় অসম্ভব। আর তাই, সঠিক ধর্মীয় এবং সামাজিক শৃঙ্খলাবোধই হতে পারে এই জটিল কষ্টকর রোগ থেকে মুক্তির প্রথম ধাপ।

ডা. ফাহমিদা শিরীন নীলা
এমবিবিএস; বিসিএস(স্বাস্থ্য); 
এফসিপিএস(গাইনী এন্ড অবস্)
ফিগো ফেলো(ইটালী)
গাইনী কনসালটেন্ট,

প্লিজ আপনি ও অপরকে নিউজটি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করছি

এ জাতীয় আরো খবর..